সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: বিশ্বে কিছুতেই থামছে না করোনার মৃত্যুমিছিল। দাওয়াই বা টিকার জন্য মরিয়া চেষ্টা চালাচ্ছে প্রায় সব দেশই। এই মহামারী থেকে উদ্ধার পেতে গবেষকদের দিকে চাতকের মতো তাকিয়ে আছে গোটা দুনিয়া। এহেন পরিস্থিতিতে জানা গিয়েছে, করোনা নিয়ে গবেষণা চালানো নর্থ ক্যারোলাইনা বিশ্ববিদ্যালয়ের মতো একাধিক মার্কিন শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে নজর রাখছে চিনা গুপ্তচররা। তবে শুধু চিন নয়, আমেরিকা, ব্রিটেন ও কানাডার করোনা গবেষণায় নজর রকছে রাশিয়ার গুপ্তচর সংস্থা এসভিআর। আন্তর্জাতিক ফাইবার অপটিক ক্যাবলে নজরদারি চালিয়ে সবার প্রথম এই চাঞ্চল্যকর তথ্য প্রকাশ্যে আনেন ব্রিটিশ গোয়েন্দারা।
[আরও পড়ুন: নতুন ছক পাকিস্তানের! এক সময়ের জঙ্গি নেতাকে গোয়েন্দা কর্তা বানালেন ইমরান]
গত মাসেই 'Sputnik V' নামে বিশ্বের প্রথম করোনা টিকা তৈরি করার দাবি জানিয়েছে রাশিয়া। ১০-১৩ সেপ্টেম্বরের মধ্যে অনুমতি পেয়ে গেলেই এই টিকা বাজারে ছাড়া হবে বলে জানিয়েছেন রাশিয়ান অ্যাকাডেমি অব সায়েন্সের সদস্য ডেনিস লকনভ। কিন্তু তারপরও মার্কিন ও ব্রিটিশ ভ্যাকসিন তৈরির চেষ্টায় নজর রেখেছে রুশ গুপ্তচর সংস্থাগুলি। তবে এই ঘটনা নতুন কিছু নয়, আগেই চিনের বিরুদ্ধে সাইবার জালিয়াতির অভিযোগ এনেছিল আমেরিকা। মার্কিন তদন্তকারী সংস্থা এফবিআই এবং সাইবার সিকিউরিটি বিশেষজ্ঞদের ধারণা, কোভিড-১৯-এর ভ্যাকসিন তৈরির প্রক্রিয়া হ্যাকারদের মাধ্যমে চুরি করতে পারে চিন।
ওয়াল স্ট্রিট জার্নাল এবং নিউ ইয়র্ক টাইমসে প্রকাশিত প্রতিবেদনের মতে, বিভিন্ন দেশে সরকারি এবং বেসরকারি সংস্থাগুলি করোনার ভ্যাকসিন তৈরির জন্য নিরন্তর গবেষণা চালাচ্ছে। চিনা হ্যাকাররা এই সব গুরুত্বপূর্ণ তথ্য চুরি করার জন্য আপ্রাণ চেষ্টা চালাচ্ছে। এই বিষয়ে শীঘ্রই সরকারিভাবে সতর্কবার্তা প্রকাশের পরিকল্পনা রয়েছে এফবিআই এবং ডিপার্টমেন্ট অব হোমল্যান্ড সিকিউরিটির। মার্কিন গোয়েন্দাদের অভিযোগ, এই হ্যাকারদের মদত দিচ্ছে চিন সরকার। তবে শুধু চিন নয়, করোনা সংক্রান্ত গবেষণায় নজর রয়েছে ইরান, উত্তর কোরিয়া এবং রাশিয়ারও। এমনটাই সতর্কবার্তা মার্কিন গোয়েন্দাদের।
উল্লেখ্য, এই মুহূর্তে বিশ্বের বিভিন্ন গবেষণাগারে ১০০টি টিকা নিয়ে কাজ চলছে। তার মধ্যে বেশ কয়েকটি প্রতিষেধকের প্রয়োগ মানবশরীরে করার কাজ বা ‘হিউম্যান ট্রায়াল’ চলছে। চলতি বছরের শেষের দিকেই আমেরিকার হাতে করোনার প্রতিষেধক চলে আসবে বলে দাবিও করে ফেলেছেন সে দেশের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। কিন্তু কয়েকদিন আগেই মস্ত আশায় জল ঢেলে দিয়েছেন WHO-এর কোভিড-১৯ গবেষণার বিশেষ দূত ডেভিড নাবারো। মার্কিন সংবাদমাধ্যম ‘CNN’-এর এক প্রতিবেদনের মতে তিনি বলেছেন, “এমন কিছু ভাইরাস আছে, যাদের বিরুদ্ধে এখনও আমরা টিকা আবিষ্কার করতে পারিনি। যেমন HIV বা ডেঙ্গু। কোভিড-১৯-এর টিকা আদৌ বেরবে কি না, সে ব্যাপারে আমরা নিশ্চিত নই। তেমন প্রতিষেধক নাও বেরতে পারে। যদি কোনও টিকা বেরও হয়, তা হলে সেটা বাজারে আসার আগে সব পরীক্ষায় পাশ করবে কি না, তারও কোনও গ্যারান্টি দেওয়া সম্ভব নয়।”