shono
Advertisement
Gaza

ক্ষুধার রাজ্যে গাজা মৃত্যুময়! প্যালেস্টাইনে ইজরায়েলের নতুন অস্ত্র 'অনাহার'

হামাসের ঘাড়ে দোষ চাপিয়ে কার্যসিদ্ধি করতে চাইছেন নেতানিয়াহু!
Published By: Biswadip DeyPosted: 06:21 PM Jul 25, 2025Updated: 06:21 PM Jul 25, 2025

সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: বহু মাস, বহু সপ্তাহ পেরিয়ে গিয়েছে। গাজা এখন মৃত্যুপুরী। ধ্বংসস্তূপ ঠেলে কোনওমতে ধুঁকতে ধুঁকতে বেঁচে রয়েছে মানুষ। আর সেই অসহায় মানুষদের দিকে ইজরায়েল তাক করেছে নয়া অস্ত্র। যে অস্ত্রের নাম অনাহার। হামাসের তেল আভিভে হামলার বদলা নিতে যে পালটা মার তারা দিতে শুরু করেছিল তা গাজার সাধারণ মানুষের জীবন একেবারে ছিন্নভিন্ন করে দিয়েছে। মার্চে যুদ্ধবিরতির পর থেকে ধ্বংসের নতুন অস্ত্র হাতে তুলে নিতে শুরু করেছে ইজরায়েল।

Advertisement

প্রথমে ত্রাণের ট্রাক ঢুকতে না দেওয়া। মাস দুয়েক এভাবে চলার পর অবশেষে ট্রাকগুলিকে ঢোকার অনুমতি দেওয়া হল গাজা ভূখণ্ডে। আর তারপর নিরন্ন মানুষের মিছিলে গুলে করে মেরে ফেলা হল বহু মানুষকে! যেন খিদে পেটেও খাবারের দিকে দৌড়তে ভয় পায় মানুষ। এমনই দাবি রাষ্ট্রসংঘের। জানানো হয়েছে, একহাজারেরও বেশি মানুষকে ইজরায়েলি সেনা মেরে ফেলেছে যারা খাদ্য বণ্টনের লাইনে ছিল।

বড়দের পৃথিবীতে গুলি-বোমার ছোবলে বিপন্ন শৈশব। এবার তার মুখে খাদ্যের জোগানও বন্ধ করে দেওয়া। এটাই যেন চাইছে ইজরায়েল। এক সংগঠিত 'গণহত্যা' বলে মনে করা হচ্ছে এই প্রবণতাকে।

সভ্যতারইতিহাস নৃশংসতার, লজ্জার। যুদ্ধের বীরপুঙ্গবরা নিরীহ শিশুদের অবলীলায় ছুড়ে দিয়েছে মৃত্যুরাক্ষসের দংষ্ট্রার ভিতরে। বরাবরই নারী ও শিশুদের এভাবেই যুদ্ধের ‘সহজ শিকারে’ পরিণত করা হয়েছে। ইউনিসেফ গত ডিসেম্বরে জানিয়েছিল গাজার ৯৬ শতাংশ নারী ও শিশু ভুগছে অপুষ্টিতে। রেশনের সস্তা আটা, ডাল, পাস্তা ও টিনের খাবার খেয়ে তারা বেঁচে আছে। কিন্তু তিলে তিলে ক্ষয়ে যাচ্ছে স্বাস্থ্য ও মন। যা হয়তো সারবে কখনও, হয়তো কোনওদিনও আর সম্পূর্ণ সারবে না। আর এবার দেখা যাচ্ছে খাদ্যই জুটছে না বহু শিশুর।
ব্রিটেনের মনোবিদ ডেরেক সামারফিল্ডের দাবি, ইজরায়েলের লক্ষ্যই হল গাজাকে বসবাসের একেবারে অযোগ্য করে তোলা। তাঁর মতে এটা 'সোশিওসাইডাল ওয়ার' তথা গণহত্যা-যুদ্ধ। স্কুল, হাসপাতাল, ধর্মস্থান গুঁড়িয়ে দিয়ে অনাহারে দগ্ধে দগ্ধে মারার কৌশল। অর্থাৎ সমাজের ধারণাকেই অতীত করে দেওয়া।

যদিও ইজরায়েল দোষ চাপাতে চাইছে হামাসেরই উপরে। তাদের দাবি, হামাস, ত্রাণের খাবার দাবার লুট করে নিচ্ছে। সেই সঙ্গেই তেল আভিভের আরও দাবি, রীতিমতো আন্তর্জাতিক আইন মেনে তাদের সেনা চলাফেরা করছে গাজায়। কিন্তু এই দাবি ধোপে টিকছে না। মার্কিন সরকারের এক অভ্যন্তরীণ গবেষণার কথা তুলে ধরে সংবাদ সংস্থা রয়টার্স শুক্রবারই জানিয়ে দিয়েছে, হামাস যে ত্রাণ চুরি করছে এমন কোনও প্রমাণই মেলেনি এখনও পর্যন্ত। এদিকে ইজরায়েলের এক কথা, সমস্ত পণবন্দিকে মুক্তি না দেওয়া পর্যন্ত তারা আর যুদ্ধবিরতির পথে হাঁটতেও রাজি নয়। সব মিলিয়ে পরিস্থিতি ক্রমেই জটিল হয়ে উঠেছে। এরকম চললে আগামী এগারো মাসের মধ্যে গাজায় 'অপুষ্টিতে ভোগা' শিশুর সংখ্যা ৭১ হাজার ছাড়াবে।

এই-ই গাজা। অথবা এই-ই যুদ্ধবিধ্বস্ত পৃথিবীর করুণ ও তোবড়ানো চেহারা। যা ক্রমেই ভয়াবহ আকার ধারণ করছে। আর ভয় ধরাচ্ছে। সোশাল মিডিয়ায় ছড়িয়ে পড়া হাড় জিরজিরে গাজার শিশুদের যে ছবি সামনে এসেছে তা দেখে শিউরে উঠছে পৃথিবী। যে শিহরণের রেশ ইজরায়েলের মধ্যে নেই। ফলে ক্রমেই অন্ধকার ঘন হচ্ছে গাজায়। বাড়াচ্ছে আশঙ্কা।

Sangbad Pratidin News App

খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ

হাইলাইটস

Highlights Heading
  • গাজার অসহায় মানুষদের দিকে ইজরায়েল তাক করেছে নয়া অস্ত্র। যে অস্ত্রের নাম অনাহার।
  • হামাসের তেল আভিভে হামলার বদলা নিতে যে পালটা মার তারা দিতে শুরু করেছিল তা গাজার সাধারণ মানুষের জীবন একেবারে ছিন্নভিন্ন করে দিয়েছে।
  • মার্চে যুদ্ধবিরতির পর থেকে ধ্বংসের নতুন অস্ত্র হাতে তুলে নিতে শুরু করেছে ইজরায়েল।
Advertisement