সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: সামনে ভালো। কিন্তু পিছন থেকে ছুরি মারছে চিন। লাদাখে সেনা সরানোর নেপথ্যে বেজিংয়ের অন্য ষড়যন্ত্র রয়েছে। তারা চাইছে ভারত আর আমেরিকার মধ্যে দূরত্ব তৈরি করতে। তাই এখন ভালো সাজছে! এই মর্মে সম্প্রতিই মার্কিন কংগ্রেসে রিপোর্ট পেশ করেছে আমেরিকার প্রতিরক্ষা দপ্তর। সেই মার্কিন রিপোর্ট নিয়ে এবার পালটা সুর চড়াল বেজিং। শি জিনপিংয়ের দেশের বক্তব্য, এই ধরনের ভুল ভাষ্য তৈরি করে আন্তর্জাতিক মহলে চিন সম্পর্কে অনাস্থার বীজ বপন করতে চাইছে আমেরিকা।
সম্প্রতি মার্কিন কংগ্রেসে যে রিপোর্ট জমা পড়েছে, তাতে পেন্টাগনের দাবি, তাইওয়ানে কর্তৃত্ব প্রতিষ্ঠাকে চিন যেভাবে অগ্রাধিকার দেয়, ঠিক একই ভাবেই তাদের অগ্রাধিকারের তালিকায় ভারতের অরুণাচল প্রদেশ রয়েছে। শুধু তা-ই নয়, সম্প্রতি লাদাখের প্রকৃত নিয়ন্ত্রণ রেখা থেকে সেনা সরাতে চিন যে রাজি হয়েছে, তা-ও স্রেফ 'দেখনদারি'। ভালো সাজার চেষ্টা। লাদাখে চিন (China) এখন সেনা সরালেও তারা ভারতকে (India) নানা দিক থেকে ঘিরছে। পাকিস্তানকে নিজেদের সামরিক কার্যকলাপ তো বাড়াচ্ছেই। পাশাপাশি ইসলামাবাদকেও নানা ভাবে তারা সমরাস্ত্র দিয়ে সাহায্য করে যাচ্ছে। যা ভারতের কাছে যথেষ্টই বিপদ সংকেত বলে মনে করছে ওয়াশিংটন। মার্কিন প্রতিরক্ষা দপ্তরের দাবি, চিন আসলে এক পা পিছিয়ে, দু'পা এগোনোর কথা ভাবে। তারা বরাবরই এই নীতি মেনেই চলে। এবারেও তা-ই। লাদাখ থেকে চিনের সেনা সরানোর আসল কারণ হলই, তারা চাইছে, ভারত এবং আমেরিকার মধ্যে দূরত্ব তৈরি করা। ভারত যাতে 'কৌশলগত বন্ধু' হিসাবে চিনকেই বিকল্প হিসাবে ভাবতে শুরু করে, তেমনটাই চাইছে বেজিং।
সাম্প্রতিক কালে নানা বিষয়ে ভারতের সঙ্গে আমেরিকার টানাপোড়েন চলছে। অপারেশন সিঁদুর অভিযানের পর মার্কিন প্রেসিডেন্ট বারবার দাবি করে গিয়েছেন যে, তাঁর কারণেই ভারত-পাকিস্তানের মধ্যে সংঘর্ষবিরতি সম্ভব হয়েছে। আন্তর্জাতিক মহলে তা নিয়ে অস্বস্তিতে পড়ার যথেষ্ট কারণ ছিল নয়াদিল্লির। ভারত যদিও বারবার বলে গিয়েছে, ভারত-পাকিস্তানের মধ্যে সংঘর্ষবিরতি তৃতীয় কারও জন্য হয়নি। দু'দেশ নিজেদের মধ্যে আলোচনা করে ওই সিদ্ধান্তে পৌঁছেছে। এর পরে ট্রাম্পের সঙ্গে শুল্কযুদ্ধেও জড়িয়েছে ভারত। ভারতের পণ্যে ৫০ শতাংশ শুল্ক চাপিয়ে দেওয়ার যে সিদ্ধান্ত নিয়েছেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট, তা নিয়েও দুই দেশের সম্পর্কে অবনতি হয়েছে। ওয়াশিংটনের দাবি, ভারত-মার্কিন সম্পর্কের এই 'শৈত্য'ই জিইয়ে রাখতে চাইছে চিন।
যদিও এই দাবি উড়িয়ে দিয়েছে বেজিং। চিনা বিদেশমন্ত্রকের মুখপাত্র লিন জিয়ান বলেন, "চিনের প্রতিরক্ষা নীতি নিয়ে ভুল খবর ছড়াচ্ছে আমেরিকা। ওয়াশিংটন নিজেদের সামরিক শ্রেষ্ঠত্ব জিইয়ে রাখতেই চিন সম্পর্কে অনাস্থার বীজ বপন করছে। আমরা আমেরিকার রিপোর্ট নিয়ে তীব্র আপত্তি জানাচ্ছি। এই রিপোর্টের বিরোধিতা করছি।"
