সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: ডোনাল্ড ট্রাম্প প্রেসিডেন্ট হওয়ার পর গত ৬ মাসেরও বেশি সময় ধরে লাগাতার নিম্নমুখী ভারত-মার্কিন সম্পর্ক। অপারেশন সিঁদুরের পর তো খোলাখুলিভাবে পাকিস্তানকে বগলদাবা করেছে আমেরিকা। ভারতের সঙ্গে কূটনৈতিক দূরত্ব বাড়ানো ও পাকিস্তান ঘনিষ্ঠতার যে নীতি ট্রাম্প নিয়েছে তা সমালোচিত হয়েছে আমেরিকার অন্দরেও। এহেন ডামাডোলের মাঝেই ট্রাম্পের ভূমিকা নিয়ে সরব হলেন আমেরিকার আন্তর্জাতিক কূটনৈতিক বিশেষজ্ঞ প্রোফেসর ফ্রান্সিস ফুকুয়ামা। তাঁর দাবি, ডোনাল্ড ট্রাম্প নিজের স্বার্থের জন্য গোটা আমেরিকার স্বার্থকে জলাঞ্জলি দিয়েছেন।
সম্প্রতি এক সাক্ষাৎকারে ট্রাম্প প্রশাসনের বিদেশনীতির তীব্র সমালোচনা করেন ফুকুয়ামা। তিনি বলেন, "ট্রাম্পের বিদেশনীতি তাঁর ব্যক্তিগত লাভের উপর নির্ভর করে তৈরি হচ্ছে। উদাহরণ স্বরূপ গত ২০-৩০ বছরে আমেরিকায় যে সরকারই ক্ষমতায় এসেছে তারা ভারতের সঙ্গে সম্পর্ক মজবুত করার চেষ্টা করেছে। কারণ আমরা দক্ষিণ এশিয়ায় চিনকে টক্কর দিতে চাই। কিন্তু ট্রাম্প মোদির সঙ্গে সম্পর্ক খারাপ করেছেন কারণ উনি নোবেল শান্তি পুরস্কারে তাঁকে সমর্থন করেননি।"
ট্রাম্পের নির্দিষ্ট কোনও বৈদেশিক নীতি নেই, কার্যত সে কথাই স্পষ্ট করে প্রোফেসর আরও বলেন, "ট্রাম্পের এই সিদ্ধান্তে স্পষ্ট যে উনি ব্যক্তিগত লাভের জন্য আমেরিকার স্বার্থকে ছুড়ে ফেলে দিয়েছেন। এই অবস্থায় কেউ যদি ভাবেন ট্রাম্পের বিশেষ বৈদেশিক নীতি রয়েছে। তবে তাঁরা ভেবে কোনও কূল খুঁজে পাবেন না।" ট্রাম্পের এই ব্যক্তিগত স্বার্থ প্রসঙ্গে এর আগেও নানা মত উঠে এসেছে। অভিযোগ উঠেছে, ট্রাম্প নিজের ক্রিপ্টো কারেন্সির ব্যবসা বাড়াতে এবং পাকিস্তানে নিজের ব্যবসা বাড়াতে পাক প্রধানমন্ত্রী শাহবাজের সঙ্গে গোপন চুক্তি করেছেন। সেই ব্যবসায়িক স্বার্থ যাতে অক্ষুণ্ণ থাকে তা মাথায় রেখেই পাকিস্তানের প্রতি এত দরদ শিল্পপতি মার্কিন প্রেসিডেন্টের।
উল্লেখ্য, পহেলগাঁও হামলার জবাবে পাকিস্তানের বিরুদ্ধে অপারেশন সিঁদুর শুরু করেছিল ভারত। এরপর ৪ দিন ধরে যুদ্ধ চলে দুই দেশের। সেই যুদ্ধ থামাতে হস্তক্ষেপ করেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প। ভারতের ঘোষণার আগেই যুদ্ধ থামানোর কৃতিত্ব নিয়ে সোশাল মিডিয়ায় যুদ্ধবিরতির ঘোষণা করেন ট্রাম্প। যদিও ভারত সে দাবি খারিজ করে জানায় পাকিস্তানের ডিজিএমও-র অনুরোধে সম্মত হয়ে যুদ্ধ থামিয়েছে ভারত। পাকিস্তান অবশ্য ট্রাম্পকে ধন্যবাদ জানিয়ে যাবতীয় কৃতিত্ব তাঁকেই দেন। এদিকে মোদির সমর্থন না পেয়ে ভারতের উপর ক্ষুব্ধ হন ডোনাল্ড ট্রাম্প। এরপরই দিল্লির উপর পড়ে শুল্কের কোপ। ফুকুয়ামার দাবি অনুযায়ী, মোদি মাথানত না করায় ব্যক্তিগত আক্রোশ থেকেই ভারতের সঙ্গে সম্পর্ক খারাপ করছেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট।
