সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: ভারত 'অপারেশন সিঁদুর ২.০'-র জন্য তৈরি। আর এবারের অপারেশন হবে আরও বেশি ভয়ানক। কিছুদিন আগেই এই কথা জানিয়েছেন পশ্চিমাঞ্চলীয় সেনার লেফটেন্যান্ট জেনারেল মনোজ কুমার কাটিয়ার। এরপরেই নড়েচড়ে বসেছে পাক সেনা। পাক অধিকৃত কাশ্মীরে এলওসি-জুড়ে বাড়িয়েছে নিরাপত্তা। অপারেশন সিন্দুর ২.০ নিয়ে পাকিস্তান সেনাবাহিনীর মধ্যে ক্রমবর্ধমান উদ্বেগের মধ্যে, গোয়েন্দা তথ্য বলছে রাওয়ালকোট, কোটলি এবং ভিম্বর সেক্টরে কাউন্টার-আনম্যানড এরিয়াল সিস্টেম (সি-ইউএএস) এর নতুন করে বসাচ্ছে পাকিস্তান।
নিয়ন্ত্রণ রেখা বরাবর ৩০টিরও বেশি অ্যান্টি-ড্রোন ইউনিট মোতায়েন করেছে পাকিস্তান (Pakistan)। জানা গিয়েছে, মুরীতে ১২তম পদাতিক ডিভিশন এবং কোটলি-ভিম্বর অক্ষ বরাবর ২৩তম পদাতিক ডিভিশনকে মোতায়েন করা হচ্ছে। এই পদক্ষেপ, নিয়ন্ত্রণ রেখার আকাশসীমায় নজরদারি এবং ইলেকট্রনিক যুদ্ধক্ষমতা জোরদার করার চেষ্টা বলে মনে করছেন বিশেষজ্ঞরা।
রাওয়ালাকোটে কাউন্টার-ড্রোন ব্যবস্থা ২য় আজাদ কাশ্মীর ব্রিগেড পরিচালনা করে। এই ব্রিগেড পুঞ্চ সেক্টরে পাক সেনার কর্মকাণ্ড পরিচালনা করে। কোটলিতে, দায়িত্ব রয়েছে ৩য় আজাদ কাশ্মীর ব্রিগেডের উপর। এই ব্রিগেড রাজৌরি, পুঞ্চ, নওশেরা এবং সুন্দরবানীর দিকের সেক্টরগুলিতে সক্রিয়। অন্যদিকে ভিম্বর সেক্টরটি ৭ম আজাদ কাশ্মীর ব্রিগেড পরিচালনা করছে বলে জানা গিয়েছে।
নিয়ন্ত্রণ রেখা বরাবর, পাকিস্তান ইলেকট্রনিক এবং কাইনেটিক কাউন্টার-ইউএএস সিস্টেম বসিয়েছে। এর মধ্যে গুরুত্বপূর্ণ হল, স্পাইডার কাউন্টার - ইউএএস ব্যবস্থা। এর পাশাপাশি রয়েছে, সাফরা ইউএভি বিরোধী জ্যামিং গান। প্রায় ১.৫ কিলোমিটার এলাকায় এই ব্যবস্থা কার্যকর। এর পাশাপাশি, মাটির কাছাকাছি ওড়া ড্রোন আটকানোর জন্য বিমান প্রতিরক্ষা ব্যবস্থা আরও মজবুত করেছে বলে জানা গিয়েছে। এর মধ্যে রয়েছে ওরলিকন জিডিএফ ৩৫ মিমি টুইন-ব্যারেল বিশিষ্ট বিমান বিধ্বংসী বন্দুক এবং আনজা এমকে-২ এবং এমকে-৩।
জানা গিয়েছে, নতুন ড্রোন এবং বিমান প্রতিরক্ষা ব্যবস্থা কেনার জন্য তুরস্ক এবং চিনের সঙ্গে আলোচনা করছে পাকিস্তান। অপারেশন সিন্দুরের সময় ভারতের আক্রমণে পাকিস্তানের কাউন্টার-ড্রোন ক্ষমতার ফাঁকগুলি সামনে চলে আসে। এর পরেই এই ব্যবস্থাগুলি আরও উন্নত করার চেষ্টা করছে তারা।
প্রসঙ্গত, ২২ এপ্রিল পহেলগাঁওয়ে ২৬ নিরস্ত্রকে হত্যা করে লস্করের সঙ্গী সংগঠন টিআরএফের চার জঙ্গি। তাদের পথ দেখিয়ে নিয়ে যায় কাশ্মীরের স্থানীয় এক জঙ্গি। এই হামলার জবাবে ৭ মে ভোররাতে অপারেশন চালায় ভারত। গুঁড়িয়ে দেওয়া হয় পাকিস্তান ও পিওকে-র নয়টি জঙ্গিঘাঁটি। এরপর ভারতের সীমান্তবর্তী রাজ্যগুলির জনবহুল এলাকা এবং সেনাঘাঁটিকে লক্ষ্য করে হামলা চালায় পাকিস্তান। সেই হামলা প্রতিহত করার পাশাপাশি প্রত্যাঘাত করে ভারত। তাতেই তছনছ হয়ে গিয়েছে পাকিস্তানের অন্তত ১১টি একধিক বায়ু সেনাঘাঁটি। জানা গিয়েছে, পর্যন্ত ভারতীয় সেনার অভিযানে নিহত হয়েছে ১০০ জনের বেশি জঙ্গি ও ৩৫-৪০ জন পাক সেনা। শেষ পর্যন্ত ইসলামাবাদের মিনতিতে সংঘর্ষবিরতিতে রাজি হয় নয়াদিল্লি। তবে এরপরও সন্ত্রাসে মদত দেওয়া বন্ধ করেনি পাকিস্তান।
