সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: ভয়াবহ আগুনে পুরোপুরি ভস্মীভূত হয়ে যাওয়ার পর ওমান উপসাগরে (Gulf of Oman) ডুবে গেল ইরানের (Iran) বৃহত্তম যুদ্ধজাহাজ আইরিস খর্গ (IRIS KHARG)। নৌসেনা থেকে শুরু করে ইরান প্রশাসনের হাজার প্রচেষ্টাতেও নেভানো গেল না সেদেশের এই যুদ্ধজাহাজের আগুনটি। শেষপর্যন্ত সমুদ্রেই সলিল সমাধি ঘটল সেটির। তবে যুদ্ধজাহাজটি ডুবলেও তাঁর সমস্ত ক্রু এবং সদস্যদের নিরাপদে বাঁচানো গিয়েছে বলেই খবর।
ইরানের একাধিক সরকারি সংবাদমাধ্যমে প্রকাশিত খবর অনুযায়ী, বুধবার ভোর রাত ২ টো ২৫ মিনিট নাগাদ জাহাজটিতে আগুন লাগার ঘটনাটি ঘটে। রাজধানী তেহরান থেকে ১২৭০ কিলোমিটার দক্ষিণ-পূর্ব দিকে অবস্থিত জাস্ক বন্দরের কাছাকাছি থাকাকালীন যুদ্ধজাহাজটিতে আগুন লাগে। জানা গিয়েছে, এই সময় যুদ্ধজাহাজটি একটি ট্রেনিং মিশনে ছিল। যদিও সরকারি বিবৃতিতে আগুন লাগার প্রকৃত কারণ এখনও জানা যায়নি। প্রশাসনের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে, আগুন লাগার খবরটি জানতে পেরেই তড়িঘড়ি সেটি নেভানোর প্রয়াস শুরু হয়। পাশাপাশি চলে উদ্ধারকার্যও। জাহাজের সমস্ত ক্রু-কে বের করে আনার প্রক্রিয়া শুরু হয়। অনেকেই আবার লাইফ জ্যাকেট পরে জলে ঝাঁপ দেন। পরবর্তীতে উদ্ধারকারী দল তাঁদের জল থেকে উদ্ধার করে। তবে জাহাজটির আগুন আর নিয়ন্ত্রণে আনা যায়নি। শেষপর্যন্ত ওমান উপসাগরেই জলে ডুবে যায় জাহাজটি।
[আরও পড়ুন: লালফৌজের পাশে ‘যুদ্ধের দেবতা’, মার্কিন সেনাঘাঁটিতে অগ্নিবৃষ্টি সময়ের অপেক্ষা মাত্র!]
প্রসঙ্গত, এই ওমান উপসাগর ইরানের জন্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। এর সঙ্গে যুক্ত রয়েছে হরমুজ প্রণালী। এখান থেকেই বিশ্বে মোট ব্যবহৃত খনিজ তেলের পাঁচভাগের একভাগ সরবরাহ হয়। মধ্যপ্রাচ্যের দেশগুলি থেকে বিশ্বের অন্যান্য দেশে তেল রপ্তানি হয়। আর এই এলাকা নিয়েই আমেরিকা, ইজরায়েলের মতো দেশের সঙ্গে ইরানের বিবাদ। দীর্ঘদিন ধরেই এই এলাকার ক্ষমতা দখলের লড়াইয়ে ইরান এবং ইজরায়েল।ওমান উপসাগরে ২০১৯ সালে একাধিক জাহাজের উপর হামলার অভিযোগ তুলেছিল আমেরিকা। অভিযোগের তির ছিল ইরানের দিকে। অন্যদিকে, চলতি বছরের এপ্রিস মাসে লোহিত সাগরে আবার ডুবে গিয়েছিল ইরানের জাহাজ সাভিজ। ল্যাম্পেট মাইন ব্যবহার করে সেই জাহাজটিকে ডোবানো হয়েছিল বলে দাবি করেছিল ইরানের একাধিক সংবাদমাধ্যম। তার আগে ফেব্রুয়ারি মাস থেকে ইজরায়েল এবং ইরানের একাধিক জাহাজের উপরেও হামলার ঘটনা ঘটেছে। দুই দেশই একে অপরের দিকে অভিযোগের আঙুল তুলেছিল। আইরিস খর্গ ডুবে যাওয়ার পিছনেও কেউ কেউ পুরনো বিবাদের প্রসঙ্গই টানছেন। যদিও সরকারিভাবে এখনও ইরান এই ঘটনার জন্য কারওর দিকে অভিযোগের আঙুল তোলেনি।