সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: আমেরিকার জাতীয় গোয়েন্দা দপ্তরের প্রধান হয়েছেন ‘মোদির বন্ধু’ তুলসী গাবার্ড। বুধবারই এই গুরুত্বপূর্ণ পদে শপথ নিয়েছেন তিনি। ক্ষমতায় ফিরে গোয়েন্দা প্রধান হিসাবে তুলসীকে (Tulsi Gabbard) মনোনীত করেছিলেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। ডেমোক্র্যাট দলের এই প্রাক্তন সদস্য প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির (Narendra Modi) বন্ধু হিসাবেই পরিচিত। আমেরিকা সফরে গিয়ে তুলসীর সঙ্গে দেখা করে শুভেচ্ছা জানালেন নমো। পাশাপাশি দুজনের বৈঠকে ভারত-আমেরিকার সম্পর্ক আরও মজবুত করার বার্তা দেওয়া হয়েছে।
প্রধানমন্ত্রী মোদির সঙ্গে তুলসীর পরিচয় বহুদিনের। আমেরিকায় অনুষ্ঠিত ‘হাউডি মোদি ‘ অনুষ্ঠানের সময় নমোর সঙ্গে সাক্ষাৎ হয়েছিল তুলসীর। মোদির সঙ্গে তাঁর সাক্ষাতের ছবি হাতিয়ার করে দেশপ্রেম নিয়ে প্রশ্ন তুলে আমেরিকার একটি মহল ও বেশ কিছু সংবাদপত্র তুলসীকে ‘হিন্দু জাতীয়তাবাদী’ বলেও কটাক্ষ করে। কিন্তু কোনও কটাক্ষকেই আমল দেননি তুলসী। এবার আমেরিকার গোয়েন্দা প্রধান হয়েই 'বন্ধু' মোদির সঙ্গে সাক্ষাৎ করলেন তিনি।
বৃহস্পতিবার আমেরিকার মাটিতে পা রাখেন মোদি (Narendra Modi)। ব্লেয়ার হাউসে প্রবাসী ভারতীয়দের সঙ্গে দেখা করার পরই তাঁর সাক্ষাৎ হয় তুলসীর সঙ্গে। নতুন দায়িত্ব গ্রহণের জন্য তাঁকে শুভেচ্ছা জানিয়ে বৈঠকে বসেন নমো। এনিয়ে এক্স হ্যান্ডেলে তিনি লেখেন, 'আমেরিকার গোয়েন্দা বিভাগের ডিরেক্টর তুলসী গাবার্ডের সঙ্গে দেখা হল। এই গুরুত্বপূর্ণ পদে দায়িত্ব গ্রহণের জন্য তাঁকে অভিনন্দন। ওয়াশিংটন ডিসিতে আমরা আলোচনায় বসেছিলাম। ভারত-আমেরিকার মজবুত বন্ধুত্ব নিয়ে কথা হয়েছে আমাদের মধ্যে। আগামী দিনে যাতে এই বন্ধন আরও মজবুত হয় সেনিয়ে আমরা একমত হয়েছি। তুলসী সব সময়ই দুদেশের বন্ধুত্বের পক্ষেই কথা বলেছেন।' ফলে প্রতিরক্ষা ক্ষেত্রে ভারতের সঙ্গে আমেরিকার সহযোগিতা আরও মজবুত হবে বলেই মনে করা হচ্ছে।
কে এই তুলসী গাবার্ড? এক সময়ে ডেমোক্র্যাটিক পার্টিতেই ছিলেন তুলসী। ২০২০ সালে জো বাইডেনের সঙ্গে আমেরিকার প্রেসিডেন্ট পদের দৌড়ে শামিল হয়েছিলেন তিনি। কিন্তু শেষ পর্যন্ত প্রতিযোগিতা থেকে ছিটকে যান। তার পর বাইডেন সরকার ও দলীয় সহকর্মীদের বিরুদ্ধে নানা অভিযোগ তোলেন তিনি। তাঁর দাবি ছিল, বর্তমান সরকার প্রতিটি ইস্যুতে বর্ণ বিচার করে কাজ করে। শ্বেতাঙ্গ-বিরোধী প্রতিবাদ, বিক্ষোভকে ইন্ধন জোগায়। ডেমোক্র্যাটিক পার্টিকে ‘যুদ্ধবাজ ও বর্ণবিদ্বেষী’ বলেও তোপ দেগেছিলেন।
এছাড়া মার্কিন সেনাতেও গুরুত্বপূর্ণ দায়িত্ব সামলেছেন তুলসী। ইরাক ও কুয়েতেও মার্কিন সেনাবাহিনীর সঙ্গে কাজ করেছেন তিনি। পাশাপাশি ‘হাউস হোমল্যান্ড সিকিউরিটি কমিটি’-তেও দুবছর কাজ করেছেন তুলসী। এইভাবেই প্রতিরক্ষা ক্ষেত্রে বিশেষ অভিজ্ঞতা অর্জন করেছেন তিনি। এই অভিজ্ঞতা ও সাহসী মনোভাবের জন্য গোয়েন্দা প্রধান হিসাবে ট্রাম্প পছন্দ করেছেন তুলসী। আমেরিকার আইনসভা মার্কিন কংগ্রেসের প্রথম হিন্দু সদস্যও ছিলেন তুলসি। ভগবত গীতায় হাত রেখে শপথগ্রহণ করেছিলেন তিনি।
