সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: ৯/১১ হামলার মূলচক্রী ওসামা বিন লাদেনের মৃত্যুর পরও কেটে গিয়েছে প্রায় দেড় দশক। অথচ আজও ফিরে ফিরে আসে এই দুর্ধর্ষ জঙ্গির প্রসঙ্গ। এবার এক প্রাক্তন সিআইএ আধিকারিক দাবি করলেন, আফগানিস্তানের তোরা বোরা পার্বত্য গুহা অঞ্চলে লাদেনকে কোণঠাসা করেও ধরতে পারা সম্ভব হয়নি! লাদেন মার্কিন সেনার চোখে ধুলো দিয়েছিল মহিলার ছদ্মবেশে।
সংবাদ সংস্থা এএনআইকে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে এই বিষয়ে মুখ খোলেন জন কিরিয়াকউ নামের সেই আধিকারিক। ১৫ বছর তিনি সিআইএ-তে ছিলেন। ২০০১ সালের ১১ সেপ্টেম্বরের পর সিআইএ-র জঙ্গিবিরোধী অভিযানের প্রধানের ভূমিকা পালন করেন তিনিই। লাদেনকে খুঁজতে আফগানিস্তানে হামলা চালায় আমেরিকা। খবর ছিল তোরা বোরা গুহার ভিতরেই রয়েছে সে। লাদেন ও তার স্যাঙাৎদের ধরতে 'তোরা বোরা' অভিযান চালায় মার্কিন সেনা। কিন্তু লাদেন নাকি সেখান থেকে পালিয়ে যায় মহিলার ছদ্মবেশে।
জন বলছেন, ''আমরা চেষ্টা করেছিলাম কোনওভাবেই আবেগে ভেসে না যেতে। তাই প্রায় একমাস অপেক্ষা করা হয় এলাকাটি ভালো করে বুঝে নিতে। এরপরই আমরা আল কায়দার ঘাঁটিগুলিতে হামলা চালাতে শুরু করি। এবং সেটাও মূলত দক্ষিণ ও পূর্ব আফগানিস্তানের পাস্তো এলাকায়। ২০০১ সালের অক্টোবরে আমরা বুঝতে পারি ওসামা বিন লাদেন ও আল কায়দার সব নেতাই ঠাঁই নিয়েছে তোরা বোরায়। কিন্তু আমাদের জানা ছিল না সেন্ট্রাল কমান্ডের যে কমান্ডার অনুবাদকের ভূমিকা পালন করছিল, সে আসলে আল কায়দার লোক! আমরা লাদেনকে নেমে আসতে বললে সে জানায়, সন্ধে পর্যন্ত অপেক্ষা করতে। ওই অনুবাদকই আমাদের রাজি করে। মহিলা ও শিশুদের সেখান থেকে বেরতে দিই। কিন্তু সন্ধের পর দেখতে পাই তোরা বোরায় কেউই নেই আর! বুঝতে পারি, অন্ধকারের ফায়দা তুলে শেষ সময়ে সেখান থেকে অন্তর্হিত হয়েছে লাদেন, মহিলার ছদ্মবেশে। একটি ট্রাকের পিছনে লুকিয়ে সে পাকিস্তানে চলে গিয়েছিল।''
উল্লেখ্য, ২০০১ সালের ১১ সেপ্টেম্বর আমেরিকার টুইন টাওয়ারে আছড়ে পড়ে দু’টি যাত্রীবাহী বিমান। পেন্টাগনের গায়েও আছড়ে পড়ে একটি বিমান। এই হামলার ছক কষেছিল লাদেন। দীর্ঘদিন তার সন্ধানে ‘মিশন আফগানিস্তান’ চালিয়েছিল আমেরিকা। শেষপর্যন্ত অবশ্য পাকিস্তানের অ্যাবোটাবাদে লুকিয়ে থাকা লাদেনকে গুলি করে মারে মার্কিন সেনা।
