সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: আগেই শুল্কযুদ্ধে আমেরিকার বিরুদ্ধে লড়াই চালিয়ে যেতে ভারতকে পাশে চায় চিন। চিনের বিদেশমন্ত্রী ওয়াং ই সদ্যই এমন দাবি করেছিলেন। মঙ্গলবার একই কথা শোনা গেল চিনা প্রেসিডেন্ট শি জিনপিংয়ের মুখেও। দু'দেশের কূটনৈতিক সম্পর্কের ৭৫তম বর্ষপূর্তিতে শান্তিপূর্ণ সহাবস্থানের আহ্বানই জানালেন তিনি। সাম্প্রতিক অতীতে উত্তর-পূর্ব ভারতে চিনা আগ্রাসনের পর দুই দেশের সম্পর্কের অবনতি হয়। সেই পরিস্থিতিতে চিনা প্রেসিডেন্টের এমন বক্তব্যকে তাৎপর্যপূর্ণ বলেই মনে করছে ওয়াকিবহাল মহল।
রাষ্ট্রপতি দ্রৌপদী মুর্মুর উদ্দেশে জিনপিং একটি চিঠি পাঠিয়েছেন। তাতেই তিনি লেখেন, 'ভারত-চিন সম্পর্কের উন্নতি থেকে এটাই পরিষ্কার যে, পারস্পরিক সহযোগিতার রাস্তায় হাঁটাই ভারত ও চিনের পক্ষে সঠিক সিদ্ধান্ত। হাতি ও ড্রাগনের ট্যাঙ্গো নাচই উভয় দেশ ও তার মানুষদের জন্য প্রয়োজন।'
ভারত ও চিনের মধ্যে শত্রুতার সূত্রপাত সেই ছয়ের দশকে। এরপর বহুবার দুই দেশের মধ্যেকার কূটনৈতিক সম্পর্ক উন্নত করার চেষ্টা হলেও অতীতের দাগ পুরোপুরি মোছা সম্ভব হয়নি। লাদাখ ও অরুণাচলে এমনকী ভারত মহাসাগরে চিনা আগ্রাসন দুই দেশকে ক্রমশ দূরে ঠেলেছে। সম্পর্কের সেই টানাপড়েন বাড়তি মাত্রা পেয়েছে ভারত বিরোধিতায় চিনের পাক ঘনিষ্ঠতায়। তবে ডোনাল্ড ট্রাম্প আমেরিকার অধীশ্বর হওয়ায় এশিয়ার এই চিরাচরিত কূটনৈতিক অঙ্ক চিনকে নতুন করে কষতে হচ্ছে। ট্রাম্পের আমেরিকা যেভাবে চিনের বিরুদ্ধে উঠে পড়ে লেগেছে তাতে জিনপিং প্রশাসন বেশ বুঝতে পারছে এশিয়ার দুই শক্তিশালী দেশের এক হওয়ার গুরুত্ব কতখানি। এই পরিস্থিতিতেই দিল্লি ও বেজিংয়ের নয়া সমীকরণের অঙ্ক কষছেন জিনপিং।
এর আগে চিনের বিদেশমন্ত্রীর কথাতেও এই সুরই লক্ষ করা গিয়েছে। অতীতের জটিলতা কাটিয়ে দুই দেশ যে ইতিবাচক অগ্রগতির লক্ষ্যে কাজ করছে গত মাসে সেই বার্তা দিয়ে চিনা বিদেশমন্ত্রীকে বলতে শোনা গিয়েছে, ‘‘গত বছর এই সমস্যা মেটাতে ইতিবাচক আলোচনা করেছে দুই দেশ। সমস্যা মেটাতে রাশিয়ায় ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির সঙ্গে বৈঠক করেছেন শি জিনপিং। দুই দেশ নিজেদের তরফ থেকে যৌথ পদক্ষেপ নিয়েছে। সীমান্ত ইস্যুতে দুই দেশের সংঘাত আগের চেয়ে অনেকটা কেটেছে। যা দুই দেশের জন্যই সদর্থক।’’