সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: দলের অন্দরে বিক্ষোভের জেরে প্রধানমন্ত্রী পদ খোয়াতে হয়েছিল বরিস জনসনকে। তাঁর উত্তরসূরী লিজ স্ট্রাসও রাজনৈতিক তুফান শান্ত করতে না পেরে ইস্তফা দিতে বাধ্য হন। তারপর, মাসখানেক আগেই ব্রিটেনের প্রধানমন্ত্রী হয়েছেন ভারতীয় বংশোদ্ভূত ঋষি সুনাক। কিন্তু এবার ক্ষমতাসীন কনজারভেটিভ পার্টির অন্দরে ‘বিদ্রোহে’র জেরে বিপাকে পড়েছেন তিনিও।
ডাউনিং স্ট্রিট সূত্রে খবর, বিবাদ শুরু হয়েছে একটি গৃহনির্মাণ প্রকল্প নিয়ে। সুনাক (Rishi Sunak) ) নাকি প্রকল্পের লক্ষ্যমাত্রা বেঁধে দিয়েছেন। আরে তাতেই চটে লাল অনেকেই। ক্যাবিনেট মন্ত্রী টেরেসা ভিলিয়ের নেতৃত্বে শাসকদলের ৪৭ জন এমপি ওই বিলের বিরুদ্ধে একটি সংশোধনীতে সই করেন। বিক্ষুব্ধদের মধ্যে রয়েছেন দামিয়ান গ্রিন, প্রীতি পটেল, ক্রিস গ্রেলিংয়ের মতো আইনপ্রণেতারা। ‘বিদ্রোহী’দের দাবি, আবাসন প্রকল্পে সরকারের বেঁধে দেওয়া লক্ষ্যমাত্রা তুলে নিতে হবে। বুধবার হাউস অফ কমন্সে আলোচনার পর আগামী সোমবার বিলটি নিয়ে ভোটাভুটি হওয়ার কথা। সে দিন লেবার পার্টি-সহ অন্যান্য বিরোধী দলগুলি যদি শাসকদলের বিক্ষুব্ধদের পাশে দাঁড়ায়, তাহলে সুনাকের পক্ষে থাকা ৬৯ জন এমপির হার হবে। আর তেমনটা হলে ফের নির্বাচনের দাবিতে সরব হতে পারে বিরোধীরা।
[আরও পড়ুন: প্রধানমন্ত্রী হয়েই কাজ শুরু, চার মন্ত্রীকে ইস্তফার নির্দেশ ঋষি সুনাকের!]
কনজারভেটিভ দলের মধ্যে বহুদিন ধরেই এই গৃহনির্মাণ প্রকল্পটি নিয়ে বিবাদ রয়েছে। উল্লেখ্য, ২০২০ সালে এই প্রকল্পটিতে সবুজ সংকেত দেয় ডাউনিং স্ট্রিট। তৎকালীন বরিস জনসন (Boris Johnson) সরকার ঘোষণা করে, গ্রামীণ এলাকার উন্নয়নের স্বার্থে প্রতি বছর ৩ লক্ষ নতুন বাড়ি নির্মাণ করা হবে। কিন্তু সরকার বাড়ি তৈরির লক্ষ্যমাত্রা বেঁধে দেওয়ায় বিষয়টি নিয়ে আপত্তি জানান শাসকদলের একাংশ। তাঁদের মতে, প্রত্যেকটি এলাকার এলাকার সমস্যা আলাদা। সব জায়গায় লক্ষ্যমাত্রা পূরণ করা সম্ভব নয়। তাই বাড়ি তৈরির লক্ষ্যমাত্রা ঠিক করার দায়িত্ব দেওয়া হোক স্থানীয় প্রশাসনকে।
এদিকে, এক সরকারি সূত্রকে উদ্ধৃত করে ব্লুমবার্গ দাবি করেছে, পার্লামেন্টের ঠাসা কর্মসূচীর জন্য সোমবার ভোটগ্রহণ হওয়ার সম্ভাবনা নেই। এনিয়ে এমপিদের সঙ্গে আলোচনা করছেন আইনপ্রণেতা তথা ব্রিটিশ সেক্রেটারি অফ লেভেলিং আপ মাইকেল গোভ। বিশ্লেষকদের মতে, বিভিন্ন ইস্যু ও নীতিগত মতপার্থক্যের জেরে কনজারভেটিভ পার্টির এখন টালমাটাল অবস্থা। সেই বিদ্রোহ দমাতে পারছেন না সুনাক। সমস্যা আরও বাড়িয়ে নতুন প্রশাসনের বিরুদ্ধে বরিসপন্থীরাও সুর চড়াতে শুরু করেছে।