সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: প্রতিবছর বিশ্বে ৭০ লক্ষ মানুষের মৃত্যু হচ্ছে সময়ের আগে। এই মৃত্যুর নেপথ্যে রয়েছে ধুলো-বালির ঝড়। বর্তমানে বিশ্বের ১৫০টির বেশি দেশের অন্তত ৩৩ কোটি মানুষ এই ধুলোঝড়ের জেরে প্রভাবিত। যা স্বাস্থ্য তো বটেই অর্থনীতি ও পরিবেশের উপর মারাত্মক প্রভাব ফেলছে। সম্প্রতি এমনই চাঞ্চল্যকর রিপোর্ট প্রকাশ্যে আনল রাষ্ট্রসংঘের বিশ্ব মৌসম বিভাগ (WMO)।
ডব্লুএমও-এর প্রতিনিধি লরা প্যাটারসন রাষ্ট্রসংঘে বক্তব্য রাখতে গিয়ে বলেন, প্রতিবছর প্রায় ২ বিলিয়ন টন ধুলো নিগর্ত হয়, যা ৩০০ টি গিজা পিরামিডের সমান। এবং বিশ্বের ৮০ শতাংশের বেশি ধুলো উত্তর আফ্রিকা ও মধ্যপ্রাচ্যের মরুভূমি থেকে আসে। এটি মহাদেশ ও মহাসাগর অতিক্রম করে হাজার হাজার কিলোমিটার বিস্তৃত। রাষ্ট্রসংঘের সাধারণ পরিষদের সভাপতি ফিলেমন ইয়াং বলেন, জলবায়ু পরিবর্তন, ভূমিক্ষয়-সহ আরও একাধিক কারণের জেরে এই ধরনের ঝড় বিশ্বজুড়ে অন্যতম চ্যালেঞ্জ হয়ে উঠেছে। তিনি আরও বলেন, এই ঝড়ের জেরে সৃষ্ট ধুলো-বালি প্রতিবছর ৭০ লক্ষ মানুষের অকাল মৃত্যু ঘটায়। ফুসফুসের পাশাপাশি হৃদরোগের সমস্যা ব্যাপকভাবে বাড়িয়ে দেয়। শুধু তাই নয়, ধুলো ঝড় ফসলের উৎপাদন ২৫ শতাংশ কমিয়ে দেয়। যার জেরে ক্ষুধা ও অভিবাসন সমস্যা তৈরি হয়।
পশ্চিম এশিয়ার তরফে রাষ্ট্রসংঘের অর্থনৈতিক ও সামাজিক কমিশনের প্রধান রোয়েল দাশতি জানান, "শুধুমাত্র মধ্যপ্রাচ্য ও উত্তর আফ্রিকায় এক ঝড় মোকাবিলায় বার্ষিক খরচ হয় ১৫০ বিলিয়ন ডলার। যা সেখানকার জিডিপির ২.৫ শতাংশ।" তিনি আরও বলেন, চলতি বসন্তে আরব অঞ্চলে ঝড়ের জেরে ইরাকের হাসপাতালগুলিতে শ্বাসকষ্টজনিত রোগীদের ভিড় ব্যাপকভাবে বেড়ে যায়। পরিস্থিতি এমন পর্যায়ে যায় যে কুয়েত ও ইরানে স্কুল-অফিস বন্ধ করে দিতে বাধ্য হয়।
দাশতি জোর দিয়ে বলেন, এই ধুলো-বালির ঝড়কে বিশ্বব্যাপী জাতীয় সমস্যার অন্তর্ভুক্ত করা উচিৎ। তিনি ভূমি পুনরুদ্ধার, কৃষিক্ষেত্রে উন্নতির লক্ষ্যে সকলের সম্মিলিত প্রচেষ্টার উপর জোর দেন।
