সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: মাত্র একদিনের মতো পেট্রল মজুত রয়েছে শ্রীলঙ্কায় (Sri Lanka)। সোমবার এমনটাই জানিয়েছিলেন সদ্য দায়িত্ব নেওয়া প্রধানমন্ত্রী রনিল বিক্রমসিংহে (Ranil Wickremesinghe)। তারপর থেকেই চিন্তার ভাঁজ লঙ্কা বাসীদের কপালে। মনে করা হচ্ছে, দিনে প্রায় ১৫ ঘণ্টা বন্ধ থাকতে পারে বিদ্যুৎ পরিষেবা (Power Cut)। পেট্রলের অভাবে সম্পূর্ণ ভেঙে পড়তে চলেছে সেদেশের পরিবহন ব্যবস্থা। তার প্রভাব পড়তে চলেছে দেশের খাদ্য সামগ্রী, ওষুধ-সহ বিভিন্ন নিত্য প্রয়োজনীয় জিনিসের উপরে।
জাতির উদ্দেশে ভাষণ দিতে গিয়ে প্রধানমন্ত্রী বলেছেন, “এই মুহূর্তে মাত্র একদিনের মতো পেট্রল মজুত রয়েছে আমাদের কাছে। আগামী দু’মাস আমাদের সবচেয়ে কঠিন সময়। সেই সময়ের মোকাবিলা করতে নিজেদের প্রস্তুত থাকতে হবে আমাদের। বহু চ্যালেঞ্জ আসবে আমাদের সামনে। অনেক ত্যাগ স্বীকার করে এই কঠিন সময় সামাল দিতে হবে।” ইতিমধ্যেই আর্থিক অবস্থার উন্নতি করতে দেশের এয়ারলাইন্স বিক্রি করে দেওয়ার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে সরকারের তরফে। প্রধানমন্ত্রী জানিয়েছেন, ভারতীয় মুদ্রায় প্রায় ৫৮০ কোটি টাকা দরকার দেশের প্রয়োজনীয় জিনিস আমদানি করতে।
[আরও পড়ুন: যত কৃষ্ণাঙ্গ, তত হত্যা! ১৮০ পাতার ইস্তেহারে লিখেছিল মার্কিন মুলুকে দশজনকে নিকেশ করা আততায়ী]
নতুন করে টাকা ছাপানোর নির্দেশও দেওয়া হয়েছে সরকারের তরফ থেকে। বাধ্য হয়েই এমন সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে বলে জানিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী। সরকারি কর্মচারীদের বেতন দেওয়া এবং অবশ্য প্রয়োজনীয় জিনিস কিনতে যেন সুবিধা হয়, সেই জন্যই এমন সিদ্ধান্ত। তবে এই পদক্ষেপের ফলে টাকার মূল্য কমে যাবে, সেই কথাও মাথায় রাখতে হচ্ছে।
ইতিমধ্যেই কলম্বোর পেট্রল পাম্পে ভিড় করেছেন অটোচালকরা। প্রায় ছয়-সাত ঘণ্টা লাইনে দাঁড়িয়ে পেট্রল কিনতে হচ্ছে বলে জানিয়েছেন তাঁরা। পেট্রল না থাকার কারণে বন্ধ থাকবে কল কারখানা। থেমে থাকবে কৃষিকাজ। এমনকি প্রয়োজনীয় ওষুধও সঠিক জায়গায় পৌঁছে দেওয়া সম্ভব হবে না। শ্রীলঙ্কার প্রাক্তন শক্তিমন্ত্রী উদয়া গাম্মানপিলা দেশের আর্থিক সংকট সম্পর্কে বলেছেন, রক্তহীন মানুষের মতো অবস্থা। সংসদে ইয়াপা আবেবর্ডানা বলেছেন, “খাবার, গ্যাস এবং বিদ্যুতের সংকট আরও বাড়বে। এর ফলে খাদ্য সামগ্রীর অভাব হবে, দুর্ভিক্ষও (Starvation) হতে পারে।” তবে সমগ্র বিশ্বের কাছে বিক্রমসিংহে আবেদন করেছেন, যেন খাদ্য সামগ্রী দিয়ে তাঁদের দেশকে সাহায্য করা হয়। শ্রীলঙ্কার নতুন ক্যবিনেট আশা করছে, খুব তাড়াতাড়ি এই সংকট কাটিয়ে ওঠা সম্ভব হবে।