shono
Advertisement
Uttar Pradesh

'এখানে মরে যাব', সৌদিতে 'বন্দি' ভারতীয় যুবকের ভিডিও ভাইরাল, তৎপর দূতাবাস

সরকারিভাবে কাফালা প্রথা বন্ধ হলেও 'দাসত্বের' এই নাগপাশ এখনও বহাল সৌদিতে?
Published By: Amit Kumar DasPosted: 09:10 PM Oct 25, 2025Updated: 09:10 PM Oct 25, 2025

সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: সৌদি আরবে কাফালার ফাঁদে ভারতীয় যুবক! বিদেশি শ্রমিকদের কার্যত 'ক্রীতদাসে' পরিণত করা ভয়াবহ এই প্রথার ফাঁদে পড়ে যুবকের কাতর আর্জি, 'আমি বাড়ি ফিরতে চাই। এখানে আমি মরে যাব। আমাকে বাঁচান।' উত্তরপ্রদেশের এলাহাবাদের বাসিন্দা এক যুবকের মর্মান্তিক সেই ভিডিও (ভিডিওর সত্যতা যাচাই করেনি সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল) ভাইরাল সোশাল মিডিয়ায়। যা দেখার পর তৎপর হয়ে উঠেছে সৌদি আরবের ভারতীয় দূতাবাস। শুরু হয়েছে খোঁজ।

Advertisement

সোশাল মিডিয়ায় ভাইরাল হওয়া ওই ভিডিওতে দেখা যাচ্ছে, ভীষণ গরমে মরুভূমির ধূ ধূ বালির মাঝে উঁট নিয়ে বেরিয়েছেন এক যুবক। তাঁর দাবি, তাঁকে জোর করে আটকে রাখা হয়েছে। তিনি চাইলেও বাড়ি ফিরতে পারছেন না। ভোজপুরী ভাষায় যুবক জানাচ্ছেন, ''আমার বাড়ি এলাহাবাদে। গ্রামের নাম শেখপুর। সৌদি আসার পর এখানে আটকে পড়েছি আমি। কাফিল (কাফালার প্রধান) আমার পাসপোর্ট নিয়ে নিয়েছে। আমি বাড়ি ফিরে যাওয়ার অনুরোধ করায় কাফিল আমায় খুনের হুমকি দিয়েছে।'' ভিডিওতে নিজের নাম পরিচয় স্পষ্ট না করলেও যুবকের আর্জি, "আপনারা আমায় সাহায্য করুন। নাহলে এখানে মরে যাব। আমি আমার মায়ের কাছে যেতে চাই। এখানে আমার কেউ নেই। আপনি হিন্দু হোন বা মুসলিম ভিডিওটি প্রচুর শেয়ার করুন যাতে এই ভিডিও প্রধানমন্ত্রীর কাছে পৌঁছয়।"

এই ভিডিও সোশাল মিডিয়ায় শেয়ার করেছেন আইনজীবী কল্পনা শ্রীবাস্তব। বিদেশমন্ত্রী এস জয়শঙ্করকে ট্যাগ করে তাঁর আবেদন অবিলম্বে বিষয়টি দেখুন। ভিডিও সামনে আসার পর তৎপর হয়েছে সৌদির ভারতীয় দূতাবাস। এক্স হ্যান্ডেলে লেখা হয়েছে, 'দূতাবাসের তরফে ওই ব্যক্তির অবস্থান জানার চেষ্টা চলছে। কিন্তু ভিডিওতে তাঁর অবস্থান, যোগাযোগের ঠিকানা বা নিয়োগকর্তা সম্পর্কে কোনও তথ্য না থাকায় পদক্ষেপ করা সম্ভব হচ্ছে না। আপনার কাছে অনুরোধ ওই ভিডিওর উৎস সম্পর্কে বিস্তারিত তথ্য জানুন।' পাশাপাশি আরও জানানো হয়েছে, 'যেহেতু ওই ব্যক্তি বলেছেন তিনি প্রয়াগরাজের বাসিন্দা তাই সেখানকার জেলাশাসক, পুলিশ সুপাররা বিষয়টি খোঁজ নিতে পারেন। তাঁর পরিবারের কাছ থেকে যাবতীয় তথ্য নিয়ে আমাদের জানাতে পারেন। দূতাবাসের ইমেল আইডিও দেওয়া হয়েছে (cw.riyadh@mea.gov.in) ওই বিবৃতিতে।

উল্লেখ্য, দীর্ঘদিন ধরে আরব দেশগুলির এক ভয়াবহ ক্রীতদাস প্রথা এই কাফালা ব্যবস্থা। যার মাধ্যমে কোনও বিদেশি শ্রমিকের কাজ ও বসবাস নির্ভর করে তাঁর নিয়োগকর্তা বা স্পনসরের উপর। যাকে বলে কাফিল। এই কাফালা ব্যবস্থায় বিদেশি শ্রমিক সম্পূর্ণরূপে তাঁর কাফিলের অধীন। ওই ব্যক্তিই সিদ্ধান্ত নেবেন শ্রমিকের ভিসার মেয়াদ, কাজের পরিবর্তন কিংবা দেশছাড়ার বিষয়ে। এই পৃষ্টপোষক বা কাফিলের অনুমতি ছাড়া দেশছাড়া কিংবা অন্য কাফালায় যাওয়ার সুযোগ নেই। নির্যাতিত হলে আইনি প্রতিবার চাওয়ারও সুযোগ থাকত না। চূড়ান্ত বিতর্কিত এই ব্যবস্থাকে আধুনিক দাসপ্রথার সঙ্গে তুলনা করে সমালোচকরা। বিশেষ করে গৃহকর্মী, নির্মাণ শ্রমিক-সহ নিম্ন বেতনের অভিবাসীরা এতে ভয়ানকভাবে শোষিত হন। ২০২২ সালের কাতার ফুটবল বিশ্বকাপের আগে এশিয়ার অসংখ্য মানুষ এই প্রথার কবলে পড়ে প্রাণ হারান। ১৯৫০-এর দশকে সস্তায় শ্রমিক পেতে এই প্রথা চালু করেছিল আরব দেশগুলি। প্রবল বিতর্কের জেরে চলতি বছরের জুন মাসে সেই 'কাফালা' প্রথা সৌদি আরবে বন্ধ করা হলেও, তা যে বাস্তবে বিশেষ কার্যকর হয়নি এই ভিডিওই তা প্রমাণ করছে।

Sangbad Pratidin News App

খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ

হাইলাইটস

Highlights Heading
  • সৌদি আরবে কাফালার ফাঁদে পড়ে যুবকের কাতর আর্জি, 'আমি বাড়ি ফিরতে চাই। এখানে আমি মরে যাব। আমাকে বাঁচান।'
  • উত্তরপ্রদেশের এলাহাবাদের বাসিন্দা এক যুবকের মর্মান্তিক সেই ভিডিও ভাইরাল সোশাল মিডিয়ায়।
  • যা দেখার পর তৎপর হয়ে উঠেছে সৌদি আরবের ভারতীয় দূতাবাস।
Advertisement