shono
Advertisement
Ayatollah Ali Khamenei

ইজরায়েল-আমেরিকার খতম তালিকায় খামেনেই! কে এই রহস্যময় সুপ্রিম লিডার?

কেন খামেনেইকে নিয়ে এত মাথাব্যথা পশ্চিমী দুনিয়ার?
Published By: Paramita PaulPosted: 03:01 PM Jun 18, 2025Updated: 04:19 PM Jun 18, 2025

সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: ইজরায়েল-আমেরিকার চক্ষুশূল ইরানের সুপ্রিম লিডার আয়াতোল্লা আলি খামেনেই! তাঁর মৃত্যু না হওয়া পর্যন্ত তেহরানের মাটিতে হামলা চলবে বলে সাফ জানিয়ে দিয়েছে তেল আভিভ। আমেরিকাও বলছে, ইরানকে সম্পূর্ণ নিঃশর্ত আত্মসমর্পণ করতে হবে। নয়তো তাঁদেরকে খুঁজে খুঁজে মারা হবে! কিন্তু কে এই আয়াতোল্লা আলি খামেনেই? কীভাবে তাঁর উত্থান? কেন তাঁকে নিয়ে এত মাথাব্যথা পশ্চিমী দুনিয়ার?

Advertisement

এ প্রসঙ্গে প্রথমেই বলে রাখা দরকার, আয়াতোল্লা কোনও নাম নয়। এটি একটি পদ। ধর্মের ভিত্তিতে তৈরি হওয়া দেশ ইরানের সুপ্রিম লিডার হলেন 'আয়তোল্লা'। আসলে ইরানে নির্বাচিত প্রেসিডেন্ট, প্রধানমন্ত্রী থাকলেও গোটা দেশটি পরিচালনা করে সুরা কাউন্সিল। তার সদস্য ১২ থেকে ২৫ জন মৌলবী। আর তাদের মাথায় থাকেন 'আয়তোল্লা'। যার ছাড়পত্র পেলে তবেই দেশের প্রেসিডেন্ট, প্রধানমন্ত্রী কিংবা সেনাপ্রধান পদে মনোনয়ন মেলে। তারপর হয় নির্বাচন। সাড়ে তিন দশক ধরে এই 'আয়তোল্লা' পদে রয়েছেন আলি খামেনেই। আর এই ৩৫ বছরের বেশি সময় ধরে নিজের ক্ষমতার শিঁকড় গেঁড়েছেন ইরানের মাটিতে। সম্পূর্ণ নিয়ন্ত্রণে এনেছেন প্রশাসন, বিচারবিভাগ এবং সামরিক বিভাগের উপর।

১৯৩৯ সালে ইরানের পবিত্র শহর মাশহাদ শহরে জন্মগ্রহণ আলি খামেনেইয়ের। ক্রমশ তৎকালীন সুপ্রিম লিডার আয়াতোল্লা রুহোল্লাহ খোমেইনির ছায়াসঙ্গী হয়ে ওঠেন তিনি। ইরানে তখন শাহ বংশের শাসন। পশ্চিমী দুনিয়া ঘেঁষা রাজবংশের হাত ধরে তেহরানে তখন 'ইরান বসন্ত'। স্বাধীনতার স্বাদ পাচ্ছেন মহিলারা। কট্টরপন্থী মানসিকতা ছুড়ে ফেলে পশ্চিমী হাওয়ায় গা ভাসিয়ে তরতরিয়ে এগিয়ে চলেছে ইরান। ইজরায়েল তখন বন্ধু দেশ। কিন্তু কথায় আছে, 'চিরদিন কারোর সমানও নাহি যায়'। স্বজনপোষণ, দুর্নীতি, বিরোধীদের কণ্ঠস্বর দমন-সহ একাধিক অভিযোগে রাজতন্ত্রের বিরুদ্ধে ফুঁসে ওঠে ইরান। পথে নামে আমজনতা। সেই সুযোগে মোল্লাতন্ত্র ফিরিয়ে আনতে সক্রিয় হয় ইসলামিক উগ্রপন্থীরা। শাহ দেশ ছাড়েন ১৯৭৯ সালে। খোমেইনির হাত ধরে মধ্যপ্রাচ্যের এই দেশে প্রতিষ্ঠিত হয় মোল্লাতন্ত্র। মাথায় বসেন খোমেইনি। সেই সময় তাঁর ছায়াসঙ্গী ছিলেন বর্তমান আয়াতোল্লা। বিরোধীরা ১৯৮১ সালে খামেনেইকে খতম করার ছক কষেছিল। সেই হামলায় ডানহাতের কর্মক্ষমতা হারান খামেনেই। ১৯৮৯ সালে খোমেইনির মৃত্যুর পর সুপ্রিম লিডার হয়ে ওঠেন তিনি।

সেই সময় থেকে শুধু ইরান নয়, বরং মধ্যপ্রাচ্যের অন্যান্য মুসলিম দেশগুলিতে প্রভাব বিস্তার করতে শুরু করেন। বিশেষত শিয়াদের মধ্যে। গত ৩৫ বছর ধরে পারমাণবিক অস্ত্রভাণ্ডার বৃদ্ধি থেকে আধুনিক সমরাস্ত্র ভাণ্ডার তৈরির কাজ সেরেছেন নিঃশব্দে। নিষেধাজ্ঞার আশঙ্কা উড়িয়ে আমেরিকার চোখে চোখ রেখে জবাব দিতে দ্বিতীয়বার ভাবেননি তিনি। তবে শুধু আমেরিকা নয়, ইরানের ঘোষিত শত্রু ইজরায়েল। বলা ভালো, ইহুদিরা। তাদের খতম করতে বদ্ধপরিকর তেহরান। কার্যত সেই উদ্দেশেই, দেশের মাটিতে আণবিক অস্ত্র বানাতে বদ্ধপরিকর তারা। ইজরায়েলকে শায়েস্তা করতে হেজবোল্লা, হামাস এবং হাউথিদের মদত দিয়ে চলেছেন খামেনেই। তাদের অস্ত্র সাহায্য থেকে যুদ্ধ প্রশিক্ষণ দিচ্ছে তারা। ছায়াযুদ্ধ চালালেও কোনওদিনই শক্রর সঙ্গে সরাসরি সংঘাতে জড়ায়নি ইরান। কিন্তু ২০২৩ সালে প্রথমবার ইরানের সেই ভাবমূর্তি ভাঙে। হামাস পালটা মার খেতেই মেঘের আড়াল থেকে বেরিয়ে আসে ইরান, তথা আয়তোল্লা খামেনেইয়ের ভূমিকা। এবার তো সরাসরি সংঘাতে ইরান-ইজরায়েল। আর এই লড়াইয়ে জড়িয়ে পড়ছে আমেরিকাও। তারা সাফ জানিয়েছে, ওয়াশিংটনের 'হিটলিস্টে' একা খামেনেই নন, রয়েছে গোটা 'মোল্লাতন্ত্র'। হুঁশিয়ারির পরই তেল আভিভের বিমানবন্দরে চোখে পড়েছে প্রাইভেট জেটের ওঠানামা। সূত্রের দাবি, সেই বিমানেই দেশ ছাড়ছেন মৌলবীরা।

এই সংঘাতে খোমেইনিকে শেষ করতে পারলে ইরানকে ফের অভিভাবকহীন করে দিতে পারবে পশ্চিমী দুনিয়া। সেই সুযোগে নিজেদের 'তেলের খনি'র দেশে হাতের পুতুলকে ক্ষমতায় বসাতে পারবে আমেরিকা। আবার খামেইনির পতন হলে, খেই হারাবে হেজবোল্লা, হামাস, হাউথিরা। তাতে ইজরায়েলে পোয়া বারো! ভয়ডরহীন হয়ে নিজের রাজপাট চালাতে পারবেন ইজরায়েলের প্রধানমন্ত্রী বেঞ্জামিন নেতানিয়াহু।

 

Sangbad Pratidin News App

খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ

হাইলাইটস

Highlights Heading
  • ইজরায়েল-আমেরিকার চক্ষুশূল ইরানের সুপ্রিম লিডার আয়াতোল্লা আলি খামেনেই!
  • তাঁর মৃত্যু না হওয়া পর্যন্ত তেহরানের মাটিতে হামলা চলবে বলে সাফ জানিয়ে দিয়েছে তেল আভিভ।
  • আমেরিকাও বলছে, ইরানকে সম্পূর্ণ নিঃশর্ত আত্মসমর্পণ করতে হবে।
Advertisement