সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: ভারতের নিরাপত্তা ও স্বার্থ বিঘ্নিত হয় এমন কাজ সেদেশের ভূখণ্ডে হতে দেবে না শ্রীলঙ্কা। এই বিষয়ে শনিবার ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদিকে কথা দিলেন শ্রীলঙ্কার প্রেসিডেন্ট অনুরা কুমার দিশানায়েক। বিগত সময়ে দ্বীপরাষ্ট্রে চিনের তৎপরতায় উদ্বেগ বেড়েছে দিল্লির। একদিকে যেমন শ্রীলঙ্কার জলসীমায় চিনা নজরদারি জাহাজের গতিবিধি দেখা গিয়েছে, তেমনই বেজিংয়ের থেকে কোটি কোটি টাকা ঋণ নিয়েছে কলোম্বো। এই অবস্থায় থাইল্যান্ডে বিমস্টেক শীর্ষ সম্মেলন সেরে মোদির শ্রীলঙ্কা সফর ছিল অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ।
শুক্রবার কলোম্বোর বন্দরনায়েকে আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে ভারতের প্রধানমন্ত্রীকে উষ্ণ অভ্যর্থনা জানান দ্বীপরাষ্ট্রের পাঁচ মন্ত্রী। শনিবার সকালে ইনপেন্ডেন্স স্কয়ারে মোদিকে আনুষ্ঠানিক অভ্যর্থনা জানান খোদ প্রেসিডেন্ট অনুরা কুমার দিশানায়েক। সেখানে মোদিকে শ্রীলঙ্কার সর্বোচ্চ নাগরিক সম্মান 'মিত্র বিভূষণ পদক'-এ ভূষিত করা হয়। যা ভারত-শ্রীলঙ্কা বন্ধুত্বের ইতিবাচক বার্তা বলেই মনে করা হচ্ছে। পদকের এই মঞ্চ থেকে দিশানায়েক বলেন, শ্রীলঙ্কার খারাপ সময় বারবার পাশে দাঁড়িয়েছে ভারত। সেটা ২০১৯ সালে জঙ্গি হামলা হোক কিংবা সাম্প্রতিক কোভিড মহামারীর সংকটকাল।
এদিন চিনের অস্বস্তি বাড়িয়ে ভারত ও শ্রীলঙ্কা যুগান্তকারী প্রতিরক্ষা সহযোগিতা চুক্তি স্বাক্ষর করেছে। ত্রিনকোমালিকে একটি জ্বালানি কেন্দ্র হিসেবে গড়ে তুলতে সম্মত হয়েছে দুই দেশ। এছাড়াও ভারতের অনুদানে শ্রীলঙ্কার পূর্ব অঞ্চলে বেশ কিছু উন্নয়নমুলক প্রকল্পের চুক্তি স্বাক্ষর করেছে। দুই দেশের রাষ্ট্রপ্রধানের বৈঠকে একাধিক বিষয়ে ইতিবাচক কথা হয়েছে।
২০২৩ সালে চিনের নজরদার জাহাজ ‘ইউয়ান ওয়াং ৫’ শ্রীলঙ্কার বন্দরে ভিড়েছিল। সেই সময় এই বিষয়ে ভারতের তরফে কড়া বার্তা দেওয়া হয়েছিল। এরপর গত বছরের অগস্ট মাসে শ্রীলঙ্কায় নোঙর ফেলেছিল পিএলএ-র জাহাজ ‘হাই ইয়াং ২৪ হাও’। চিন এগুলিকে গবেষণার কাজে ব্যবহৃত জাহাজ বলে দাবি করলেও ভারতের আশঙ্কা ছিল যে, পরমাণু এবং ক্ষেপণাস্ত্র কর্মসূচির উপর নজরদারি করতেই বার বার শ্রীলঙ্কার নৌসেনার পোতাশ্রয়ে যাচ্ছে চিনা যুদ্ধজাহাজগুলি। এই বিষয়ে শ্রীলঙ্কাকে সাবধান করেছিল আমেরিকাও। যারপর চিনের গুপ্তচর জাহাজকে তাদের বন্দরে ঠাঁই দেওয়া বন্ধ করে কলোম্বো। এদিন সরাসরি ভারতকে আস্বস্ত করে শ্রীলঙ্কা জানাল, সেদেশের ভূখণ্ডে ভারতের স্বার্থ বা নিরাপত্তা বিরোধী কোনও কার্যকলাপ হতে দেবে না তারা। স্বভাবতই চাপে পড়ল চিন।