সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: কেউ পদক জিতেছেন রিও গেমসে, কেউ টোকিও অলিম্পিকে। কেউ আবার কমনওয়েলথ গেমসে সোনা জয়ের হ্যাটট্রিক করেছেন। ভারতের সেই তারকা কুস্তিগিরদের (Wrestler) আখড়া এখন যন্তর মন্তরের পাশের রাস্তা! পাঠক ঠিকই পড়েছেন। বুধবার সকালে দিল্লির রাজপথেই দেখা গেল, অনুশীলন করছেন বজরং পুনিয়া, সাক্ষী মালিক, বিনেশ ফোগতরা। ছিলেন দেশের আরও দুই নামী কুস্তিগির সঙ্গীতা ফোগত এবং সত্যব্রত কাদিয়ানও। তাঁদের অনুশীলন করালেন কোচ সুজিত মান। কারণ, সামনে পর পর বড় ইভেন্ট রয়েছে। অনুশীলন বন্ধ রাখা চলবে না। আবার ধরনাও দিতে হবে। তাই আক্ষরিক অর্থেই রাস্তায় নেমে পড়েছেন সাক্ষীরা।
জাতীয় কুস্তি সংস্থার (Wrestling Federation of India) সভাপতি তথা বিজেপি সাংসদ ব্রিজভূষণ শরন সিংয়ের বিরুদ্ধে যৌন হেনস্তার অভিযোগ তুলে রবিবার থেকে যন্তরমন্তরে ফের ধরনায় বসেছেন বজরং, বিনেশরা। বুধবার ধরনার চতুর্থ দিন সকালে দেখা গেল, ধরনা মঞ্চের পাশেই অনুশীলন করছেন তাঁরা। সকাল সাড়ে ৭টা থেকে পৌনে ন’টা পর্যন্ত চলে সাক্ষীদের অনুশীলন পর্ব। কিন্তু রাস্তায় কুস্তির অনুশীলন তো যথেষ্টই ঝুঁকির কাজ! মানছেন কোচ সুজিত। তাঁর যুক্তি, কুস্তিগিররা অসহায়। তাঁদের কাছে অন্য কোনও পথ নেই। সুজিতের কথায়, “আর তো কোনও বিকল্প নেই। দুর্ভাগ্যবশত রাস্তাতেই অনুশীলন করতে হচ্ছে। আর কী করব! সামনের বছর অলিম্পিক। তার টিকিট মিলবে এবারের এশিয়ান গেমস এবং বিশ্ব চ্যাম্পিয়নশিপ থেকে। কুস্তিগিরদের তো অনুশীলন করতেই হবে।”
[আরও পড়ুন: কেরলে মোবাইল ফোনে বিস্ফোরণে মত্যু শিশুকন্যার, মুখ খুলল স্মার্টফোন সংস্থা]
কিন্তু স্টেডিয়ামের সঙ্গে রাজপথের আখাড়ার তফাত অনেকটাই! সুজিতের বক্তব্য, “অবশ্যই! এখানে জিম বা ম্যাটের কোনও সামগ্রীই নেই। কোনওরকমে অনুশীলন চলছে। দৌড় আর সাধারণ কিছু কৌশল অনুশীলন করাচ্ছি।” তবে যৌন হেনস্তার বিচার আদায়ের লড়াইয়ে কোনও ফাঁক রাখতে নারাজ কুস্তিগিররা। বুধবার নিজেদের লড়াইয়ে সমর্থন চেয়ে বসলেন খোদ প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর (Narendra Modi) কাছে। রিও গেমসে ব্রোঞ্জজয়ী সাক্ষীর (Sakshi Malik) কথায়, “প্রধানমন্ত্রী বলেন বেটি বাঁচাও বেটি পড়াও। তিনি সবার মন কি বাত শোনেন। তিনি কি আামাদের মনের কথা শুনতে পাচ্ছেন না! পদক জয়ের পর তিনি আমাদের ডেকে সম্মানিত করেছেন, আমাদের কন্যাসম বলে উল্লেখ করেছেন। তাই এখন আমরা প্রধানমন্ত্রীকে আমাদের মন কি বাত শোনার আবেদন জানাচ্ছি।”
ধরনায় বসা কুস্তিগিরদের পাশে দাঁড়িয়ে কেন্দ্রীয় সরকারের কড়া সমালোচনা করেন জম্মু ও কাশ্মীরের প্রাক্তন রাজ্যপাল সত্যপাল মালিক। বজরংদের পাশে দাঁড়িয়েছেন অভিনব বিন্দ্রাও। অলিম্পিকে সোনাজয়ী এই শুটারের টুইট, “অ্যাথলিটরা আন্তর্জাতিক মঞ্চে দেশের প্রতিনিধিত্ব করার জন্য কড়া পরিশ্রম করেন। সেখানে দেশের সেরা কুস্তিগিরদের সুবিচারের দাবিতে পথে নামতে দেখে খারাপ লাগছে। নির্যাতিতদের পাশে আছি। বিষয়টির সুষ্ঠু নিষ্পত্তি হওয়া প্রয়োজন।” সুপ্রিম কোর্টের নির্দেশ উপেক্ষা করে ব্রিজভূষণের বিরুদ্ধে অভিযোগকারীদের পরিচয় দিল্লি পুলিশ প্রকাশ করেছে বলে অভিযোগ কুস্তিগিরদের। সাত অভিযোগকারীর মধ্যে একজন নাবালিকা হওয়ায় সবার পরিচয় গোপন রাখার নির্দেশ দেয় প্রধান বিচারপতি ডি ওয়াই চন্দ্রচূড়ের ডিভিশন বেঞ্চ। যদিও দিল্লি পুলিশ সেই নির্দেশ মানেনি বলে এক সাক্ষাৎকারে দাবি করেন সাক্ষী।