নব্যেন্দু হাজরা: হলুদ ট্যাক্সি মানেই কলকাতার নস্ট্যালজিয়া। হলুদ ট্যাক্সি মানেই কলকাতার আবেগ। কালের নিয়মে হলুদ ট্যাক্সি এখন হেরিটেজ। আদালতের নিয়ম মেনে তা এখন বন্ধের পথে। পনেরো বছরের অনেক বেশি বয়স হয়ে গিয়েছে অধিকাংশ গাড়িরই। ফলে ক্রমেই একের পর এক বসে যাচ্ছে পুরনো হলুদ অ্যাম্বাসাডর। আর হিন্দমোটর কারখানা বন্ধ হয়ে যাওয়ার পর অ্যাম্বাসাডরও নতুন করে তৈরি হয়নি ফলে ক্রমশই বিলুপ্তির পথে হলুদ ট্যাক্সি।কমতে কমতে এখন হাজার তিনেক গাড়ি রাস্তায় নামে। সেগুলোও যাতে উঠে না যায়, তাই হলুদ ট্যাক্সিকে বাঁচাতে রাজ্যের পরিবহণ মন্ত্রী স্নেহাশিস চক্রবর্তীকে চিঠি ট্যাক্সিচালকদের।
তবে আশার খবর এটাই নতুনভাবে শহরে আসতে চলেছে হলুদ ট্যাক্সি। নতুন একটি সংস্থা হাজার দুয়েক গাড়ি নামাবে বলে ঠিক হয়েছে। ফেব্রুয়ারি মাসে বিশ্ববঙ্গ বাণিজ্য সম্মেলনের মঞ্চে তা ঘোষণা হতে পারে। সূত্রের খবর, কলকাতার নস্ট্যালজিয়ার কথা মাথায় রেখেই শহরে হলুদ ট্যাক্সি নামানোর কথা ভাবছে ওই সংস্থা। অ্যাম্বাসাডারের ছাঁচেই সেই গাড়ি তৈরি হচ্ছে বলে খবর।
সাধারণ যাত্রীদের সুবিধার্থে হলুদ ট্যাক্সি বুকিংয়ের ক্ষেত্রে যাত্রীসাথী অ্যাপ চালু করেছিল। তা যথেষ্টই জনপ্রিয়। তথ্য বলছে, চালু হওয়ার পর তিন বছরে এই অ্যাপে ৬০.৯৮ লক্ষ ট্রিপ করেছে হলুদ ট্যাক্সি। অ্যাপ সার্চ করেছে ৩.১৯ কোটি। চালকদের রোজগার হয়েছে ১৬৬ কোটি টাকা।
ট্যাক্সিচালকদের দাবি, পনেরো বছরের নিয়ম মেনে বর্তমানে শহরে ছোটা হলুদ ট্যাক্সি বসে গেলেও তাঁদের দাবি, ওই পারমিটে নতুন গাড়ি নামাতে দেওয়া হোক। তার রংও হোক হলুদ। চারজন যাত্রী বসতে পারবে এমন গাড়ি নামানোরই ছাড়পত্র দেওয়া হোক। তবে গাড়ির মডেল তো আলাদা হবে। কারণ, এখন আর পুরনো মডেলে গাড়ি পাওয়া যায় না। এবিষয়ে পরিবহণ দপ্তরের তরফে জানানো হয়েছে, এক্ষেত্রে নিয়ম কী আছে, দেখা হবে। যদি পুরনো গাড়ির পারমিটে নতুন গাড়ি নামানোর ছাড়পত্র থাকে, তবে দেওয়া হবে।
এআইটিইউসি অনুমোদিত ট্যাক্সি সংগঠনের আহ্বায়ক নওয়ালকিশোর শ্রীবাস্তব বলেন, "হলুদ ট্যাক্সি হল শহরের হেরিটেজ যান। এর সঙ্গে কলকাতার নস্ট্যালজিয়া জড়িয়ে রয়েছে। ফলে এটাকে উঠিয়ে দেওয়া ঠিক না। তাই হলুদ ট্যাক্সি বাঁচাতে আমরা সরকারের কাছে আবেদন করেছি।" কলকাতায় বর্তমানে রয়েছে ৭৫০০ মতো হলুদ অ্যাম্বাসাডর ট্যাক্সি। এর মধ্যে প্রায় ৪৫০০-র মতো হলুদ ট্যাক্সি এবারই বসে যাচ্ছে। ১৫ বছরের নিয়মে এই সব ট্যাক্সি 'বাতিলের খাতায়' জমা পড়েছে। বাকি হাজার তিনেক মতোও আগামী বছরেই হয়ে যাবে। ফলে সেই শূণ্যস্থান পূরণে হলুদ ট্যাক্সি নিয়ে আসছে নয়া সংস্থা।