অভিষেক চৌধুরী, কালনা: যোগ ব্যায়ামেই মিলবে রোগ থেকে মুক্তি। শুধু তাই নয়, সকাল-সকাল ঘুম থেকে ওঠা ও সংযত জীবনযাপনের মধ্যেই লুকিয়ে রয়েছে সুস্থ জীবনের চাবিকাঠি। আন্তর্জাতিক যোগ দিবসের আগে কালনার (Kalna) কৃষ্ণদেবপুর এলাকায় এক ভক্তের বাড়িতে এমনটাই জানালেন পদ্মশ্রী পুরস্কারপ্রাপ্ত বিশ্বের প্রবীণতম ১২৬ বছর বয়সী স্বামী শিবানন্দ (Swami Sivananda)। তাঁকে দেখতে মানুষের ঢল।
১৮৯৬ সালের ৮ আগস্ট অখন্ড ভারতের সিলেটে জন্ম স্বামী শিবানন্দের। তিনি নেতাজি সুভাষচন্দ্র বসুর থেকে পাঁচমাসের বড়। মাত্র ছয় বছর বয়সেই মা-বাবাকে হারান তিনি। ফলে আর্থিক অনটন ছিল নিত্যসঙ্গী। খিদে মেটাতে প্রায়ই খেতে হয় ফ্যান। পরে নবদ্বীপে এসে ওঙ্কারানন্দ স্বামীর তত্ত্বাবধানে প্রথাগত পঠনপাঠনের পরিবর্তে বাস্তব জীবন সম্পর্কে ধারণা, নিঃস্বার্থ মানবসেবা, যোগ, আধ্যাত্মিক জ্ঞান লাভ করেন শিবানন্দ। তাঁর কথায়, গোটা পৃথিবীটাই তাঁর বাড়ি। সকল মানুষ তাঁর বাবা-মা। মানবসেবার কাজে বারাণসী, পুরী, হরিদ্বার, নবদ্বীপ, বাঁকুড়া ঘুরেছেন। গত ৫০ বছর ধরে পুরীর কুষ্ঠ রোগাক্রান্ত ভিক্ষুকদের নানাভাবে সাহায্য করছেন। জাতীয় ও আন্তর্জাতিক সম্মান পেয়েছেন অনেক। তারমধ্যে উল্লেখযোগ্য হল, যোগরত্ন, বসুন্ধরা রত্ন, প্রবীণতম জীবন্ত কিংবদন্তী। তাঁর সাফ কথা, লক্ষ্য যদি ভাল হয়, ঈশ্বর সহায় হবেন।
[আরও পড়ুন: দু’দিন নিখোঁজ থাকার পর উদ্ধার TMC নেতার ক্ষতবিক্ষত দেহ, নেপথ্যে রাজনীতি?]
অষ্টম আন্তর্জাতিক যোগা দিবসের আগে সোমবার কালনায় এক ভক্তদের বাড়িতে গেলেন স্বামী শিবানন্দ। সুস্থ থাকার টোটকা দিলেন তিনি। যা যোগা দিবসের আগে বড় প্রাপ্তি। পৃথিবীর প্রবীণতম নাগরিক স্বামী শিবানন্দ স্বামীর শিষ্যেরা আগামী ২৩ জুন কলকাতার রবীন্দ্র সদনে একটি সভার আয়োজন করেছেন। সেখানে হাজির হয়ে শিবানন্দ তাঁর সরল সাদাসিধে জীবনযাপনের দর্শন ব্যাখ্যা করবেন।
শিষ্যদের বিশ্বাস, শিবানন্দ স্বামীর সফল দীর্ঘজীবনের রহস্য ভবিষ্যৎ প্রজন্মকে আলো দেখাবে। মানব সমাজের উন্নতিতে নিজের জীবন উৎসর্গ করা শিবানন্দ স্বামী এ বছর পদ্মশ্রী সম্মান পেয়েছেন। শিবানন্দের মতে, দীর্ঘ জীবনের সরল রাস্তা হল, শৃঙ্খলা, রোজ সকালে যোগাভ্যাস, তেলবিহীন সিদ্ধ খাবার প্রভৃতি।