সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: মহেন্দ্র সিং ধোনিকে (MS Dhoni) দেখে তিনি একটা জিনিস বুঝেছেন। মহেন্দ্র সিং ধোনিকে দেখে বিরাট কোহলি বুঝেছেন যে, নেতা হতে গেলে টিমের অধিনায়ক হওয়ার দরকার পড়ে না। একই সঙ্গে বিশ্বক্রিকেটের সর্বকালের অন্যতম সেরা ব্যাটার কোহলির মনে হয়, অধিনায়ক না থাকার কারণে ব্যাটার হিসেবে অনেক বেশি অবদান রাখতে পারবেন।
দক্ষিণ আফ্রিকার বিরুদ্ধে টেস্ট সিরিজ শেষে আচমকা টেস্ট অধিনায়কত্ব ছেড়ে দিয়েছিলেন কোহলি (Virat Kohli)। সর্বপ্রথম ছেড়েছিলেন টি-টোয়েন্টি অধিনায়কত্ব। পরে ওয়ানডে ক্যাপ্টেন্সি চলে যায়। এবং শেষে টেস্ট ক্যাপ্টেন্সিও ছেড়ে দেন কোহলি। দক্ষিণ আফ্রিকার কাছে অপ্রত্যাশিতভাবে টেস্ট সিরিজ হারার পর। যার নেপথ্যে ভারতীয় বোর্ডের সঙ্গে তাঁর সাম্প্রতিক ঝামেলাই মুখ্য কারণ বলে মনে করা হচ্ছে। ওয়ানডে অধিনায়কত্ব চলে যাওয়ার পর বোর্ড প্রধান সৌরভ গঙ্গোপাধ্যায়ের (Sourav Ganguly) সঙ্গে তাঁর যে বিরোধ প্রকাশ্যে চলে এসেছিল।
তবে রেকর্ড বিচারে দেশের সর্বকালের সফলতম টেস্ট অধিনায়ক মনে করেন, অধিনায়ক নন মানে তাঁর যে কাজ শেষ, তা মোটেও নয়। সোমবার এক চ্যাট শোয়ে কোহলি বলে দিয়েছেন, “সব কিছুরই একটা সময়সীমা থাকে। আর সেটা বুঝতেও হয়।” সঙ্গে প্রাক্তন ভারত অধিনায়ক যোগ করেছেন, “আমার মনে হয়, ব্যাটার হিসেবে টিমে অবদান রাখার অনেক সুযোগ আছে এখন। টিমকে আরও বেশি জেতানো সম্ভব। আর সেটা করতে পারলে, যথেষ্ট গর্বিত হব আমি। আর কী জানেন, নেতা হতে গেলে টিমের অধিনায়ক হওয়ার প্রয়োজন পড়ে না।”
[আরও পড়ুন: পন্টিংকে দেওয়া কথা রাখেননি বিরাট, অধিনায়কত্ব বিতর্ক নিয়ে মুখ খুললেন প্রাক্তন অজি ক্যাপ্টেন]
মহেন্দ্র সিং ধোনির হাত থেকে ভারত অধিনায়কত্বের ব্যাটন গিয়েছিল কোহলির কাছে। এবং বিরাট পরিষ্কার করে দিয়েছেন যে, তিনি আগামীতে ধোনিরই পদাঙ্ক অনুসরণ করতে চান। “অধিনায়কত্ব ছাড়ার পর এমএস ধোনি (MS Dhoni) টিমে যখন ছিল, তখন কি ও নেতা ছিল না? অবশ্যই ছিল। আমরা যে কোনও পরামর্শের জন্য এমএস ধোনির কাছেই যেতাম। কিন্তু ধোনি খুব স্বাভাবিক ভাবেই ব্যাটনটা আমার হাতে তুলে দিয়েছিল। ওর মনে হয়েছিল, ভারতীয় ক্রিকেটকে এগিয়ে নিয়ে যাওয়ার জন্য আমার হাতেই ক্যাপ্টেন্সির ব্যাটনটা তুলে দেওয়া দরকার,” বলে দিয়েছেন কোহলি।
[আরও পড়ুন: স্টেডিয়ামে ৭৫% দর্শক, রাজ্যের ঘোষণায় ভারত-ওয়েস্ট ইন্ডিজ টি-২০ নিয়ে আশাবাদী CAB]
কোহলির উত্তরসুরি হিসেবে বোর্ড বেছে নিয়েছে রোহিত শর্মাকে। সাদা বলের ক্রিকেটে রোহিতকেই অধিনায়ক ঘোষণা করে দিয়েছে বোর্ড। টেস্টেও তাঁকেই অধিনায়ক ঘোষণা করাটা স্রেফ সময়ের অপেক্ষা। কোহলি বলে দিচ্ছেন, অধিনায়কত্ব কখন ছাড়তে হবে, সেটা বোঝাও একজন প্রকৃত নেতার গুণ। “টাইমিংটা বোঝা খুব জরুরি। একজন নেতাকে সেটাকে বুঝতে হয়। তাকে বুঝতে হয়, পরিস্থিতি এবার হয়তো অন্য রকম কিছু চাইছে। দেখুন, সংস্কৃতি বদলায় না। সেটা একই থাকে। কিন্তু সেই সংস্কৃতি আমদানি এক একজন এক এক রকম ভাবে করে থাকে। কারণ, এক একজনকে তাতানোর ধরণ, এক এক রকম হয়,” বলতে থাকেন কোহলি। বলে প্রাক্তন ভারত অধিনায়কের সর্বশেষ সংযোজন, “আর সবাইকে সমস্ত ধরনের ভূমিকার জন্য প্রস্তুত থাকতে হয়। এমএসের অধিনায়কত্বে খেলেছি আমি। তার পর অধিনায়ক হয়েছি। লম্বা সময় অধিনায়কত্ব করেছি। তাই আমার কারও অধিনায়কত্বে খেলতে সমস্যা নেই। আমি যখনই মাঠে নেমেছি, একজন নেতার মতো করে ভেবেছি। তা সে সাধারণ ক্রিকেটার হিসেবে নামলেও। সব সময় চেয়েছি টিমকে জেতাতে। আমি নিজেই নিজের অধিনায়ক।” এই না হলে বিরাট কোহলি!