সুলয়া সিংহ: বারাণসী মানেই চোখের সামনে ভেসে ওঠে কাশী বিশ্বনাথ মন্দির, গঙ্গারতি দশশ্বমেঘ থেকে মণিকর্ণিকা ঘাট। বিশ্বের সবচেয়ে পুরনো জনবসতিপূর্ণ শহর যেন ইতিহাসের জীবন্ত দলিল। পুরানকথা থেকে ধর্ম আর ইতিহাসের মেলবন্ধনে আজও দেশি-বিদেশি পর্যটকদের কাছে অতি আপন, অতি প্রিয় এই শহর। তবে শুধুই চোখের খিদে নয়, বারাণসী কিন্তু রসনাতৃপ্তির ব্যাপারেও ওস্তাদ। এই শহরে ঘুরতে গেলে বেশ কয়েকটি স্ট্রিট ফুট আপনাকে চেখে দেখতেই হবে। নাহলে কিন্তু বারাণসী সফর অসম্পূর্ণ রয়ে যাবে। চলুন তাহলে চটপট জেনে নেওয়া যাক, কাশী বিশ্বনাথ ধামে কোন খাবারগুলি খেতেই হবে।
মালাইয়ো: বারাণসী গিয়ে আর কিছু খান না খান, মালাইয়ো মাস্ট। দুধকে ক্রমাগত জাল দিয়ে ঘন করে প্রায় ফেনার আকার দেওয়া হয়। তাতে মেশানো থাকে খানিকটা কেশর। হলদেটে রঙের সেই মালাইয়ো মাটির ভাঁড়ে তুলে দেওয়া হবে আপনার হাতে। বিশ্বাস করুন, প্রতি চামচে তৃপ্তি। ভাঁড় শূন্য হলে কিন্তু সেটি ফেলে দেবেন না। এবার আপনাকে সেই ভাঁড়েই দেওয়া হবে একই স্বাদের কেশর দুধ। চুমুক দিলেই জাস্ট ম্যাজিক! কাশী বিশ্বনাথ মন্দিরের চার নম্বর গেটের আশপাশে প্রচুর ছোট দোকান পেয়ে যাবেন মালাইয়োর। দাম? মাত্র ৩০ থেকে ৪০ টাকা।
[আরও পড়ুন: এভাবে ফুচকা খেয়েই কমিয়ে ফেলুন ওজন!]
রাবড়ি: বারাণসীর বিখ্যাত বারড়ির কথা হয়তো সকলেরই জানা। খাঁটি দুধের তৈরি রাবড়ি অবশ্য খাবেন। তবে ঘুরতে গিয়ে পেটের খেয়াল রাখা প্রয়োজন। তাই অল্প করে খান। দশশ্বমেঘ ঘাটের কাছে গদোলিয়া মোড়ের কাছেই পেয়ে যাবেন মন ভাল করে দেওয়া রাবড়ি। পাবেন ৪০০/৫০০ টাকা কেজি দরে।
চাট: মন্দির দর্শন করে ঘাটে সময় কাটিয়ে সন্ধে নাগাদ যখন মনটা কিছু ‘খাব খাব’ করবে, তখন দ্বিতীয়বার না ভেবে সোজা চলে যান চাটের দোকানে। হলফ করে বলতে পারি, চাটের এমন স্বাদ আর কোথাও পাবেন না। এক-দুই নয়, অন্তত ১০-১২ রকমের চাট চেখে দেখতে পারেন। টমেটো চাট, আলু টিক্কি চাট থেকে ধনিয়া চাট, নানা স্বাদে মন মজতে বাধ্য। গদোলিয়া মোড়েই পাবেন একাধিক চাটের দোকান। তবে সেরার তালিকার শীর্ষে রাখাই যায় কাশী চাট ভান্ডারকে।
হিংয়ের কচুরি, জিলাপি ও লাল প্যাড়া: বারাণসীর অলিতে গলিতে পাবেন রসের সন্ধান। মন্দিরের আশপাশের যে কোনও গলিতে ঢুকে পড়ুন সাত সকালে। খোঁজ পেয়ে যাবেন গরম গরম হিংয়ের কচুরি আর তরকারির। এক-একটির দাম ৮-১০টাকা। সঙ্গে জিলাপি আর লাল প্যাড়া মিস করবেন না প্লিজ। এমন প্যাড়া কিন্তু শুধুমাত্র বারাণসীতেই পাবেন।
লস্সি: গরম কালে বারাণসী গেলে লস্সিতে চুমুক দিতে ভুলবেন না। সাধারণত দই ফেটিয়ে যে লস্সি খেতে আমরা অভ্যস্ত, এখানকার লস্সির স্বাদ কিন্তু তার থেকে আলাদা। এখানকার লস্সি বেশ ঘন, অর্থাৎ দইয়ের পরিমাণ বেশি। তাই এটি খাওয়ার নিয়ম চামচ দিয়ে। আবার এর উপর বিভিন্ন ফলও ছড়ানো থাকে। কমলা লেবু থেকে বেদানা কিংবা আপেলের স্বাদে ডুবতে পারেন লস্সিতে।
[আরও পড়ুন: স্বাদ বদলাতে বাড়িতে বানিয়ে ফেলুন পিঁয়াজকলির পরোটা, রইল সহজ রেসিপি]
বেনাসরী পান: এ ব্যাপারে নতুন করে আর কিছুই বলার থাকে না। তবে নবরত্ন পানটি চেখে দেখতে ভুগবেন না। ঘুরেফিরে ছ্যাঁচা পান কিন্তু সঙ্গে নিয়ে ফিরতে ভুলবেন না।