সুকুমার সরকার, ঢাকা: প্রেম বলে কথা। তার টান কে-ই বা এড়াতে পারে? প্রেমের টানে সুদূর আমেরিকা ছেড়ে ঢাকার অদূরে গাজিপুরে গেলেন মার্কিন (US) যুবক। আটলান্টিক মহাসাগর পাড়ি দিয়ে যুক্তরাষ্ট্র থেকে উড়ে বাংলাদেশে পৌঁছে সোজা বিয়ে করলেন মিসৌরি স্টেটের ক্যানসাস সিটির নাগরিক রাইয়ান কফম্যান। তাঁর প্রেমিকা গাজিপুর সিটি কর্পোরেশনের বাসন থানার ভোগড়া মধ্যপাড়া এলাকার বাসিন্দা সাইদা ইসলাম।
সাইদা জানান, ২০২১ সালে এপ্রিলে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে (ডেটিং অ্যাপে) প্রথম রাইয়ান কফম্যানের সঙ্গে পরিচয় হয় তাঁর। নিজেদের ফোন নম্বর, ফেসবুক (Facebook) আইডি ও ঠিকানা বিনিময় করেন। এরপর থেকে নিয়মিত যোগাযোগ হত রাইয়ান ও সাইদার মধ্যে। ফেসবুক ও ফোন নম্বরে ভিডিও কলে কথা বলতে বলতে নিজেরা আরও ঘনিষ্ঠ হন। কথা হতো ভিডিও কলে। এভাবেই একে অপরের প্রেমে পড়েন। প্রায় এক বছর তাঁরা ফেসবুকেই প্রেম করেন। এরপর উভয়ের পরিবারও তাঁদের প্রেমের বিষয়টি জানতে পারে।
অবশেষে দু’জন সিদ্ধান্ত নেন বিয়ে করার। রাইয়ান বিয়ে করার জন্য নিজের দেশেই খ্রিস্টান ধর্ম ত্যাগ করে যথা নিয়মে ইসলাম (Islam) ধর্মগ্রহণ করেন। পরে তার ও সাইদার পরিবারের সম্মতিতে এ বছরের ২৯ মে আটলান্টিক মহাসাগর পাড়ি দিয়ে যুক্তরাষ্ট্র থেকে উড়ে বাংলাদেশে পৌঁছন রাইয়ান। এদিন একে অপরকে চোখের দেখা দেখেন। সামাজিক ও ধর্মীয় রীতি মেনে যাবতীয় আনুষ্ঠানিকতা-সহ বিয়ে সম্পন্ন হয় তাঁদের।
[আরও পড়ুন: কেকে’র মৃত্যুর পরেও বাতিল নয় কনসার্ট, জুলাইতে কলকাতায় আসছেন সোনু নিগম]
বাংলাদেশে (Bangladesh) আসার আগেই বিয়ের গয়না ও বস্ত্র-সহ মোবাইল ফোন কেনার জন্য সাইদার কাছে অর্থ পাঠিয়েছিলেন রাইয়ান। বিয়ের প্রয়োজনীয় কেনাকাটা সম্পন্ন করেন সাইদা। সুদূর আমেরিকা থেকে সুদর্শন ৬ ফুট উচ্চতার যুবক গাজিপুর গিয়ে স্থানীয় এক তরুণীকে বিয়ের খবরে উৎসুক জনতা সেখানে ভিড় জমান। সাইদার স্বজন ও বাংলাদেশ সম্পর্কে অভিজ্ঞতা জানাতে গিয়ে রাইয়ান বলেন, ”বাঙালিরা খুবই অতিথিপরায়ণ। আমেরিকায় অচেনাদের সঙ্গে কেউ খুব একটা কথা বলে না। কিন্তু বাংলাদেশে আসার পর দেখছি আমার প্রতি সবাই খুবই আন্তরিক। আমার খিদে না পেতেই লোকজন আমাকে খাওয়ানোর জন্য ব্যস্ত হয়ে পড়েন। আদর, আপ্যায়ণ করতে ব্যস্ত হয়ে পড়ছেন। যা আমেরিকায় বিরল।”
[আরও পড়ুন: রেস্তরাঁয় খেতে গেলে দিতেই হবে সার্ভিস চার্জ! কেন্দ্রের উদ্যোগের পরেও অনড় মালিক সংগঠন]
সাইদাকে যুক্তরাষ্ট্রে নিয়ে যাওয়ার কথা জানান রাইয়ান। তিনি জানান, আনুষাঙ্গিক কাগজপত্র (K1) ভিসা প্রসেসিং করতে কয়েক মাস সময় লাগতে পারে। এসব সম্পন্ন হলেই সাইদাকে আমেরিকা নিয়ে যাবেন। সেখানে তাঁরা সংসার করবেন। রাইয়ান আমেরিকার নিজ এলাকায় একটি প্লাস্টিক পণ্য তৈরির কারখানায় অপারেটর পদে কাজ করেন। মাধ্যমিক স্কুল পর্যন্ত পড়াশোনা। তার মা-বাবা ছাড়াও এক বড় ভাই রয়েছেন। তাঁরা সেখানে প্রত্যেকেই আলাদাভাবে বসবাস করেন।