সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: একজন ইউটিউবারের বাক্ স্বাধীনতার সীমা কতটা হতে পারে?
শুক্রবার ‘ইস্টবেঙ্গল (East Bengal) ক্লাবকে নিষিদ্ধ করা হোক’ বলে এক ইউটিউবারের মন্তব্যে শোরগোল সামাজিক মাধ্যমে। আরামবাগ টিভিতে ইস্টবেঙ্গল ক্লাবকে নিয়ে উক্ত ইউটিউবারের আরও দাবি, এই রাজ্য সরকারের পতন হয়ে গেলে আর এনআরসি চালু হলে ইস্টবেঙ্গলের অস্তিত্ব থাকবে না। তিনি আরও প্রশ্ন তুলে বলেন, “এই ক্লাবটি রোহিঙ্গাদের ক্লাব নাকি?”
[আরও পড়ুন: অলিম্পিকে মধুর প্রতিশোধ, আর্জেন্টিনাকে হারিয়ে শেষ চারে ফ্রান্স]
ইউটিউবারটির এমন মন্তব্যে রীতিমতো শোরগোল পড়ে গিয়েছে ইস্টবেঙ্গল সমর্থকদের মধ্যে। তীব্র প্রতিক্রিয়া দেখিয়ে তাঁরা ঠিক করেছেন এর বিরুদ্ধে বৃহত্তর আন্দোলনে যাবেন। ইতিমধ্যেই মানিকতলা থানায় একটি ডেপুটেশন জমা দিলেন লাল-হলুদ সমর্থকরা। পাশাপাশি ইস্টবেঙ্গল ফ্যান ক্লাব ইবিআরপির সদস্য রবিশঙ্কর সেন বলেন, “এমন মন্তব্য কখনই মেনে নেওয়া যায় না। আমরা বৃহত্তর আন্দোলনে নামছি।”
এদিন মোহনবাগান সহ-সভাপতি কুণাল ঘোষ এই মন্তব্যের তীব্র প্রতিবাদ করে সামাজিক মাধ্যমে লেখেন, ‘সাহস হয় কী করে ইস্টবেঙ্গলকে এই কথা বলার? মোহনবাগান সমর্থক হিসাবে প্রতিবাদ করছি। ইউটিউবারের স্বাধীনতার নামে এই বাড়াবাড়ি চলতে পারে না।’ তীব্র প্রতিক্রিয়া জানান পৌরপিতা অরূপ চক্রবর্তীও। তিনিও উক্ত ইউটিউবারের ভিডিও শেয়ার করে লেখেন, ‘এই কৃমিকীটটার সাহস হয় কী করে আমাদের আবেগ ঐতিহ্যের ইস্টবেঙ্গল ক্লাবের নামে এ জাতীয় নোংরামি করার। রাজনীতি করতে হলে রাজনীতির মাঠে করুক। ক্লাবের নামে নোংরামি কুৎসিত মন্তব্য করার অধিকার কে দিয়েছে?’
প্রাক্তন ফুটবলার প্রশান্ত বন্দ্যোপাধ্যায় সরাসরি বলছেন, এটা রাজনৈতিক কথা। নিশ্চয়ই বিশেষ উদ্দেশ্য নিয়ে বলছেন। কে বলছেন সেটা দেখতে হবে। বেশি গুরুত্ব দিয়ে লাভ কি?”
প্রশান্ত মানছেন, ইউটিউবারদেরও বাক্ স্বাধীনতারও একটা সীমা থাকা উচিত। আরেক প্রাক্তন ফুটবলার ও প্রাক্তন ইস্টবেঙ্গল কোচ অলোক মুখোপাধ্যায়ও তীব্র নিন্দা করেছেন এমন মন্তব্যের। তিনি যোগ করেন, “ইস্টবেঙ্গল সম্পর্কে খারাপ কথা বললে ছেড়ে কথা বলা হবে না। আর যিনি এমন কথা বলছেন তিনি বোধহয় ফুটবল খেলেননি কোনও দিন। রাজনৈতিক স্বার্থে এমন কথা বলছেন। যদি ক্লাব বৃহত্তর আন্দোলনের দিকে যায় আমরা অবশ্যই ক্লাবের পাশে রয়েছি।”
মনোরঞ্জন ভট্টাচার্য বলছেন, “উনি জানেনই না ইস্টবেঙ্গল ক্লাবের ইতিহাস। যিনি এমন মন্তব্য করেছেন তিনি কোনওদিন ফুটবল খেলেননি। তাই এর আবেগ জানেন না। এই ক্লাবের সঙ্গে দেশের সম্মানও জড়িয়ে রয়েছে। দেখুন উক্ত ইউটিউবারের পাড়ার লোকেরাই হয়তো এর বিরোধিতা করছেন। উনি যে এই সরকারের কথা উল্লেখ করেছেন, এই সরকার আসার আগেও তো ক্লাব ছিল। ১০৫ বছরের ইতিহাস ইস্টবেঙ্গলের।”