সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: রাশিয়ার (Russia) বিরুদ্ধে ‘অর্থনৈতিক যুদ্ধ’ শুরু করেছে আমেরিকা ও ইউরোপ। ইউক্রেন যুদ্ধে মস্কোকে বেকায়দায় ফেলতে জেলেনস্কি সরকারকে অস্ত্র দিচ্ছে ওয়াশিংটন ও ব্রাসেলস। পালটা জীবাশ্ম জ্বালানিকে হাতিয়ার করেছেন রুশ প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন। আর এতে ফলও মিলতে শুরু করেছে। এবার পুতিনের দাবি মেনে রুশ তেল কেনার জন্য একপ্রকার বাধ্য হয়ে গ্যাজপ্রম ব্যাংকে রুবল অ্যাকউন্ট খুলেছে দশটি ইউরোপীয় সংস্থা।
[আরও পড়ুন: যুদ্ধে আপত্তি থাকলেও রুশ মাছে অরুচি নেই জাপানের, নতুন চুক্তি টোকিও-মস্কোর]
ব্লুমবার্গ নিউজ সূত্রে খবর, এখনও পর্যন্ত সবমিলিয়ে ইউরোপের ২০টি সংস্থা গ্যাজপ্রম ব্যাংকে রুবল অ্যাকউন্ট খুলেছে। নতুন খাতা খোলার আবেদন জানিয়েছে ইউরোপের আরও ১৪টি তৈল কোম্পানি। এর ফলে রাশিয়ার হাতে বিপুল অঙ্কের অর্থ আসবে বলে জানিয়েছেন বিশেষজ্ঞরা। আর মস্কোর আয়ে রাশ টানার লক্ষ্য ছিল আমেরিকা ও ইউরোপের। কিন্তু অপরিশোধিত তেল ও গ্যাস রপ্তানি করে আর্থিক নিষেধাজ্ঞার প্রভাব অনেকটাই খর্ব করতে পারছেন পুতিন। ফলে ইউক্রেনে যুদ্ধ চালিয়ে যেতে এই মুহূর্তে তাঁকে প্রচণ্ড কোনও সমস্যার মুখোমুখি হতে হবে না।
ইউক্রেন যুদ্ধের জেরে রাশিয়ার উপর একাধিক নিষেধাজ্ঞা জারি করেছে আমেরিকা ও ইউরোপীয় ইউনিয়ন। ফলে বিদেশে সঞ্চিত প্রায় ৩০০ বিলিয়ন ডলারের মুদ্রাভাণ্ডারে হাত দিতে পারছে না মস্কো। একইসঙ্গে, রাশিয়ার ব্যাংকগুলিকে আন্তর্জাতিক আর্থিক লেনদেনের ‘সুইফট’ ব্যবস্থা থেকে বাদ দেওয়া হয়। তারপর থেকেই, জ্বালানির দাম রুবলে মেটানোর দাবি জানিয়ে আসছে পুতিন প্রশাসন। গত এপ্রিল মাসে পোল্যান্ড ও বুলগেরিয়ায় গ্যাসের জোগান বন্ধ করে দেয় রাশিয়া (Russia)। রুশ সরকারি তেল ও গ্যাস উৎপাদনকারী সংস্থা ‘গ্যাজপ্রম’ জানিয়ে দেয় যে টাকা না মেলায় পড়শি দুই দেশে গ্যাসের জোগান বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে।
এহেন পরিস্থিতিতে শর্ত না মানলে গোটা ইউরোপে গ্যাসের জোগান বন্ধ করে দেওয়ার হুমকি দিয়েছেন রুশ প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন। এবং মুখে প্রতিবাদ করলেও শর্ত মানতে বাধ্য হয়েছে রুশ জ্বালানির উপর নির্ভরশীল জার্মানি ও অস্ট্রিয়া। জার্মান সংস্থা ইউনিপার আগেই জানিয়েছে, ইতিমধ্যেই ইউরোপে একটি রুশ ব্যাংকের শাখায় তারা অ্যাকাউন্ট খুলছে। তার মাধ্যমেই জ্বালানির দাম মেটানো হবে। একই বার্তা এসেছে অস্ট্রিয়ার জ্বালানি সংস্থা ওএমভিজেএফ-এর তরফেও। সবমিলিয়ে আপাতত পরিস্থিতি পুতিনের পক্ষেই বলে মত অনেকের।
সম্প্রতি জি-৭ দেশগুলি জানিয়েছে, “রুশ এনার্জির প্রতি নির্ভরতা ছেড়ে বেরিয়ে আসতে হবে আমাদের। ধাপে ধাপে রাশিয়া থেকে তেল আমদানি করাও বন্ধ করে দেওয়া হবে। তবে এটা সময় সাপেক্ষ ব্যাপার। রুশ তেলের বিকল্প তৈরি করে নেওয়ার সময় দিতে হবে পৃথিবীর অন্যান্য দেশগুলিকে।” ফ্রান্স, কানাডা, জার্মানি, ইটালি, জাপান, ব্রিটেন এবং আমেরিকা যুক্তরাষ্ট্র- এই সাতটি দেশের ফোরাম হল জি-৭।