সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: সিরিয়ার প্রাক্তন প্রেসিডেন্ট বাশার আল আসাদকে বিষ দিয়ে হত্যার চেষ্টা রাশিয়ায়! গৃহযুদ্ধে বিদ্রোহীদের হাতে ক্ষমতা হারিয়ে এখন বন্ধু ভ্লাদিমির পুতিনের দেশে আশ্রয় নিয়েছেন আসাদ। এক প্রাক্তন রুশ গুপ্তচরের দাবি, মস্কোতেই নিজের অ্যাপার্টমেন্টে তাঁকে মেরে ফেলার চেষ্টা করা হয়েছে। ভয়ংকর কাশিতে প্রায় দমবন্ধ হয়ে যাওয়ার অবস্থা হয় তাঁর। ভাগ্যের জোরে প্রাণরক্ষা হয়েছে আসাদের। এই খবর প্রকাশ্যে আসার পরই জল্পনা শুরু হয়েছে। তাহলে কি রাশিয়ায় কোনও গুপ্তঘাতক রয়েছে? ষড়যন্ত্রের নেপথ্যে কি তুরস্ক?
সিরিয়া থেকে পালিয়ে আসার পর আসাদকে কূটনৈতিক আশ্রয় দিয়েছে মস্কো। কিন্তু তাঁর চলাফেরায় বেশ কিছু বিধিনিষেধ জারি করা হয়েছে। বিভিন্ন আন্তর্জাতিক সংবাদমাধ্যম সূত্রে জানা গিয়েছে, রবিবার নিজের অ্যাপার্টমেন্টেই হঠাৎ গুরুতর অসুস্থ হয়ে পড়েন আসাদ। এই ঘটনায় ওই প্রাক্তন রুশ গুপ্তচর 'জেনারেল এসভিআর' নামে এক এক্স হ্যান্ডেলে দাবি করেন, 'রবিবার হঠাৎ অসুস্থ হয়ে পড়েন সিরিয়ার প্রাক্তন প্রেসিডেন্ট বাশার আল আসাদ। তাঁর ভয়ংকর কাশি শুরু হয়। তারপর কার্যত দম বন্ধ হয়ে আসে। সঙ্গে সঙ্গে এক চিকিৎসককে ডাকা হয়। তাই কোনও বিপদ ঘটেনি। চিকিৎসার পর এখন তাঁর অবস্থা স্থিতিশীল। কিন্তু আসাদকে মেরে ফেলার চেষ্টা করা হয়েছিল। তাঁকে বিষ দেওয়া হয়েছিল। চিকিৎসার সময় নানা পরীক্ষা করা হয়। তাতে তাঁর শরীরে বিষের উপস্থিতি মেলে।' এই খবর প্রকাশ্যে আসার পরই নানা জল্পনা শুরু হয়েছে। যদিও এই বিষয়ে রাশিয়া বা সিরিয়ার তরফে সরকারি কোনও বিবৃতি দেওয়া হয়নি।
উল্লেখ্য, গত ২৭ নভেম্বর সিরিয়ার গৃহযুদ্ধ তীব্র আকার ধারণ করে। আল কায়দার শাখা সংগঠন হায়াত তাহরির আল-শাম (এইচটিএস)-এর নেতৃত্বে বিদ্রোহীরা আসাদ বাহিনীকে হঠিয়ে আলেপ্পো, হোমস, দারার মতো গুরুত্বপূর্ণ শহর দখল করে নেয়। এরপর ৮ ডিসেম্বর রাজধানী দামাস্কাসে পৌঁছয় বিদ্রোহী গোষ্ঠী। পালটা মার দিলেও সেখানে আসাদের সেনা হার স্বীকার করতে বাধ্য হয়। ইস্তফা দিয়ে দেশ ছেড়ে রাশিয়ায় পালিয়ে যান আসাদ। তাঁর সঙ্গে ছিলেন স্ত্রী আসমা আল আসাদ ও তিন সন্তান হাফেজ, জেইন, করিম। তারপর থেকে রাশিয়ার আশ্রয়েই রয়েছেন তাঁরা।
বিশ্লেষকদের মতে, এই মুহূর্তে বন্ধু পুতিনের দেশেও নিরাপদ নন আসাদ। প্রাণ সংশয়ের আশঙ্কা রয়েছে তাঁর। এই ঘটনায় হাত থাকতে পারে তাহরির আল-শামের। কারণ তারা মনে করছে, রাশিয়ার সাহায্যে ফের সিরিয়ায় ফিরে আসাদ ক্ষমতা পুনরুদ্ধার করতে পারেন। অন্যদিকে, এই গোটা ঘটনায় হাত থাকতে পারে তুরস্কের। আসাদহীন সিরিয়ায় আধিপত্য কায়েম করতে মরিয়া তারা। গৃহযুদ্ধে এইচটিএসকে হাত করেছিল আঙ্কারা। ফলে আসাদের যদি মৃত্যু হয় সবচেয়ে বেশি লাভবান হবে তুরস্ক।