সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: ফের গাজায় ভয়ংকর হামলা ইজরায়েলের! একাধিক শরণার্থী শিবি, স্কুল-সহ বিভিন্ন জায়গায় বৃহস্পতিবার মুহুর্মুহু বোমাবর্ষণ করে ইজরায়েলি ডিফেন্স ফোর্সেস (আইডিএফ)। এই আক্রমণে মৃত্যু হয়েছে হামাসের পুলিশ প্রধান মাহমুদ সালাহ-সহ অন্তত ৭১ জনের। আহত বহু। এমনটাই জানিয়েছে গাজার স্বাস্থ্যমন্ত্রক। প্যালেস্টাইনের জঙ্গি সংগঠনটির সিভিল ডিফেন্স সার্ভিস গুঁড়িয়ে দিতে এই আঘাত হানে ইজরায়েলি সেনা। কারণ তাদের পরিকল্পনা ছিল জওয়ানদের উপর হামলা চালানোর।
বিবিসি সূত্রে খবর, কয়েকদিনের মধ্যেই কাতারে শান্তি বৈঠক হওয়ার কথা রয়েছে। সেখানে প্রতিনিধি পাঠানোর কথা জানিয়েছিলেন ইজরায়েলের প্রধানমন্ত্রী বেঞ্জামিন নেতানিয়াহু। কিন্তু তার আগেই গতকাল থেকে ফের গাজায় আক্রমণের ধার তীব্র করে ইজরায়েলি ফৌজ। জানা গিয়েছে, দক্ষিণ গাজার খান ইউনূস এলাকার আল মাওয়াসি ও জাবালিয়া শরণার্থী শিবিরে এদিন সব মিলিয়ে মোট ৩০টি হামলা চালায় ইজরায়েলের বিমানবাহিনী। সেসময় মাওয়াসি ক্যাম্পেই ছিল হামাসের পুলিশ প্রধান মাহমুদ সালাহ এবং সহকারী প্রধান হুসসাম শাহওয়ান। হামলায় মৃত্যু হয় দুজনের। পাশাপাশি ওই শিবিরে প্রাণ হারান ১১ জন।
ঘটনার কড়া নিন্দা জানিয়ে হামাসের দাবি, ওই দুই পুলিশকর্তা মানবিক সাহায্যের জন্য শরণার্থী শিবিরে গিয়েছিলেন। তখনই হামলা চালানো হয়। এদিকে, এই হামলা নিয়ে মুখ খুলেছে ইজরায়েলও। আইডিএফ জানিয়েছে, সালাহ ও শাহওয়ান দুজনেই কুখ্যাত জঙ্গি। ইজরায়েলি সেনার উপর হামলার চালানোর নীল নকশা তৈরি করছিল তারা। গোপন সূত্রে খবর পেয়ে তাদের পরিকল্পনা ভেস্তে দিতে অভিযান চালানো হয়েছে। তবে ইজরায়েলি এই রক্তক্ষয়ী অভিযানে গাজার নানা প্রান্তে শিশু ও মহিলা-সহ প্রাণ গিয়েছে ৭১ জনের।
উল্লেখ্য, গতকাল দক্ষিণ গাজার ‘সেফ জোনে’ হামলা চালানোর অভিযোগ ওঠে ইজরায়েলের বিরুদ্ধে। মৃত্যু হয় মহিলা ও শিশু-সহ অন্তত ১১ জন। আহতও হন বেশ কয়েকজন। সংবাদমাধ্যমে ওই জায়গাগুলোকে ‘সেফ জোন’ বলা হলেও ইজরায়েলের দাবি সেখানে জেহাদিদের ডেরা ছিল। তাই আক্রমণ শানানো হয়েছে। এক বছর পূর্ণ হয়ে গিয়েছে গাজা যুদ্ধের। হামাস নিধনে গোটা গাজার নানাপ্রান্ত গুঁড়িয়ে দিচ্ছে ইজরায়েল। অভিযান শুরু করার পর থেকে ইহুদি দেশটির সেনার অভিযোগ ছিল, গাজার বিভিন্ন হাসপাতাল, স্কুল, ধর্মীয়স্থানে লুকিয়ে রয়েছে হামাস জঙ্গিরা। সেখান থেকেই তাঁরা নানা সন্ত্রাসী কাজকর্ম করছে, সেনার উপর হামলা চালাচ্ছে। ছবি ও ভিডিও প্রকাশ করে এই অভিযোগের সাপেক্ষে যুক্তিও দিয়েছে ইজরায়েলি প্রতিরক্ষা বাহিনী। হামাস প্রধান ইসমাইল হানিয়েহ, ইয়াহিয়া সিনওয়ার মতো একাধিক কুখ্যাত জঙ্গি নিকেশ হয়েছে তাদের অভিযানে।