গোবিন্দ রায়, বসিরহাট: স্রেফ আইনি গেরোয় প্রাণ গেল ৯৭টি অবলা জীবের। পাখি পাচারকারীকে গ্রেপ্তার করেছিল শুল্কদপ্তর। সঙ্গে উদ্ধার হয়েছিল বিভিন্ন প্রজাতির প্রায় ১৫০টি টিয়া। এর পর চারদিন কেটে গেলেও তাদের বনদপ্তরের হাতে তুলে দেওয়া হয়নি। এমনকী, দপ্তরের তাদের জন্য উপযুক্ত খাবার বা চিকিৎসার ব্যবস্থা করা হয়নি বলেও অভিযোগ। যার জেরে বেঘোরে প্রাণ গেল ৯৭টি টিয়ার।
বিএসএফ সূত্রে জানা গিয়েছে, ১৩ জানুয়ারি ভোরে ভারত-বাংলাদেশ সীমান্তবর্তী স্বরূপনগরের তারালী এলাকায় কর্তব্যরত জওয়ানরা সাতটি খাঁচা ভরতি ১৪০ টি টিয়াপাখি আটক করে। ধরা পড়ে পাচারকারীও। জানা যায়, উদ্ধার হওয়া টিয়াগুলি অধিকাংশই ‘পাঞ্জাব টিয়া’। আন্তর্জাতিক বাজারে এক-একটির দাম ৫০০ থেকে ১০০০ টাকা। এছাড়াও কিছু দেশি চন্দনাও ছিল। পাঞ্জাব-বিহার থেকে পশ্চিমবঙ্গ হয়ে পাখিগুলি বাংলাদেশে পাচার হচ্ছিল বলেই অনুমান।
[আরও পড়ুন: Coronavirus: আরও শিথিল রাজ্যের কোভিডবিধি, আউটডোর শুটিং-সহ একাধিক ক্ষেত্রে ছাড়ের ঘোষণা]
ঘটনার চারদিন পর এদিকে ধৃত পাচারকারী হাসিবুর সরদারকে সোমবার বসিরহাট আদালতে তোলা হয়। জামিনের আবেদন খারিজ করে আগামী ২৪ জানুয়ারি পর্যন্ত ধৃতের জেল হেফাজতের নির্দেশ দিয়েছে আদালত। এতদিন তার মতোই আটক পাখিগুলিও ছিল শুল্কদপ্তরে। আদালত সূত্রে জানা জানা যায়, শুল্কদপ্তরের হেফাজতে থাকাকালীন ১৪০টির মধ্যে ৯৭টি পাখির মৃত্যু হয়েছে। বাকি পাখিগুলিকে চিকিৎসার পর জঙ্গলে ছেড়ে দেওয়ার নির্দেশ দিয়েছে আদালত। সেই ‘মুক্তির’ ভিডিওগ্রাফি করতে হবে বলেও নির্দেশ আদালতের।
বন্যপ্রাণ সংরক্ষণ আইন অনুযায়ী, সীমান্তে আটক হওয়া বন্যপ্রাণী উদ্ধার করে বিএসএফ শুল্কদপ্তরের হাতে তুলে দেয়। তার পর শুল্ক দপ্তর কমিশনকে জানায় সে কথা। সেখান থেকে ‘সবুজ সংকেত’ পাওয়ার পর উদ্ধার হওয়া বন্যপ্রাণকে বনদপ্তরের হাতে তুলে দেওয়া হয়। কিন্তু এক্ষেত্রে উদ্ধারের চারদিন পেরলেও পাখিগুলিকে বনদপ্তরের হাতে কেন তুলে দেওয়া হয়নি, তা নিয়ে উঠছে প্রশ্ন।
[আরও পড়ুন: Coronavirus Update: ১২ দিন পর রাজ্যের দৈনিক সংক্রমণ দশ হাজারের নিচে, নিম্নমুখী অ্যাকটিভ কেসও]
৯৭টি পাখির অকাল মৃত্যুতে ক্ষুব্ধ পশুপ্রেমীরা। তাদের প্রশ্ন, আইন অনুযায়ী পাচারকারী তো উপযুক্ত শাস্তি পাবে। কিন্তু বেঘোরে চলে যাওয়া জলজ্যান্ত ৯৭ টি প্রাণ কি আবার ফিরে আসবে? এনিয়ে অবশ্য শুল্কদপ্তরের কোনও প্রতিক্রিয়া মেলেনি।