অর্ণব আইচ: কলকাতায় দাপট ‘টিম ১১’-র। ফুটবলের নয়, মোবাইল আর টাকা হাতানোর। মুর্শিদাবাদে হাতেকলমে ট্রেনিং দিয়ে কলকাতায় এসে একের পর এক অপারেশন ‘টিম ১১’-র সদস্যদের। মুর্শিদাবাদ থেকে কলকাতায় এসে পর পর মোবাইল ও টাকা হাতিয়ে নিচ্ছিল এই দুষ্কৃতীরা। কলকাতায় দুই মাথাকে গ্রেপ্তার করে মুর্শিদাবাদের লালগোলায় তল্লাশি চালিয়ে এই গ্যাংয়ের ১১ জনকে গ্রেপ্তার করলেন লালবাজারের গোয়েন্দারা।
কিছুদিন ধরেই কলকাতার বিভিন্ন জায়গায় দুষ্কৃতীদের নতুন গ্যাং হানা দিচ্ছে, এমন খবর পান লালবাজারের গোয়েন্দারা। তাঁরা জানতে পারেন যে, শহরের শপিং মল ও বাজারে যেখানে মানুষের ভিড় হয়, সেখানেই দেখা যাচ্ছে এই নতুন গ্যাংয়ের সদস্যদের। রীতিমতো কৃত্রিম ভিড় সৃষ্টি করে তারা টার্গেট করছে কোনও ব্যক্তি বা মহিলাকে। সুকৌশলে তাঁর ব্যাগ বা পকেট থেকে তারা তুলে নিচ্ছে মোবাইল বা মানিব্যাগ। এই ব্যাপারে কয়েকটি অভিযোগ পুলিশের কাছে আসে। একই ‘মোডাস অপারেন্ডি’তে হওয়া এই অপরাধের উপর নজরদারি করতে গিয়ে সিসিটিভি ক্যামেরায় কয়েকজনকে দেখা যায়। সেইমতো কলকাতার বিভিন্ন জায়গায় তল্লাশি চালিয়ে গোয়েন্দা পুলিশের আধিকারিকরা সরকার সরিফুল ও সরিফুল শেখ নামে দু’জনকে গ্রেপ্তার করেন। তাদের লালবাজারে নিয়ে আসা হয়। জেরার মুখে তারা স্বীকার করে যে, তারা দু’জনেই মুর্শিদাবাদের লালগোলার বাসিন্দা।
[আরও পড়ুন: ঘূর্ণিঝড় রেমালের দাপটে ডুবল কলকাতা, গাছ ভেঙে ব্যাহত যান চলাচল]
জানা গিয়েছে, লালগোলার বেশ কয়েকজন দুষ্কৃতীকে নিয়ে তারা রীতিমতো গ্যাং তৈরি করেছে। টাকা ও মোবাইল হাতানোয় তুখোড় এই দুই গ্যাং লিডার মুর্শিদাবাদের বাংলাদেশ সীমান্তবর্তী নির্জন এলাকায় নিয়ে গিয়ে তাদের রীতিমতো প্রশিক্ষণ দিয়েছে। এমনকী, স্থানীয় বাজারে ওই গ্যাং সদস্যদের নিয়ে গিয়ে তারা হাতেকলমেও ‘প্র্যাকটিক্যাল ট্রেনিং’ করিয়েছে গ্যাংয়ের বাকি সদস্যদের। গ্যাংয়ের ওই দুই মাথাকে জেরা করে লালগোলায় হানা দেয় লালবাজারের গোয়েন্দাদের একটি টিম। লালগোলার একাধিক গ্রামে তল্লাশি চালিয়ে বাকি ন’জনকে গোয়েন্দারা গ্রেপ্তার করেন। এই গ্যাং কলকাতা ছাড়াও অন্য কোনও জেলায় ‘অপারেশন’ করেছে কি না, তা জানার চেষ্টা হচ্ছে বলে জানিয়েছে পুলিশ।