সুরজিৎ দেব, ডায়মন্ড হারবার: আলোর রোশনাই সেজে উঠেছে থানা। যেখানে সারাদিন ধরপাকড়, অভিযোগ-পালটা অভিযোগ চলতে থাকে সেখানেই শোনা গেল ‘যদিদং হৃদয়ং মম…’ মন্ত্র। প্রজপতি ঋষির আশীর্বাদে চারহাত এক হল স্বরূপ প্রামাণিক ও রানু জানার। দু’জনেই সিভিক পুলিশের কর্মী। বিয়ে করলেন দক্ষিণ ২৪ পরগনার মথুরাপুর থানায়। আনন্দ সহকারে বিয়ের ভোজ খেলেন থানার কর্মীরা।
মথুরাপুর থানার তালপুকুরের বাসিন্দা স্বরূপ প্রামাণিক। সম্প্রতি তাঁর স্ত্রী অসুস্থ হয়ে মারা যান। অন্যদিকে সিভিক পুলিশের কর্মী রানু জানা দেবীপুর এলাকার বাসিন্দা। তার স্বামী একজন সিভিক পুলিশ কর্মী ছিলেন। তাঁরও মৃত্যু হয়। স্বামীর চাকরি পেয়েই সিভিক পুলিশের কর্মী হিসেবে চাকরি শুরু করেন রানু। বর ও কনে দু’জনেই মথুরাপুর থানাতেই কর্মরত। প্রথমে বন্ধুত্ব, পরে সম্পর্কে জড়িয়ে পড়েন স্বরূপ ও রানু। ভালবাসার এই সম্পর্ক সময়ের সঙ্গে আরও পোক্ত হয়। আর তার সম্পর্কে বাকিরাও জানতে পারেন।
[আরও পড়ুন: ভাঙাচোরা ঘর সত্ত্বেও আবাস যোজনা প্রত্যাখ্যান, মঞ্চে তিন ‘মুখ’ চেনালেন অভিষেক]
ঠিক করা হয়, স্বরূপ ও রানুর চার হাত এক করা হবে। যেমনি ভাবা, তেমনি কাজ। গত বৃহস্পতিবার থানাতেই মথুরাপুর থানার এস আই অনুপ মজুমদারের উদ্যোগে দুই সিভিক পুলিশ কর্মীর বিবাহ সম্পূর্ণ হয়। এলাহি আয়োজন করা হয় মথুরাপুর থানার পক্ষ থেকে। আলোর সাজে সেজে ওঠে গোটা থানা। বিয়েতে আমন্ত্রিত অতিথিদের জন্য করা হয় ভুরিভোজের আয়োজন। কনেকে সম্প্রদান করেন মথুরাপুর থানার এসআই অনুপ মজুমদার।
অনুপবাবুর কথায়, “এই দিনটি অবশ্যই স্মরণীয় করে রাখার দিন আমাদের থানার জন্য। আমরা ওদের দু’জনের কঠিন সময় পেরিয়ে আসার দিন গুলো দেখেছি। এবং ওরা দু’জন দু’জনের কাছে আসতে চায় এই বিষয়টি জানার পরেই থানার উদ্যোগে বড়বাবুর সঙ্গে আলোচনা করে থানাতেই বিয়ের আয়োজন এর ব্যবস্থা করা হয়েছিল।” প্রত্যেক পুলিশকর্মী, বড়বাবু, মেজোবাবুকে ধন্যবাদ জানান রানু জানা। “আমাকে নতুন করে পরিবার ফিরিয়ে দেওয়া হয়েছে। কোনওদিন স্বপ্নেও ভাবিনি আমার বিয়ে এইভাবে আরও একবার হতে পারে।” রানুকে স্ত্রী হিসেবে পেয়ে খুশি স্বরূপও। সকলকে ধন্যবাদ জানান তিনি।