রাজ কুমার, আলিপুরদুয়ার: দীর্ঘ দুই বছর আগে মৃতদেহ কবর দেওয়া হয়েছিল। মৃত্যু নিয়ে সংশয় থাকলেও পুলিশের তরফ থেকে তদন্ত করেনি বলে অভিযোগ। মৃত তরুণের মা শেষপর্যন্ত আদালতের দ্বারস্থ হয়েছিলেন। সেই বিষয়ে আদালত নির্দেশ দেয়, ময়নাতদন্তের জন্য মৃতদেহ কবর থেকে তুলতে হবে। সেই নির্দেশের পরই মৃতদেহ তোলা হল মাটি খুঁড়ে। চাঞ্চল্যকর এই ঘটনাটি ঘটেছে আলিপুরদুয়ারের ভারত-ভুটান সীমান্তের জয়গাঁতে।

জানা গিয়েছে, ২০২৩ সালের জানুয়ারি মাসে ভুটানে কাজ করতে যান জয়গাঁর গুয়াবাড়ি এলাকার বাসিন্দা ২১ বছরের তরুণ আসমাদ আলি। রাজমিস্ত্রির সঙ্গে সহকারী হিসেবে কাজ করতেন তিনি। ওই বছর ২৫ এপ্রিল বাড়িতে খবর আসে গলায় ফাঁস লাগিয়ে 'আত্মহত্যা' করেছেন আসমাদ। পরের দিন মৃতদেহ জয়গাঁতে নিয়ে আসা হয়। ওই মৃতদেহ জয়গাঁ থানা রাখতে অস্বীকার করে। কোনও তদন্তও হয়নি। শেষপর্যন্ত গুয়াবাড়ি এলাকায় কবর দেওয়া হয় মৃতদেহ।
মৃতের মা আছিরন বিবির অভিযোগ, ছেলে আত্মহত্যা করতে পারে না। তাঁকে খুন করা হয়েছে। পুলিশ-প্রশাসনের বিভিন্ন দপ্তরে তদন্তের দাবি জানিয়ে গিয়েছিলেন তিনি। কিন্তু কোনও জায়গাতেই তাঁর বক্তব্যকে গুরুত্ব দেওয়া হয়নি। শেষপর্যন্ত কলকাতা হাইকোর্টের জলপাইগুড়ি সার্কিট বেঞ্চের দ্বারস্থ হয়েছিলেন মা। বিচারপতি অরিন্দম মজুমদার সব অভিযোগ গুরুত্ব দিয়ে শোনেন। এরপরই ওই ঘটনার ফের তদন্তের নির্দেশ দেন। পুলিশ তদন্ত শুরু করে। সেই মামলার নথি আলিপুরদুয়ারের সিজেএম আদালতে গেলে বিচারক কবর থেকে মৃতদেহ তুলে ময়নাতদন্ত করার নির্দেশ দেন।
এরপরই মঙ্গলবার সকালে ওই এলাকায় যান জয়গাঁ থানার পুলিশ। ম্যাজিস্ট্রেটের উপস্থিতিতে কবর খোঁড়া হয়। পরিবারের লোকজন ছাড়াও বহু স্থানীয় বাসিন্দা ভিড় করেন সেখানে। বিশাল পুলিশ বাহিনী ঘটনাস্থল ঘিরে রাখে। এত দিন সময় পেরিয়ে যাওয়ায় দেহের অংশ আর তেমন পাওয়া যায়নি। হাড়গোড় উদ্ধার হয়েছে। সেসব ময়নাতদন্তের জন্য নিয়ে যাওয়া হয়েছে। নিহতের মা বলেন, "আদালতের উপর আমরা ভরসা আছে। আমি বিচার পাব।"