অর্ণব আইচ ও রঞ্জন মহাপাত্র: ষষ্ঠ দফার ভোটের আগে ফের পুলিশে বড়সড় রদবদল করল কমিশনের। সরানো হল পশ্চিম মেদিনীপুরের পুলিশ সুপার ধৃতিমান সরকারকে। সোমবার এই মর্মে একটি বিজ্ঞপ্তি জারি করেছে নির্বাচন কমিশন। নতুন এসপি কে হবেন তা জানা যায়নি। কাঁথির ভূপতিনগর ও পটাশপুর থানার ওসিকে আগেই সরানো হয়েছিল। সরানো হয়েছিল পুরুলিয়ার পুলিশ সুপার ও কাঁথির মহকুমা শাসককে। এদিন সেই সব পদে নতুন নিয়োগ করা হল।
আগামী ২৫ তারিখ শনিবার রাজ্য়ের আটটি লোকসভা কেন্দ্রের ভোট (2024 Lok Sabha Election)। মেদিনীপুর, কাঁথি ও তমলুক লোকসভা আসনে ভোট হবে সেদিনই। তার আগে মেদিনীপুরের এসপি ও পূর্ব মেদিনীপুরের দুই থানার ওসি বদল ঘিরে চাপানউতোর শুরু হয়েছে প্রশাসনিক ও রাজনৈতিক মহলে। সুপার বদলের পরই তৃণমূলের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায় (Abhishek Banerjee) তোপ দেগেছেন। তাঁর দাবি, কমিশন বিজেপির অঙ্গুলিহেলনে কাজ করছে।
[আরও পড়ুন: মর্মান্তিক দুর্ঘটনা স্ত্রীর সামনে প্রাণ কাড়ল স্বামীর]
অভিষেক লেখেন, "গতকাল বিজেপি নেতা সমিত মণ্ডল জেলা পুলিশের হাতে বেআইনি ৩৫ লক্ষ টাকা নিয়ে ধরা পড়েছিলেন। যিনি প্রধানমন্ত্রী মোদির সভায় মঞ্চে ছিলেন। আজ সোমবার সেই জেলার এসপিকে বদলি করেছে নির্বাচন কমিশন। এটাই মোদির গ্যারান্টি। যেখানে ধর্ষক ও দুর্নীতিবাজরা নিরাপদ থাকে।"
রবিবারই পুরুলিয়ার পুলিশ সুপারকে সরানো হয়। এদিন সেই পদে আনা হল আশিস মৌযকে। আর কাঁথির এসডিপিও হলেন আজারুদ্দিন খান। কাঁথির ভূপতিনগর ও পটাশপুর থানার দুই ওসি গোপাল পাঠক ও রাজু কুণ্ডুকে সরিয়ে দেয় নির্বাচন কমিশন। সোমবার নোটিস দিয়ে জানানো হয় ভূপতিনগর থানার ওসি হিসাবে দায়িত্ব নেবেন জয়ন্ত দাস। পটাশপুর থানার ওসি হিসাবে দায়িত্ব নেবেন রঞ্জিত বিশ্বাস। জয়ন্ত দাস বীরভূমের সাব-ইন্সপেক্টর ছিলেন। অন্যদিকে, রঞ্জিত বিশ্বাস দুর্গাপুর পুলিশ কমিশনারেটের সাব-ইন্সপেক্টর ছিলেন।
গত একমাসের বেশি সময় ধরে খবরের শিরোনামে রয়েছে ভূপতিনগর। নাড়ুয়াবিলা বিস্ফোরণ কাণ্ডে জড়িত থাকার অভিযোগে দুই তৃণমূল নেতাকে গ্রেপ্তার করতে এসে গ্রামবাসীদের বিক্ষোভের মুখে পড়তে হয় এনআইএ আধিকারিকদের। বিজেপির পক্ষ থেকে বার বার অভিযোগ তোলা হয় ভূপতিনগর থানার ওসি গোপাল পাঠকের বিরুদ্ধে। এমনকী বিধানসভার বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারী একাধিক সভামঞ্চ থেকে ওসি গোপাল পাঠকের বিরুদ্ধে সোচ্চার হয়েছেন। এদিকে সম্প্রতি পটাশপুর ১ ব্লকের অমর্ষিতে নির্বাচনী সভা মঞ্চ থেকে ওসির বিরুদ্ধে সোচ্চার হন বিরোধী দলনেতা। এবার নির্বাচন কমিশন সেই দুই ওসিকে বদলির নির্দেশ দিয়েছে। তৃণমূলের দাবি, বিজেপির নির্দেশ মতো নির্বাচন কমিশন কাজ করছে। বিজেপি নেতারা মঞ্চে যেসব পুলিশ অফিসারদের নাম বলছে,তাঁদের বদলি করছে কমিশন। এর থেকে প্রমাণিত বিজেপির অঙ্গুলিহেলনেই সবটাই চলছে।