সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: ঠিক যেন কোনও হলিউডি রোমাঞ্চকর কল্পবিজ্ঞান ছবির প্লট। মহাকাশে পাঠানো চিনের (China) অন্যতম বৃহত্তম এক রকেটের (Rocket) ভিতরের ১০০ ফুট দীর্ঘ একটি অংশ, যার ওজন ২১ টন আছড়ে পড়তে চলেছে পৃথিবীর বুকে! তার উপরে কোনও রকম নিয়ন্ত্রণই আর নেই চিনা মহাকাশ সংস্থার। ফলে সেটি ভেঙে পড়তে পারে যে কোনও জায়গায়! কল্পনা নয়, সত্যিই সৃষ্টি হয়েছে এমন এক ভয়াবহ পরিস্থিতির।
ঠিক কী ঘটেছে? আসলে মহাকাশে নিজেদের একটি মহাকাশ স্টেশন বানাতে চলেছে বেজিং। ‘তিয়ানহে মহাকাশ স্টেশন’ নামের সেই স্টেশনটি উৎক্ষেপণ করার আগে এখন চলছে সলতে পাকানোর কাজ। পরীক্ষামূলক ভাবে ওই স্টেশনের একটি মডিউল, বলা যায় অংশকে পৃথিবীর কক্ষে পাঠানো হয় গত ২৮ এপ্রিল। আর এই কাজটি করার ভার ছিল লং মার্চ ৫বি রকেটটির উপরে। উৎক্ষেপণ সফল হয়েছিল। মহাকাশ স্টেশনটিকে পৃথিবীর কক্ষপথে স্থাপন করেও ফেলে রকেটটি। কিন্তু তার ভিতরের ১০০ ফুট লম্বা একটি অংশ রকেট থেকে বিচ্ছিন্ন হয়ে যায়। আর তারপর থেকেই তা তীব্রগতিতে ছুটে চলেছে পৃথিবী অভিমুখে। শেষ খবর পাওয়া পর্যন্ত অতিকায় যন্ত্রাংশটি রয়েছে ভূপৃষ্ঠের ১০৬ মাইল থেকে ২৩১ মাইলের মধ্যে। দিন কয়েকের মধ্যেই সেটি বায়ুমণ্ডলে প্রবেশ করতে চলেছে।
[আরও পড়ুন: বিশালদেহী ফুল থেকে দুর্গন্ধ! কৌতূহল, আতঙ্কে দিন কাটাচ্ছেন বর্ধমানবাসী]
সত্যিই কী কোনও ধরনের বিপর্যয় ঘটাতে পারে ওই রকেট? মহাকাশ সংক্রান্ত ওয়েবসাইট‘স্পেস নিউজ’-কে হার্ভার্ড বিশ্ববিদ্যালয়ের এক জ্যোতির্বিজ্ঞানী জোনাথন ম্যাকডাওয়েল জানিয়েছেন, ‘‘বিষয়টা মোটেই ভাল ঠেকছে না। এর আগে চিন আরও একটি মার্চ ৫বি রকেট উৎক্ষেপণ করেছিল। সেবারও সেটি ভেঙে পড়েছিল। শেষ পর্যন্ত আইভরি কোস্টের বহু বাড়ি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছিল সেটির ধাক্কায়।’’
কিন্তু সাধারণত বায়ুমণ্ডলের সঙ্গে ঘষা লেগে তো কক্ষচ্যুত রকেটগুলিতে আগুন ধরে যায় এবং সেটি ভূপৃষ্ঠ পর্যন্ত পৌঁছতে পৌঁছতে ছাই হয়ে যায়। এপ্রসঙ্গে জোনাথনের বক্তব্য, ‘‘অধিকাংশ অংশই জ্বলে গেলেও বেশ কিছু ধাতব অংশ মাটিতে আছড়ে পড়েছিল। সৌভাগ্যবশত সেবার কেউ আহত হয়নি। কিন্তু পুরো বিষয়টাই চিনের দায়িত্বজ্ঞানহীনতার পরিচয়। একটা দশ টনের বিরাট ভারী বস্তুকে এভাবে নিয়ন্ত্রণহীন ভাবে পৃথিবীতে পড়তে দেওয়া যায় না।’’
সেবার ফাঁড়া কেটে গেলেও ফের একবার ঘটেছে অঘটন। আপাতত তাকে ঘিরেই আতঙ্ক বাড়ছে। শেষ পর্যন্ত কোথায় এসে পড়ে রকেটটির ভগ্নাংশ, সেদিকেই তীক্ষ্ণ নজর জ্যোতির্বিজ্ঞানীদের।