সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: মৃত্যুমিছিল অব্যাহত রক্তস্নাত মায়ানমারে (Myanmar)। গত ২ দিনে মৃত্যু হল ২৩ জন গণতন্ত্রকামীর। সেনার গুলিতে জখম হয়েছে ২০ জন। যদিও আন্দোলনের গতিপ্রকৃতি বদলেছে। জুন্টার (Junta) একতরফা গুলিবৃষ্টির বিরুদ্ধে রুখে দাঁড়াচ্ছেন বিক্ষোভকারীরা। তাঁরাও পালটা দেশি বন্দুক, বোমা ছোঁড়েন। কিন্তু তাঁদের আক্রমণে কোনও সেনার মৃত্যুর কথা জানা যায়নি। গত ফেব্রুয়ারি থেকে জুন্টার গুলিতে মৃতের সংখ্যা ছাড়িয়েছে ৬০০।
কয়েকদিন আগে সেনার গুলিতে একদিনে ১১৪ জনের মৃত্যুর পর থেকে মায়ানমারের পরিস্থিতি আরও ভয়াবহ হয়ে উঠেছে। সেই সময় থেকেই গৃহযুদ্ধের আবহ স্পষ্ট হয়ে উঠেছে সেখানে। মায়ানমারের প্রত্যন্ত এলাকার গেরিলা বাহিনীগুলি সেনার বিরুদ্ধে গোপন প্রতিরোধ শুরু করেছে। ২০ বা তার বেশি সশস্ত্র গেরিলা বাহিনী গর্জে উঠেছে জুন্টার আচরণের বিরুদ্ধে। মায়ানমারের সংসদের নির্বাসিত সদস্যদের নিয়ে তৈরি সেনা-বিরোধী গোষ্ঠীও এই গেরিলা বাহিনীগুলির সাহায্য নিতে প্রস্তুত। এদিকে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে রাখতে গেরিলা জনজাতিদের গ্রামে আকাশপথে হামলা চালাতে দেখা গিয়েছে জুন্টাকে।
[আরও পড়ুন: লন্ডনে দূতাবাস দখল সেনার, বের করে দেওয়া হল মায়ানমারের রাষ্ট্রদূতকে]
এরকমই পরিস্থিতিতে বৃহস্পতিবার মায়ানমারের তাজে শহরে ঢুকে পড়ে ৬টি সেনাভরতি ট্রাক। বিক্ষোভকারীরাও পালটা আক্রমণ করে। তাঁদের সামলাতে সেখানে পাঠানো হয় আরও ৫টি সেনা ট্রাক। চলতে থাকে নির্বিচারে গুলি। এর আগে বুধবার কালে শহরে একই ভাবে সেনার গুলিতে মারা যান ১১ জন গণতন্ত্রকামী।
উল্লেখ্য, ১ ফেব্রুয়ারি আচমকাই দেশের শাসনক্ষমতা নিজেদের হাতে তুলে নেয় মায়ানমার সেনা। পালটা ক্যু বা সেনা অভ্যুত্থানের প্রতিবাদে পথে নামে দেশের আমজনতা। কোথাও তারা বিক্ষোভ দেখাচ্ছে, তো কোথাও শান্তিপূর্ণ অবস্থান করছে। রাজধানী নাইপিদাও থেকে শুরু করে ইয়াঙ্গন পর্যন্ত প্রায় সমস্ত বড় শহরের রাস্তায় সেনা অভ্যুত্থানের প্রতিবাদে সরব হয়েছে হাজার হাজার মানুষ। আর তাদের থামাতে নির্বিচারে গুলিবৃষ্টি করেছে জুন্টা। এপর্যন্ত মৃতের সংখ্যা পেরিয়েছে ৬০০। গোটা বিশ্ব নিন্দায় সরব হলেও নির্বিকার মায়ানমারের সেনা।