সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: আমাজনের বৃষ্টি অরণ্যে হদিশ মিলল ৩০০০ বছর পুরনো এক শহরের। নিবিড় সবুজের মধ্যে এতদিন লুকিয়ে ছিল সেই জনপদ। ২০১৫ সালে ‘এলআইডিএআর’ তথা ‘লিডার’ সার্ভের (রিমোট সেন্সিং-এর একটি বহুল ব্যবহৃত পদ্ধতি) মাধ্যমে জানা গিয়েছিল এর অস্তিত্ত্ব। তবে উদ্ভাবনের পর এই প্রথম প্রকাশ্যে এল সেই গোপন শহর সম্পর্কে খুঁটিনাটি তথ্য।
সমীক্ষাপত্রের অন্যতম লেখক অ্যান্টোয়িন ডরিসন জানিয়েছেন, শহরটি আকৃতিতে বিশাল। আমাজনের (Amazon) গভীর বৃষ্টি অরণ্যের যে অংশটি ইকুয়েডরে অবস্থিত, সেখানেই মিলেছে এর হদিশ। আরও স্পষ্ট করে বললে, প্রাচীন উপানো উপত্যকায় একটি আগ্নেয়গিরির পিছনের দিকে। উল্লেখ্য, ফ্রান্সের ন্যাশনাল সেন্টার ফর সায়েন্টিফিক রিসার্চের গবেষকরা এই সমীক্ষা চালিয়েছিলেন। নেতৃত্বে ছিলেন তার অধিকর্তা, অধ্যাপক স্টিফেন রস্টেন।
[আরও পড়ুন: ফেলুদা, ব্যোমকেশের শহরের ত্রাতা দীপক চ্যাটার্জি! ‘বাদামী হায়না’র মোকাবিলায় আবির-পরাণ, পড়ুন রিভিউ]
বিবিসিকে তিনি জানিয়েছেন, ‘‘আমাজনে এযাবৎকালের মধ্যে যত প্রাচীন শহরের খোঁজ মিলেছে, তাদের থেকে সদ্য আবিষ্কৃত এই শহর বেশি পুরোনো। সভ্যতা বলতে আমাদের মাথায় সবার আগে ইউরোপীয় আদলের কথা আসে ঠিকই, কিন্তু এই আবিষ্কার সভ্যতা এবং সংস্কৃতি সম্পর্কে আমাদের এতদিনের চিরাচরিত ধারণায় বদল এনে দিয়েছে।’’ তিনি আরও বলেছেন, “ওই শহরের অধিকাংশ মানুষ ছোট ছোট দলে বিভক্ত হয়ে থাকতেন। অধিকাংশ মানুষই অর্ধনগ্ন হয়ে ঘুরতেন। বাস করতেন কুঁড়েঘরে। জঙ্গল কেটে, সাফ করে অনেকেই চাষবাসও করতেন।”
[আরও পড়ুন: হরিয়ানার খালে ভাসছে মডেল দিব্যার দেহ! কলকাতায় গ্রেপ্তার অভিযুক্ত]
জানা গিয়েছে, ইকুয়েডরের প্রাচীন উপত্যকার একটি আগ্নেয়গিরির পিছনে গবেষণা চালাতে গিয়ে কিছু বিশেষ দিকে চোখ আটকে যায় বিজ্ঞানীদের। তাঁরা ‘লিডার’ প্রযুক্তির সাহায্য নেন। ত্রিমাত্রিক ছবিতে পুরনো শহরের অস্তিত্ব ধরা পড়ে। সড়কপথে এবং ছোট ছোট খালের মাধ্যমে অন্য বড় শহরগুলির সঙ্গে এই শহরটি যুক্ত ছিল বলে দাবি বিজ্ঞানীদের। শুধু তাই নয়, সমীক্ষার তথ্য অনুযায়ী এই শহরে মানব অস্তিত্ত্ব ছিল প্রায় হাজার বছর পর্যন্ত। যে এলাকায় সমীক্ষা চলেছে, তার আশেপাশে আরও পাঁচটি জনপদের অস্তিত্ত্ব ছিল বলেই জানাচ্ছেন বিজ্ঞানীরা। সড়ক পরিবহণ ছিল উন্নত মানের, সবচেয়ে দীর্ঘ সড়কপথের দৈর্ঘ্য ছিল অন্তত ২৫ কিলোমিটার।