সুকুমার সরকার, ঢাকা: ফের ভূমধ্যসাগর থেকে উদ্ধার করা হল বাংলাদেশের নাগরিকদের। জানা গিয়েছে, মাল্টা ও ইটালির মধ্যেকার জলসীমা থেকে সোমবার ভোরে ৩৫ জন বাংলাদেশির খোঁজ মেলে। এসওএস মেডিটারেনির মাধ্যমে একটি নৌকায় তল্লাশি চালায় ওশান ভাইকিংয়ের উদ্ধারকারী দল। বিদেশে গেলেই নাকি লাখ লাখ টাকা আয়ের সুযোগ রয়েছে। তাই ভাগ্য বদল করতে প্রতিবছর বাংলাদেশের হাজার হাজার যুবক আমেরিকা, ইউরোপের মতো দেশগুলোতে পাড়ি দেন। জীবনের ঝুঁকি নিয়ে তাঁরা ভূমধ্যসাগরে হয়ে ওইসব দেশে যাওয়ার চেষ্টা করেন। আর তা করতে গিয়েই দুর্ঘটনার কবলে পড়ে প্রাণ হারান অনেকে।
এদিন জাহাজ থেকে উদ্ধার হওয়া ব্যক্তিরা জানান, প্রায় তিন দিন আগে তাঁরা নৌকায় লিবিয়ার বেনগাজি থেকে প্রায় ৬০০ কিলোমিটার দূরে পাড়ি দিয়েছিলেন। তাঁদের গন্তব্য ছিল ইটালির সিসিলি দ্বীপ। এএফপি সূত্রে খবর, ওই বাংলাদেশিরা তিন দিন ধরে সাগরে নৌকায় ভাসছিলেন। ওশান ভাইকিংয়ের উদ্ধারকারী দলের সঙ্গে যোগ দিয়ে তাঁদের উদ্ধার আন্তর্জাতিক রেডক্রস ও রেড ক্রিসেন্ট। সকলকেই জল ও কম্বল দেওয়ার পর ৩৫ জনকে উদ্ধার করার পর নাম রেজিস্টার করা হয়। তার পর তাঁদের একটি জাহাজে রাখা হয়। সেটি এখন ইটালির অ্যাড্রিয়াটিক উপকূলের ওরতোনা বন্দরে যাচ্ছে। সেখানে পৌঁছতে আরও দুই দিনের বেশি সময় লাগবে।
[আরও পড়ুন: ফের সংঘর্ষে উত্তপ্ত বান্দরবান, সেনাবাহিনীর গুলিতে নিহত কুকি-চিন আর্মির ৩ সদস্য]
ইন্টারন্যাশনাল ফেডারেশন অব রেডক্রস অ্যান্ড রেড ক্রিসেন্ট সোসাইটির (আইআরএফসি) অপারেশনস ব্যবস্থাপক সারা মানসিনেলি সংবাদমাধ্যমে জানিয়েছেন, "বাংলাদেশের নাগরিকরা এখান নিরাপদে আছেন। তাঁদের লিবিয়ায় ফিরিয়ে নেওয়া হবে না বলে আশ্বস্ত করা হয়েছে। জাহাজটি এখন ইটালির অ্যাড্রিয়াটিক উপকূলীয় ওরতোনা বন্দরে যাচ্ছে। যাত্রা শুরু হওয়ার কিছুক্ষণের মধ্যেই সকলে ঘুমিয়ে পড়েন।"
উল্লেখ্য, বেশিরভাগ ক্ষেত্রেই নৌকাডুবি হয়ে ভূমধ্যসাগরে প্রাণ হারান বিদেশে জীবিকার খোঁজে যাওয়া মানুষরা। এনিয়ে রাষ্ট্রসংঘের আন্তর্জাতিক অভিবাসন সংস্থার তথ্য অনুসারে, গত জানুয়ারি থেকে ভূমধ্যসাগরে বিভিন্ন দেশের ৬২২ জন মারা গিয়েছেন বা নিখোঁজ হয়েছেন। ওই রুটটিকে সবচেয়ে বিপজ্জনক বলে সংস্থাটি নিশ্চিত করেছে। এসওএস মেডিটারেনি জানিয়েছে, ২০১৯ সাল থেকে তারা ওশান ভাইকিংয়ের মাধ্যমে ভূমধ্যসাগর থেকে প্রায় ১০ হাজার মানুষকে উদ্ধার করা করেছে।