shono
Advertisement

ইচ্ছাশক্তিই সব, ছেলের সঙ্গে উচ্চমাধ্যমিক পরীক্ষায় বসছেন ৩৮ বছরের মা

ভাল ফল করা নিয়ে আশাবাদী লতিকা মণ্ডল।
Posted: 01:38 PM Mar 12, 2023Updated: 01:41 PM Mar 12, 2023

বিপ্লবচন্দ্র দত্ত, কৃষ্ণনগর: ছেলেমেয়েদের পড়ানোর অভ্যাস থেকেই তৈরি হয়েছিল তাঁর নিজের ইচ্ছে। সেই ইচ্ছে পূরণ করতেই এবার ৩৮ বছর বয়সে ছেলের সঙ্গে উচ্চমাধ্যমিক পরীক্ষায় (HS Exam) বসতে চলেছেন মা। কথায় আছে, শিক্ষার কোনও বয়স নেই। এবার সেটাই প্রমাণ দিতে চলেছেন নদিয়ার শান্তিপুর (Santipur) ব্লকের হরিপুর গ্রাম পঞ্চায়েতের নৃসিংহপুরের সর্দারপাড়ার বাসিন্দা লতিকা মণ্ডল। আগামী সপ্তাহ থেকে শুরু হচ্ছে উচ্চমাধ্যমিক পরীক্ষা। তাই চলছে জোরকদমে প্রস্তুতি।

Advertisement

লতিকাদেবীর স্বামী অসীম মণ্ডল ভিনরাজ্যে নির্মাণ শ্রমিকের (Labourer) কাজ করেন। দুই সন্তানের মা লতিকাদেবীর বড় মেয়ে শীলা মণ্ডল শান্তিপুর কলেজের বাংলা তৃতীয় বর্ষের ছাত্রী। কালনা মহারাজা উচ্চবিদ্যালয়ের ছাত্র লতিকাদেবীর ছেলে সৌরভ মণ্ডলের উচ্চমাধ্যমিক পরীক্ষাকেন্দ্র পূর্ব বর্ধমান জেলার কালনা (Kalna) অম্বিকা উচ্চবিদ্যালয়ে। সৌরভের মা লতিকা মণ্ডলের পরীক্ষাকেন্দ্র অবশ্য কাছেই শান্তিপুর হরিপুর উচ্চবিদ্যালয়। বিয়ের আগে মাত্র ষষ্ঠ শ্রেণি পর্যন্ত পড়াশোনা করেছিলেন। মা অসুস্থ থাকার কারণে তার বেশি পড়াশোনা করতে পারেনি তিনি।

[আরও পড়ুন: এবার দূরপাল্লার ট্রেনেও চপ-ঝালমুড়ি, সব মরশুমে রেলসফরে মিলবে বাঙালির প্রিয় স্বাদ]

২০০১ সালে হরিপুর নতুন সর্দারপাড়ার বাসিন্দা অসীম মণ্ডলের সঙ্গে তাঁর বিয়ে হয়ে যায়। তবে দুই সন্তানের মাও হন লতিকাদেবী। ছেলে এবং মেয়েকে নিয়মিত পড়াতে বসাতেন তিনি। নিজের আবার পড়া শুরু করার ইচ্ছে জাগে। মেয়ে উচ্চমাধ্যমিক পাশ করার পর এবং ছেলের মাধ্যমিক দেওয়ার সময় তিনিও শান্তিপুর মিউনিসিপ্যাল উচ্চ বিদ্যালয়ের রবীন্দ্র মুক্ত বিদ্যালয় থেকে ২০১৯-২০ সালে মাধ্যমিক পাস করেন। মনের জোর বেড়ে যায় আরও। এরপর নৃসিংহপুর উচ্চ বিদ্যালয়ে নিয়মিত ছাত্রী হিসাবে ভরতি হন তিনি। আগামী সপ্তাহে ছেলের সঙ্গেই জীবনের বড় দ্বিতীয় পরীক্ষা দেওয়ার প্রস্তুতি শুরু করেন। পরীক্ষায় ভাল ফল করার ব্যাপারে যথেষ্ট আশাবাদী তাঁরা।

[আরও পড়ুন: ‘প্রযোজকের ইনকাম সার্টিফিকেট দেখেন নাকি?’, দুর্নীতিতে টলি-যোগে অভিনেতাদের পাশেই শতাব্দী]

ছেলের ইচ্ছা দেশরক্ষা।  লতিকাদেবী অবশ্য আরও পড়াশোনা চালিয়ে যাওয়াকেই পাখির চোখ করেছেন। তিনি জানিয়েছেন, “ছেলেমেয়েদের পড়াতে পড়াতেই আমার পড়াশোনা করার ইচ্ছা জেগেছিল, এবার উচ্চমাধ্যমিক পরীক্ষা দেওয়ার ইচ্ছা হয়েছে। ছেলের সঙ্গেই পরীক্ষায় বসব। আমার বিশ্বাস, আমি পাস করব।” তবে অসীম মণ্ডলের সামান্য উপার্জনে পরিবারের সংসার খরচের সঙ্গে তিন সদস্যের পড়াশোনার মধ্যে সংসার খরচ জোগাড় করার জন‌্য সাধুবাদ জানিয়েছেন প্রতিবেশীরা। অনেকেই ইচ্ছা প্রকাশ করেছেন, আগামীতে এভাবেই নতুনভাবে পড়াশোনার জীবন শুরু করার জন্য।

Sangbad Pratidin News App

খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ

Advertisement