সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: মোটা বেতনের চাকরির টোপ দিয়ে ভারতীয় যুবকদের পাঠানো হচ্ছিল রাশিয়া-ইউক্রেনের যুদ্ধে। ভুল বুঝিয়ে ভয়ংকর সেই মানব পাচারের তথ্য প্রকাশ্যে আসার পর কড়া হাতে মাঠে নামল সিবিআই (CBI)। এই ঘটনায় অভিযুক্ত সন্দেহে ৪ জনকে গ্রেপ্তার করেছে কেন্দ্রীয় এজেন্সি। এঁদের মধ্যে রয়েছে রাশিয়ার (Russia) প্রতিরক্ষা মন্ত্রকে চুক্তিভিত্তিক অনুবাদকের কাজ করা এক যুবকও।
সিবিআই সূত্রে জানা গিয়েছে, যে ৪ অভিযুক্ত এই মানব পাচারের ঘটনায় গ্রেপ্তার হয়েছেন তাঁদের মধ্যে ২ জন কেরলের তিরুবন্তপুরমের বাসিন্দা অরুণ এবং যসুদাস জুনিয়র। গত সোমবার তাঁদের গ্রেপ্তার করা হয়। পাশাপাশি আগেই গ্রেপ্তার করা হয়েছে আরও ২ জনকে এরা হলেন, মুম্বইয়ের বাসিন্দা অ্যান্থনি মাইকেল অ্যালেনভোগান ও নিজিল জবি বেনসাম। এঁদের মধ্যে নিজিল রাশিয়ার প্রতিরক্ষা মন্ত্রকে চুক্তিভিত্তিক কর্মী। সিবিআইয়ের দাবি, রাশিয়া ও ইউক্রেনের যুদ্ধ পরিস্থিতিতে রাশিয়ায় সেনার চাহিদা মেটাতে ভারতে ব্যবসা ফেঁদেছিল অভিযুক্তরা। মানব পাচার করতে রীতিমতো জাল বেছায় অভিযুক্তরা।
[আরও পড়ুন: টাকা না দেওয়ায় পড়ুয়াকে নগ্ন করে যৌনাঙ্গে ইট বেঁধে নির্যাতন, ভিডিও ভাইরাল]
সোশাল মিডিয়ায় ফেসবুক ও ইউটিউবে মোটা বেতনে বিদেশে চাকরির লোভ দেখিয়ে চালানো হয় প্রচার। জায়গায় জায়গায় এজেন্টও নিয়োগ করে তাঁরা। এর পর কোনও বেকার যুবক চাকরির আগ্রহ প্রকাশ করলে সব রকম ব্যবস্থা করে তাঁকে পাঠিয়ে দেওয়া হত রাশিয়ায়। গন্তব্যে পৌঁছনোর পর কেড়ে নেওয়া হত ওই যুবকদের পাসপোর্ট। ফলে পালানোর কোনও সুযোগ থাকত না। সিবিআইয়ের দাবি, যুদ্ধে এই সব ভারতীয় যুবকদের একেবারে সামনের সারিতে রাখা হত। এই মানব পাচারের ফাঁদে পড়ে যুদ্ধে গিয়ে ইতিমধ্যেই আহত হয়েছে ও মারা গিয়েছেন ভারতের বহু যুবক। সিবিআইয়ের দাবি, এই চক্রের অন্যতম পাণ্ডা হলেন, নিজিল জবি বেনসাম।
[আরও পড়ুন: পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া নিয়ে বাড়ছে আতঙ্ক! বাজার থেকে কোভিশিল্ড তুলে নিচ্ছে অ্যাস্ট্রাজেনেকা]
কয়েক মাস আগে সোশাল মিডিয়ায় প্রকাশ্যে আসে বেশ কিছু ভিডিও। যেখানে রাশিয়ার সেনার পোশাকে থাকা ভারতীয় যুবকরা দাবি করেন, তাঁদের চাকরির নামে রাশিয়া এনে যুদ্ধে পাঠানো হয়েছে। এমন বহু ভারতীয় যুবক এই প্রতারণার শিকার হয়েছেন। প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির তাঁরা আবেদন জানান, সেখান থেকে তাঁদের উদ্ধার করার জন্য। এই ঘটনার পরই নড়ে চড়ে বসে দেশের বিদেশমন্ত্রক। গোটা ঘটনার তদন্তে নামে সিবিআই। এর পরই প্রকাশ্যে এল চাকরির নামে মানব পাচারের চক্র।