সুরজিৎ দেব, ডায়মন্ড হারবার: রাতেই উদ্ধার করা হল দুর্ঘটনাগ্রস্ত ট্রলার এফবি হৈমবতীকে। বৃহস্পতিবার ভোররাতে দুর্ঘটনাগ্রস্ত ট্রলারটি উদ্ধার করে উপকূলে নিয়ে আসে প্রশাসন। উপকূলে নিয়ে আসার পর ট্রলারের খোলের ভিতর থেকে একে একে ৯ জন মৎস্যজীবী মৃতদেহ উদ্ধার হয়। মৃত মৎস্যজীবীদের পরিবারকে সমবেদনা জানিয়েছেন রাজ্যের সুন্দরবন উন্নয়ন মন্ত্রী বঙ্কিম হাজরা। পাশাপাশি মৃত মৎস্যজীবীর পরিবারগুলি দ্রুত যাতে সরকারি সাহায্য পায় সেদিকে বিশেষ নজর দিয়েছেন রাজ্যের সুন্দরবন উন্নয়ন মন্ত্রী। এক মৎস্যজীবী এখনও নিখোঁজ। তাঁর হদিশ পেতে বৃহস্পতিবার সকাল থেকে আবারও তল্লাশি শুরু করেছে পুলিশ ও কোস্ট গার্ড।
বুধবার ভোর পাঁচটার সময় মাছ ধরে ফ্রেজারগঞ্জ মৎস্য বন্দরে ফেরার পথে বকখালির রক্তেশ্বরী চড়ের কাছে প্রচণ্ড এক ঢেউয়ে বারো জন মৎসজীবী-সহ এফবি হৈমবতী নামে ট্রলারটি উলটে যায়। ১২ জন মৎসজীবীর মধ্যে ২জনকে জীবিত অবস্থায় উদ্ধার করা সম্ভব হয়। বাকি ১০ জন মৎসজীবী নিখোঁজ হয়ে যান। সুন্দরবন পুলিশ জেলার পুলিশ ও উপকূলরক্ষী বাহিনী যৌথভাবে নিখোঁজ মৎস্যজীবীদের খোঁজে গভীর সমুদ্রে তল্লাশি অভিযান চালায়। ট্রলারডুবির ঘটনার পর নামখানার দশমাইল থেকে ট্রলারটিকে (Trawler) উদ্ধার করার জন্য রওনা দেয় ১৪টি মৎস্যজীবি ট্রলার। প্রায় ১০ ঘণ্টার প্রচেষ্টায় উদ্ধার করা হয় দুর্ঘটনাগ্রস্ত ট্রলারটিকে। উপকূলে আনার পর ট্রলারের মধ্যে থেকে উদ্ধার হয় মৃতদেহ।
[আরও পড়ুন: শ্বশুরবাড়ির সম্পত্তি হাতানোর পর ফের বিয়ে, প্রতিবাদ করায় এ কী করল যুবক!]
মৃত মৎস্যজীবীরা (Fisherman) প্রত্যেকেই নামখানার হরিপুর, পাতিবুনিয়া, মহারাজগঞ্জ, দেবনিবাস, শিবপুর ও রাধানগরের বাসিন্দা। ইতিমধ্যেই মৃতদেহগুলি শনাক্ত করেছেন পরিবারের সদস্যরা। মৃতদেহগুলি ময়নাতদন্তের জন্য কাকদ্বীপ মহকুমা হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে। ময়নাতদন্তের পর মৃতদেহগুলি পরিবারের হাতে তুলে দেওয়া হবে। পেটের দায়ে ঝুঁকিকে সঙ্গী করে মাঝসমুদ্রে পাড়ি দেন মৎস্যজীবীরা। লক্ষ্য একটাই নুন আনতে পান্তা ফুরনোর সংসারে একটু অন্নের সংস্থান করা। পরিজনদের জন্য ঝুঁকি নিতে গিয়ে মৎস্যজীবীদের প্রাণহানির ঘটনায় শোকে পাথর সকলে। এবার কীভাবে সংসার চলবে, স্বজন হারানোর শোকের পাশাপাশি এই আশঙ্কাও যেন গিলে খাচ্ছে নিহত মৎস্যজীবীদের পরিজনদের।