অরিজিৎ গুপ্ত, হাওড়া: বেলুড়ে বছর পঁচিশের তরুণীর উপর অ্যাসিড হামলার অভিযোগ। বুধবার গভীর রাতে নিজের ঘরে ঘুমোচ্ছিলেন তিনি। তখনই ঘরের ঘুলঘুলি দিয়ে কেউ বা কারা আচমকা অ্যাসিড ছুঁড়ে পালিয়ে যায় বলে অভিযোগ। ঘুমন্ত অবস্থায় আচমকা অ্যাসিড হামলায় তরুণীর মুখ কোনওক্রমে বাঁচলেও গলা থেকে শরীরের নিচে ৬০ শতাংশ পুড়ে গিয়েছে বলে জানা গিয়েছে। পাশে শুয়ে থাকা তরুণীর মায়ের শরীরেও সামান্য অ্যাসিড লেগেছে। তরুণীর পরিবারের অভিযোগের ভিত্তিতে তদন্ত শুরু করেছে বেলুড় থানা। কিন্তু কেন এই হামলা? তা নিয়ে তৈরি হয়েছে ধোঁয়াশা।
বুধবার রাতের এই ঘটনার পর বৃহস্পতিবার সকাল থেকেই বেলুড়ের জয় বিবি রোডে তীব্র আতঙ্ক। তরুণীর মা জানালেন, বুধবার রাত ১টা নাগাদ তাঁরা যখন গভীর ঘুমে তখন আচমকা তাঁর মেয়ে ‘জ্বলে গেলো জ্বলে গেলো’ বলে চিৎকার করে ওঠেন। আচমকা তিনিও অনুভব করেন তাঁর শরীরেও জ্বলছে। গোটা ঘর ধোঁয়ায় ঢেকে গিয়েছে। তাঁদের সঙ্গে শুয়ে থাকা দুই শিশু কাশছে। ধোঁয়ায় ঘরে থাকা অন্যরাও প্রচণ্ড শ্বাসকষ্ট অনুভব করেন। এর পরই তাঁরা তড়িঘড়ি উঠে ঘরের দরজা-জানলা খুলে দেন। তাঁদের চিৎকার চেঁচামেচিতে প্রতিবেশীরা ছুটে আসেন। দেখা যায়, তাঁর এক মেয়ে অর্থাৎ ওই তরুণীর শরীর পুড়ে গিয়েছে। তখনই তাঁরা বুঝতে পারেন তরুণীর উপর অ্যাসিড হামলা হয়েছে। গুরুতর আহত অবস্থায় প্রথমে তরুণীকে উত্তর হাওড়ার টি এল জয়সওয়াল হাসপাতাল ও সেখান থেকে হাওড়া জেলা হাসপাতালে স্থানান্তরিত করা হয়। বৃহস্পতিবার সকালে বাঙুর হাসপাতালে স্থানান্তরিত করা হয়েছে তাঁকে।
[আরও পড়ুন: আর জি করের নির্যাতিতার শরীরে ১৫০ গ্রাম সিমেন! প্রশ্ন করে ‘সুপ্রিম’ তোপে সিবিআই আইনজীবী]
ইতিমধ্যেই ঘটনার তদন্ত শুরু করেছে পুলিশ। বৃহস্পতিবার সকালেও পুলিশ কর্তারা তরুণীর বাড়িতে গিয়ে পরিবারের সদস্য ও তাঁদের প্রতিবেশীদের সঙ্গে কথা বলেন। একই সঙ্গে ঘটনাস্থল থেকে একটি পাত্র উদ্ধার করে। ওই তরুণীর বাড়ির সামনে পুলিশ মোতায়েনও করা হয়েছে। হাওড়া সিটি পুলিশের ডিসি নর্থ বিশপ সরকার বলেন, ‘‘বাড়ির সামনে থেকে একটি পাত্র উদ্ধার করা হয়েছে। তরুণীর পরিবারের দাবি, ওই পাত্র থেকেই অ্যাসিড ছোঁড়া হয়েছে। আমরা পাত্রটি ফরেনসিকে পাঠিয়ে তদন্ত শুরু করেছি। পরিবারের অভিযোগের ভিত্তিতে ঘটনার তদন্ত শুরু হয়েছে।’’