সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: দেশে বেকারত্ব কমাতে ‘আত্মনির্ভর ভারত রোজগার যোজনা’ (Aatmanirbhar Bharat Rozgar Yojana) নামের নতুন প্রকল্প ঘোষণা করলেন অর্থমন্ত্রী নির্মলা সীতারমণ (Nirmala Sitharaman)। যাতে বলা হয়েছে ২০২০ সালের অক্টোবরের পর যে সমস্ত সংস্থা নতুন কর্মী নিয়োগ করবে বা পুরনো যেসব কর্মী EPFO সদস্য ছিলেন না, তাঁদের EPFO’র অধীনে আনবে, সেই সব সংস্থা বিশেষ কিছু সুবিধা পাবে। যে সমস্ত সংস্থায় ১ হাজারের কম কর্মী থাকবে, সেই সংস্থায় নতুন কর্মীদের EPFO’র ২৪ শতাংশ খরচই কেন্দ্র বহন করবে। অর্থাৎ ইপিএফও বাবদ সংস্থাকে এক টাকাও দিতে হবে না। আর যে সমস্ত সংস্থায় ১ হাজারের বেশি কর্মী, সেই সব সংস্থার শুধুমাত্র কর্মীদের ভাগের ১২ শতাংশ অর্থ ভারত সরকার দেবে। অর্থাৎ ইপিএফও বাবদ সংস্থাকে শুধু সংস্থার অংশের টাকাই দিতে হবে, কর্মীর ভাগের টাকা দিতে হবে না। এই সুবিধা মিলবে আগামী ২ বছর পর্যন্ত। দেশের প্রায় ৯৫ শতাংশ সংস্থাই প্রথম অংশে (এক হাজারের কম কর্মী) পড়বে। কেন্দ্রের দাবি, এর ফলে বেসরকারি সংস্থাগুলি আরও বেশি মানুষকে রোজগার দেওয়ার উৎসাহ পাবে।
এছাড়াও অর্থনীতিতে গতি আনতে এবং রোজগার বাড়াতে ঘুরপথে একাধিক পদক্ষেপ করছে অর্থমন্ত্রক। নির্মলা জানিয়েছেন, প্রধানমন্ত্রী আবাস যোজনার আওতায় ১৮ লক্ষ বাড়ি তৈরির কাজ সম্পূর্ণ করার জন্য অতিরিক্ত অর্থ বরাদ্দ করবে কেন্দ্র। যার ফলে কমপক্ষে ৭৮ লক্ষ চাকরির সুযোগ তৈরি হবে। কাঁচামালের চাহিদা বাড়বে। এর জন্য অতিরিক্ত ১৮ হাজার কোটি টাকা বরাদ্দ করা হয়েছে।পরিকাঠামো ও আবাসন ক্ষেত্রে ঋণ নিলে পারফরমিং ব্যাংক গ্যারান্টি ১০ শতাংশ থেকে কমিয়ে ৩ শতাংশ করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে কেন্দ্র। পাশাপাশি, যারা ২ কোটি টাকা পর্যন্ত দামের নতুন বাড়ি কিনবেন, তাঁদের আয়করেও বিশেষ ছাড় দেওয়া হবে। সব মিলিয়ে এই দফায় ২ লক্ষ ৬৫ হাজার কোটি টাকার প্যাকেজ ঘোষণা করলেন অর্থমন্ত্রী।
এর পাশাপাশি কৃষকদের জন্যও বড় ঘোষণা করেছেন অর্থমন্ত্রী। আগামী অর্থবর্ষে ৬৫ হাজার কোটি টাকা সার এবং কৃষি উপকরণে ভরতুকি হিসেবে দেওয়া হবে। ১৪ কোটি কৃষক এই প্রকল্পের সুবিধা পাবেন। গ্রামীণ অর্থনীতির উন্নয়নের জন্য প্রধানমন্ত্রী গরিব কল্যাণ রোজগার যোজনার আওতায় আরও ১০ হাজার কোটি টাকা বরাদ্দ হল। যা কিনা মনরেগা অর্থাৎ ১০০ দিনের কাজের মাধ্যমে খরচ করা হবে। এর ফলে মনরেগার বাজেট বেড়ে হল ১ লক্ষ ১১ হাজার কোটি। যা গ্রামীণ অর্থনীতিকে গতি দেবে বলে দাবি নির্মলার।
[আরও পড়ুন: ইতিহাসে প্রথমবার মন্দা ভারতীয় অর্থনীতিতে! ফাঁস রিজার্ভ ব্যাংকের চাঞ্চল্যকর রিপোর্ট]
অর্থমন্ত্রী নির্মলা সীতারমণ এদিন দাবি করেছেন কেন্দ্রের পূর্বঘোষিত আত্মনির্ভর ভারত আর্থিক প্যাকেজের বেশিরভাগটাই সফল হয়েছে। ‘এক দেশ, এক রেশন কার্ড’ প্রকল্পের আওতায় ৬৮ কোটি ৬ লক্ষ মানুষ এক রাজ্য থেকে অন্য রাজ্যে গিয়ে রেশন নিতে পারবেন। প্রবাসী শ্রমিকদের কথা ভেবে এই প্রকল্প শুরু করা হয়েছিল। এই প্রকল্পে তাঁরা সুবিধা পাবেন। পাশাপাশি শ্রমিকদের জন্য একটি ‘ওয়ার্কিং পোর্টাল’ তৈরি করার কাজ করছে কেন্দ্র। লকডাউনের শুরুতে আড়াই কোটি কৃষককে নতুন কিষাণ কার্ড দেওয়ার লক্ষ্য স্থির করা হয়েছিল। মোট ১ কোটি ৫৭ লক্ষ ৪৪ হাজার কৃষক ইতিমধ্যেই কিষাণ ক্রেডিট কার্ড পেয়েছেন। এবং এখনও পর্যন্ত ১ লক্ষ ৪৩ হাজার ২৬২ কোটি টাকা ঋণ হিসেবে দেওয়া হয়েছে।