shono
Advertisement
Santiniketan

অবনীন্দ্রনাথের বাড়ি ভেঙে তৈরি হবে বহুতল! ভাঙা শুরু হতেই তীব্র বিতর্ক শান্তিনিকেতনে

জীবনের বেশ কিছুদিন এই বাড়িতে কাটিয়েছিলেন অবনীন্দ্রনাথ।
Published By: Suchinta Pal ChowdhuryPosted: 09:24 PM Feb 18, 2025Updated: 09:24 PM Feb 18, 2025

দেব গোস্বামী, বোলপুর: শান্তিনিকেতনে অবনীন্দ্রনাথ ঠাকুরের ঐতিহ্যময় বাড়ি ভেঙে ফেলার অভিযোগ। স্বাভাবিকভাবেই এই ঘটনায় প্রবল ক্ষোভ, আক্ষেপ তৈরি হয়েছে স্থানীয় বাসিন্দা থেকে শুরু বিশ্বভারতীর প্রাক্তনী ও প্রবীণ আশ্রমিকদের মধ্যে। পূর্বপল্লীর শেষপ্রান্তে অবনপল্লীতে কিংবদন্তি শিল্পীর এই 'আবাস' নামক বাড়িটি ভেঙে গুঁড়িয়ে দেওয়ার কাজ চলছে। সেখানে তৈরি হবে বহুতল। 

Advertisement

অবনীন্দ্রনাথের নামানুসারেই এই এলাকার নাম 'অবনপল্লী'৷ বাড়িটি তৈরি করেছিলেন অবনীন্দ্রনাথ ঠাকুরের ছেলে অলকেন্দ্রনাথ ঠাকুর। জীবনের বেশ কিছুদিন এই বাড়িতে কাটিয়েছিলেন অবনীন্দ্রনাথ। পরে তাঁর নাতি অমিতেন্দ্রনাথ ঠাকুর থাকতেন এখানে। বর্তমানে ঐতিহ্যবাহী স্মৃতিবিজড়িত এই বাড়ি ভাঙার কাজ চলছে জোর কদমে। সামনেই রয়েছে সদ্য প্রয়াত রাষ্ট্রপতি পুরষ্কার প্রাপ্ত বৌদ্ধ পন্ডিত সুনিতি কুমার পাঠকের বাড়ি। শান্তিনিকেতনে বৌদ্ধ, পালি ভাষার বিভাগ গঠনে যাঁর ভূমিকা ছিল অনন্য। জানা গিয়েছে, এখানে বহুতল নির্মাণ হবে। আর এতেই বিতর্ক শুরু হয়েছে শান্তিনিকেতন জুড়ে। প্রশ্ন উঠছে, কীভাবে অবনীন্দ্রনাথের বাড়ি ভেঙে ফেলার অনুমতি মেলা সম্ভব? শুধু তাই নয়, কেটে ফেলা হচ্ছে বড় বড় গাছও।

প্রসঙ্গত, বেশ কয়েক বছর ধরেই বোলপুর-শান্তিনিকেতনে জমি মাফিয়াদের দৌরাত্ম্যে বেড়েছে। যা নতুন কিছু নয়। কখনও ঐতিহ্যবাহী কোপাই নদীর পাড় বরাবর নির্মাণ চলছে। কখনও আদিবাসীদের জমি দখল করে গড়ে উঠছে বিলাশবহুল আবাসন, রিসোর্ট, রেস্তরাঁ, বহুতল, হোটেল, লজ প্রভৃতি। এই অভিযোগ ভুঁড়ি ভুঁড়ি। আর এই অভিযোগ পেয়েও নির্বিকার বোলপুর পুরসভা, শ্রীনিকেতন-শান্তিনিকেতন উন্নয়ন পর্ষদ-সহ পুলিশ প্রশাসনও। বিশ্বভারতীর পাঠভবনের প্রাক্তন উপাধ্যক্ষ তথা ঐতিহ্যশালী বাড়ির প্রতিবেশি সুব্রত সেন মজুমদার আক্ষেপের সুরে বলেন, "স্মৃতিবিজড়িত এই বাড়ি আমি তাঁর পরিবারের সদস্যদের বসবাস করতে দেখেছি। এই বাড়িও ভেঙে ফেলা হচ্ছে। এটা অত্যন্ত বেদনাদায়ক।"

ঠাকুর পরিবারের সদস্য সুদৃপ্ত ঠাকুর বলেন, "শান্তিনিকেতনের বহু স্মৃতিই এই ভাবে মুছে ফেলা হচ্ছে। জমি ব্যবসায়ীদের কাছে জমির দাম অনেক বেশি অবনীন্দ্রনাথের বাড়ির চেয়ে। অবনীন্দ্রনাথের স্মৃতিকে জলাঞ্জলি দেওয়া হচ্ছে সেটা মর্মান্তিক৷" এনিয়ে সোশাল মিডিয়ায় সোচ্চার হন প্রবীণ আশ্রমিক বতীন্দ্র মোহন সেন। অন্যদিকে, সঙ্গীতভবনের অধ্যাপক শুভায়ু সেন মজুমদার বলেন, "খুবই দুঃখজনক ও কষ্টের। অবনীন্দ্রনাথ ঠাকুরের মত একজন কিংবদন্তি শিল্পীর যে বাসস্থান, সেটাও আমরা বজায় রাখতে পারলাম না। ভেঙে ফেলা হচ্ছে। একজন শিল্পী হিসাবে আমার কাছে এটা অত্যন্ত বেদনাদায়ক। ভীষণ মর্মাহত। তাঁর বাড়ি ভেঙে বহুতল নির্মাণ হবে। আর সেখানে অন্য মানুষ থাকবেন এটা ভাবা যায় না।"

কলকাতার একটি বেসরকারি সংস্থা বহুতল নির্মাণের জন্যই জায়গাটি ক্রয় করেছেন বলেই জানা যায়। যদিও কারা এই ঐতিহ্যবাহী জায়গা ও বাড়িটি ক্রয় করেছেন তা এখনও স্পষ্ট হয়নি। বোলপুর পুরসভার পুরপ্রধান পর্না ঘোষ জানান,"এখনও পর্যন্ত এ বিষয়ে কোন লিখিত অভিযোগ আসেনি। বহুতল নির্মাণের জন্যও কোনও অনুমতিই দেওয়া হয়নি। তবে আমরা চাই, শান্তিনিকেতনে স্মৃতি বিজড়িত জায়গা ও বাড়িগুলোর ঐতিহ্য বজায় থাকুক। ভবিষ্যতে অবশ্যই খতিয়ে দেখে ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।"

Sangbad Pratidin News App

খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ

হাইলাইটস

Highlights Heading
  • শান্তিনিকেতনে অবনীন্দ্রনাথ ঠাকুরের ঐতিহ্যময় বাড়ি ভেঙে ফেলার অভিযোগ।
  • স্বাভাবিকভাবেই এই ঘটনায় প্রবল ক্ষোভ, আক্ষেপ তৈরি হয়েছে স্থানীয় বাসিন্দা থেকে শুরু বিশ্বভারতীর প্রাক্তনী ও প্রবীণ আশ্রমিকদের মধ্যে।
  • পূর্বপল্লীর শেষপ্রান্তে অবনপল্লীতে কিংবদন্তি শিল্পীর এই 'আবাস' নামক বাড়িটি ভেঙে গুঁড়িয়ে দেওয়ার কাজ চলছে। সেখানে তৈরি হবে বহুতল। 
Advertisement