সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: সমস্ত পিছুটানকে বিদায়। ইহলোক ছেড়ে পরলোকে পাড়ি জমালেন বাম রাজনীতির অন্যতম জনপ্রিয় নেতা তথা ভাঙড়ের প্রাক্তন বিধায়ক ডাঃ আব্দুর রাজ্জাক মোল্লা। বার্ধক্যজনিত অসুস্থতাতেই বুধবার জীবনযুদ্ধে হার মানলেন তিনি। বৃহস্পতিবারই শেষকৃত্য সম্পন্ন হয় তাঁর। কিন্তু অনেকেই ভেবে বসেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের মন্ত্রিসভার অন্যতম সদস্য আব্দুর রেজ্জাক মোল্লা শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করেছেন। রীতিমতো হইচই পড়ে যায়। বৃহস্পতিবার সোশ্যাল মিডিয়ায় নিজের সুস্থতার কথা জানালেন তিনি।
বৃহস্পতিবার সকালে সোশ্যাল মিডিয়ায় পোস্ট করে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের মন্ত্রিসভার অন্যতম সদস্য আব্দুর রেজ্জাক মোল্লা জানান, “আমি ভাল আছি। ৭৭ বছর বয়সে যেমন থাকা যায়, তেমনই আছি। শুনলাম আমার সম্পর্কে মৃত্যুর খবর রটেছে। এ বিষয়ে আমার কিছুই বলার নেই।” বর্তমানে নিউটাউনে ফ্ল্যাটে রয়েছেন তিনি। তবে শুক্রবার ক্যানিংয়ে গ্রামের বাড়িতে যাওয়ার কথা রয়েছে তাঁর।
যিনি মারা গিয়েছেন তিনি বাম রাজনীতির অন্যতম জনপ্রিয় নেতা তথা ভাঙড়ের প্রাক্তন বিধায়ক ডাঃ আব্দুর রাজ্জাক মোল্লা। তখন সবে তাঁর ছাত্রাবস্থা। কলেজে পড়ছেন। এমন সময়েই মাথায় ঢুকে গেল বামপন্থী ছাত্র আন্দোলন, বিপ্লব। ব্যস! সেই শুরু। কলেজে পড়াকালীন রাজনীতিতে মনোনিবেশ করলেন তিনি। যত সময় গড়িয়েছে, ততই যেন রাজনীতির প্রতি টান আরও জোরাল হয়েছে তাঁর। ১৯৮৭ সালে ভাঙড় থেকে ভোটে লড়েন তিনি। বিধায়ক হিসাবে নির্বাচিত হন আব্দুর রাজ্জাক মোল্লা। তবে দলের অনুশাসন না মানার অভিযোগে তাঁকে তিন বছরের মধ্যেই বহিষ্কার করা হয়। তবে তাতেও দলের দিক থেকে কোনওদিন মুখ ফেরাননি তিনি। তবে ১৯৯১ সালে বিধানসভা নির্বাচনে তাঁর জায়গায় দলীয় টিকিটে জয়ী হন বাদল জমাদার। তারপর তিনি দল থেকে নিজেকে সরিয়ে নেন। হোমিওপ্যাথি চিকিৎসক হিসেবে কাজ শুরু করেন। এলাকায় একজন হোমিওপ্যাথি চিকিৎসক হিসাবে বেশ খ্যাতিও লাভ করেন তিনি। শ্যামনগর অবৈতনিক প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষকও ছিলেন।
[আরও পড়ুন: নাবালিকাকে ধর্ষণের অভিযোগ বিজেপি কর্মীর বিরুদ্ধে, শাসক-বিরোধী তরজায় উত্তপ্ত কালনা]
বেশ কয়েক মাস ধরে নানারকম শারীরিক অসুস্থতায় ভুগছিলেন তিনি। বার্ধক্যজনিত সমস্যায় কার্যত শয্যাশায়ীও হয়ে যান। বুধবার সকলকে কাঁদিয়ে জীবনযুদ্ধে হার মানেন তিনি। তাঁর মৃত্যুর খবর ছড়িয়ে পড়ামাত্রই শ্যামনগরের বাড়িতে উপচে পড়া মানুষের ভিড়। তুষার ঘোষ, রশিদ গাজী-সহ অন্যান্য বাম নেতারা শেষ শ্রদ্ধা জানান তাঁকে। বৃহস্পতিবারই শেষকৃত্য।