শ্রীকান্ত পাত্র, ঘাটাল: অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ের গাড়ির সামনে ঝাঁপ দিয়ে কনভয় আটকানোর চেষ্টা। প্রকাশ্যেই দলের নেতার বিরুদ্ধে বিষোদগার। একের পর এক দলবিরোধী কাজের জেরে ঘটনাস্থলেই ঘাটালের এক তৃণমূল নেতাকে সাসপেন্ড করার নির্দেশল দিলেন দলের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক। তাঁর নির্দেশে ঘাটাল ব্লক তৃণমূল সভাপতি দিলীপ মাজি অভিযুক্ত নেতাকে সাসপেন্ড করেন। তাঁর আরও দুই সহযোগীকে শোকজ করা হচ্ছেও বলে দলীয় সুত্রে খবর।
দলীয় সুত্রে জানা গিয়েছে, রবিবার রাত সাড়ে ন’টা নাগাদ যখন অভিষেক বীরসিংহ গ্রামে বিদ্যাসাগরকে শ্রদ্ধা জানিয়ে ঘাটালে ফিরছিলেন তখন অভিযুক্ত তিন তৃণমূল কর্মী ঘাটাল চন্দ্রকোণা রাজ্য সড়কের জলসরায় অভিষেকের কনভায় আটকায়। অভিযুক্ত তিন তৃণমূল নেতা হলেন শেখ সোলেমান আলি, সেখ আবদুল রশিদ ও দীপঙ্কর ঘোষ। ঘাটালের মুলগ্রাম বুথের সভাপতি সোলেমান আলি, বীরসিংহ অঞ্চল তৃণমূলের সম্পাদক শেখ আবদুল রশিদ ও ঘাটাল ব্লক তৃণমূলের আইটি সেলের কর্মী দীপঙ্কর ঘোষ । শেখ শোলেমেন আলির নেতৃত্বে এই তিনজন তৃণমূল নেতা হঠাৎই অভিষেকের গাড়ির সামনে ঝাঁপিয়ে পড়ে রাস্তায় শুয়ে পড়েন। চালক কোনওমতে গাড়ি সামলান।
[আরও পড়ুন: ডাহা ফেল সাগরদিঘি মডেল! বায়রনকে দলে টেনে কী বার্তা দিল তৃণমূল?]
গাড়ি থেমে যেতেই ঘাটাল ব্লক তৃণমূল সভাপতি দিলীপ মাজিকে গালাগাল দিতে শুরু করেন সোলেমান। তিনি বলেন, “দিলীপ মাজির জন্যই ঘাটালে তৃণমূল ডুববে। ওকে আগে সরান। ঘাটলের প্রাক্তন বিধায়ক শংকর দোলইকে দায়িত্ব দিন। ঘাটালের বিষয়টি আপনি নিজে দেখুন।” গাড়ির কাঁচ নামিয়ে তাঁদের ডাকেন অভিষেক। তাঁদের নাম, পরিচয় জানতে চান। অভিষেক বলেন, “প্রকৃত তৃণমূল কর্মী এইভাবে গাড়ি আটকে ক্ষোভ প্রকাশ করে না। এ সব দলে চলবে না। আমি দলের সাধারণ সম্পাদক হিসাবে তোমাকে সাসপেন্ড করছি।” পুলিশ অভিষেকের নির্দেশে তাঁদের সরিয়ে দেয়। এরপর অভিষেকের পক্ষ থেকে ঘাটাল ব্লক তৃণমূল সভাপতি দিলীপ মাজির সঙ্গে যোগযোগ করা হয়। দিলীপবাবুকে অভিষেকের নির্দেশ জানিয়ে দেওয়া হয় । রাতেই এই তৃণমূল নেতাকে সাসপেন্ডের চিঠি ধরিয়ে দেওয়া হয়। সেই চিঠির প্রতিলিপিও অভিষেককে পাঠিয়ে দেন দিলীপবাবু।
দিলীপবাবু বলেন, “দলের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ের কনভয় আটকানোর ঘটনা দলবিরোধী কাজেরই শামিল। কনভয়ের গাড়ি আটকানো অভিষেকবাবু মেনে নিতে পারেননি । তাঁরই নির্দেশে আমি মুলগ্রাম বুথ সভাপতি সেখ সোলেমানকে সাসপেন্ড করেছি। বাকি দুজনকেও শোকজ করা হচ্ছে ।” দলীয় সুত্রে জানা গিয়েছে , অভিযুক্ত তিন তৃণমূল কর্মী ঘাটালের প্রাক্তন তৃণমূল বিধায়ক শংকর দোলইয়ের ঘনিষ্ঠ সঙ্গী ও তাঁর অনুগামী। মনে করা হচ্ছে তাঁরই নির্দেশে অভিযুক্তরা অভিষেকের কনভয় আটকে দিলীপ মাজির বিরুদ্ধে নালিশ জানাতে চেয়েছিলেন।