নন্দিতা রায়, নয়াদিল্লি: বিজেপির (BJP) বিরুদ্ধে বিরোধীদের একত্রিত করার কাজ করতে পারেন একমাত্র বাংলার মুখ্যমন্ত্রী তথা তৃণমূল কংগ্রেস (TMC) নেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ই (Mamata Banerjee)। ভোট বিভাজন রুখতে বিজেপি বিরোধীদের একজোট হওয়া সময়ের দাবি। এই ভাষাতেই মমতাকে অবিজেপি জোটের স্তম্ভ বলে বার্তা দিয়েছেন কংগ্রেসের (Congress) প্রবীণ নেতা ও রাজ্যসভার সাংসদ অভিষেক মনু সিংভি (Abhishek Manu Singhvi)।
সদ্য মঙ্গলবারই মমতা দেশের সমস্ত অবিজেপি রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রীকে চিঠি লিখে বৈঠকে বসার আহ্বান জানিয়েছেন। তারপরেই তাঁর আহ্বানে সাড়া দিয়ে এনসিপি (NCP) প্রধান শরদ পাওয়ার বিরোধীদের একজোট হওয়ার পক্ষে সওয়াল করেছিলেন। বুধবার সিংভিও সেই একই সুরে গলা মিলিয়েছেন এবং মমতাই যে বিরোধী শক্তিকে একত্রিত করতে পারেন, সে কথাও তিনি সরাসরি বলে দিলেন।
[আরও পড়ুন: বেঙ্গালুরুতে গণধর্ষণের শিকার বাংলার তরুণী, গ্রেপ্তার জাতীয় স্তরের ৪ সাঁতারু]
সাম্প্রতিক জাতীয় রাজনৈতিক পরিস্থিতিতে সিংভির মতো কংগ্রেস নেতার এই মন্তব্য বিশেষ তাৎপর্যপূর্ণ হয়ে উঠল। বুধবার সকালে সিংভির টুইটে স্পষ্ট বলা হয়েছে, “অ-বিজেপি দলগুলির জোট সময়ের দাবি। মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ই এই জোটের স্তম্ভ। ২০২৪-এ ভোট বিভাজন রুখতে রাজ্য ধরে ধরে সবাইকে জোট বাঁধতে হবে। বিজেপি যখন সবচেয়ে বড় জয় পেয়েছিল, তখনও ৩৯ শতাংশের বেশি ভোট পায়নি। মমতা এবং বাকি সবাইকে বিজেপি বিরোধী পরিসরটাকে ঐক্যবদ্ধ করতে সবরকম চেষ্টা চালাতে হবে।”
আগামী লোকসভা নির্বাচনের কথা বিবেচনা করে মমতাকে সামনে রেখে বিজেপি বিরোধী ঐক্যে শান দেওয়ার কথাই তুলে ধরেছেন সিংভি। টুইটের মাধ্যমে সিংভি মমতার পাশে দাঁড়ানোর পাশাপাশি নিজের দলকেও বার্তা দিয়েছেন বলেই মনে করছে রাজনৈতিক মহল। ২০২৪ সালে বিজেপিকে হারাতে গেলে কংগ্রেসকে যে নিজেদের ‘ইগো’ ছেড়ে মমতার দেখানো পথেই হাঁটতে হবে, ঘুরিয়ে সেই কথাই বলেছেন কংগ্রেসের বিক্ষুব্ধ জি-২৩ গোষ্ঠীর এই নেতা।
[আরও পড়ুন: জয়শংকরকে ফোন মার্কিন বিদেশ সচিব ব্লিঙ্কেনের, ইউক্রেনে সিঁদুরে মেঘ দেখছে আমেরিকা!]
রাজ্যে রাজ্যে বিজেপি বিরোধী ভোটের বিভাজন রুখতে ‘যে যেখানে শক্তিশালী সে সেখানে লড়বে’ বলে দীর্ঘদিন ধরেই মমতা যে বার্তা দিয়ে আসছেন সেই বক্তব্যের হয়েই সওয়াল করেছেন সিংভি। কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থাগুলিকে ‘রাজনৈতিক প্রতিহংসা’ চরিতার্থ করার অস্ত্র হিসাবে বিজেপি ব্যবহার করছে বলেও মমতার চিঠিতে উল্লেখ করা হয়েছে। সেই বিষয়টির সমর্থনে এগিয়ে এসেছেন পাওয়ারও। মমতার সঙ্গে একমত হয়ে তিনি বলেছেন, “বর্তমানে যারা ক্ষমতায় রয়েছে তারা নিজেদের মতের সঙ্গে অমিল হলেই তাকে শক্র বলেই মনে করে, এই বিশ্বাস নিয়েই তারা চলে। রাজনৈতিক প্রতিপক্ষকে বিপদে ফেলার জন্য, রাজনৈতিক হিংসা চরিতার্থ করতে তারা ইডি, সিবিআইয়ের আশ্রয় নেয়।”
অবিজেপি বিরোধীদের একজোট করার লক্ষ্যে মমতার উদ্যোগকে স্বাগত জানিয়েছেন পাওয়ারও। মমতা যে অবিজেপি রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রীদের বৈঠকে বসার কথা বলেছেন, সেই বৈঠক মুম্বইয়ে হতে পারে বলে তৃণমূলকে ইতিমধ্যে বার্তা দিয়েছেন শিবসেনা মুখপাত্র ও সাংসদ সঞ্জয় রাউতও।