নব্যেন্দু হাজরা, বালেশ্বর: মালগাড়ি, করমণ্ডল এক্সপ্রেস (Coromandel Express), যশবন্তপুর হামসফর এক্সপ্রেস। একই জায়গায় তিনটি ট্রেন। দুর্ঘটনায় ছিন্নভিন্ন দুটি ট্রেন। কিন্তু এত বড় দুর্ঘটনা ঘটল কী করে? গত দু’দিন ধরে এই প্রশ্নের স্পষ্ট জবাব কেউ দিতে পারেননি। অবশেষে দুর্ঘটনার কারণ নিয়ে মুখ খুললেন রেলমন্ত্রী অশ্বিনী বৈষ্ণব (Ashwini Vaisnaw)। জানিয়ে দিলেন, দুর্ঘটনার আসল কারণ জানা গিয়েছে। কারা এই দুর্ঘটনার জন্য দোষী, সেটাও শনাক্ত করা গিয়েছে।
প্রাথমিকভাবে রেলের তরফে দাবি করা হয়, শালিমার-চেন্নাই করমণ্ডল এক্সপ্রেসের সঙ্গে যশবন্তপুর এক্সপ্রেসের পাশাপাশি ধাক্কা লেগেছে। তাতেই করমণ্ডল এক্সপ্রেসের কিছু কামরা লাইনচ্যুত হয়ে পাশের লুপ লাইনে দাঁড়ানো মালগাড়ির দিকে হেলে পড়ে। বস্তুত ইন্টারলকিং বা পয়েন্টারের গোলযোগের কথা শনিবার অবধি স্বীকার করেনি রেল। কিন্তু রবিবার সকালে রেলমন্ত্রী জানান,”রেলওয়ে সুরক্ষা কমিশন (Railway Safty Commission) এ নিয়ে তদন্ত করছে। তদন্ত রিপোর্ট আসুক। কিন্তু আমরা দুর্ঘটনার কারণ আর কারা এর জন্য দায়ী জানতে পেরেছি।” রেলমন্ত্রী বলেন,”এটা ঘটেছে ইলেকট্রনিক ইন্টারলকিংয়ের পরিবর্তনের জন্য। আপাতত লাইন সারাইটাই আমাদের ফোকাস।”
[আরও পড়ুন: মেট্রো লাইনে ঝাঁপ দিয়ে আত্মহত্যার চেষ্টা যুগলের! দক্ষিণেশ্বর ডাউন লাইনে ব্যাহত পরিষেবা]
রেলমন্ত্রীর ব্যাখ্যার পর রেলের বিরুদ্ধে বড়সড় গোলযোগের যে অভিযোগ উঠেছিল, সেটাই আরও জোরাল হচ্ছে। সম্ভবত চেন্নাইগামী করমণ্ডল এক্সপ্রেস যে লাইন দিয়ে যাচ্ছিল, ঠিক তার পাশেই লুপ লাইনে দাঁড়িয়ে ছিল মালগাড়ি। কোনওভাবে পয়েন্টার বা সিগন্যালিংয়ের গণ্ডগোলের ফলে লুপ লাইনে চলে যায় করমণ্ডল এক্সপ্রেস। পিছন থেকে সজোরে ধাক্কা মারে মালগাড়িটিকে। মালগাড়ির ওয়াগনের উপরে উঠে আসে করমণ্ডলের ইঞ্জিন। চেন্নাইগামী করমণ্ডল এক্সপ্রেসকে সিগন্যাল দেওয়া হয়েছিল মেইন লাইনের দিকে, আর ইন্টারলকিংয়ের পয়েন্টার ছিল লুপ লাইনের দিকে। সেটা রেলমন্ত্রীর ব্যাখ্যায় স্পষ্ট।
[আরও পড়ুন: দুর্ঘটনায় ক্ষতিগ্রস্ত খড়গপুর-ভদ্রক লাইন, ট্রেন চলাচল স্বাভাবিক হবে কবে?]
প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি (Narendra Modi) শনিবারই জানিয়ে দিয়েছেন, দোষীদের কাউকে ছাড় দেওয়া হবে না। এদিকে রবিবার রেলমন্ত্রী জানিয়েছেন, এই ঘটনার জন্য কারা দায়ী সেটা শনাক্ত করা গিয়েছে। তবে রেল বোর্ডের তদন্ত রিপোর্টের জন্য অপেক্ষা করার বার্তা দিয়েছেন তিনি। মনে করা হচ্ছে, খুব দ্রুত এই ঘটনার নেপথ্যের দোষীরা শাস্তি পাবেন।