জ্যোতি চক্রবর্তী, বনগাঁ: মরণাপন্ন রোগীর প্রাণ বাঁচানোর জন্য আর টেনশন নিয়ে দূরের হাসপাতালে ছুটতে হবে না। এবার বসিরহাট জেলা হাসপাতালেই সেই পরিষেবা চালু হয়ে যাচ্ছে। বসিরহাটবাসী যাতে নিজের এলাকাতেই আরও উন্নত চিকিৎসা পরিষেবা পান, তা মাথায় রেখে তাঁদের পাশে দাঁড়ালেন অভিনেত্রী-সাংসদ নুসরত জাহান (Nusrat Jahan)। সাংসদ তহবিলের টাকায় বসিরহাট জেলা হাসপাতালের সুপারস্পেশ্যালিটি বিল্ডিংয়ে আইসিইউ (ICU) ওয়ার্ড খোলার ব্যবস্থা করলেন তিনি। কিনে দিলেন অতি প্রয়োজনীয়, ব্যয়বহুল চিকিৎসা সরঞ্জাম ভেন্টিলেটরও। বৃহস্পতিবার বসিরহাটে তার উদ্বোধনও করলেন তিনি নিজে।
বসিরহাট জেলা হাসপাতালে সুপারস্পেশ্যালিটি বিল্ডিং চালু হলেও এতদিন সেখানে ছিল না কোনও আইসিইউ ওয়ার্ড। ফলে এই মহকুমার অন্তর্গত সুন্দরবনের প্রত্যন্ত অঞ্চলের মরণাপন্ন রোগীদের ঝুঁকি নিয়ে কলকাতায় ছুটতে হতো। নয়তো কাছের বেসরকারি নার্সিংহোমে প্রচুর খরচের বিনিময়ে চিকিৎসা করাতে হতো। সেই খরচ বহন করার সাধ্য ছিল না সকলের। নিজের সংসদীয় এলাকার এসব সমস্যার কথা কানে পৌঁছেছিল সাংসদ নুসরতের। তখন থেকেই তিনি সমস্যা সমাধানে উদ্যোগী হন। শেষপর্যন্ত নতুন বছরে জনপ্রতিনিধি হিসেবে নিজের দায়িত্ব পালন করলেন তিনি। ভেন্টিলেটর (Ventilator) কিনে, আইসিইউ চালু করে স্বাস্থ্য পরিষেবা নিয়ে বসিরহাটবাসীকে আশ্বস্ত করলেন টলিউড অভিনেত্রী।
[আরও পড়ুন: ‘অনেকেই চায় না আমি আপনাদের কাছে যাই’, এবার বেসুরো তৃণমূল সাংসদ শতাব্দী রায়]
এদিন বিকেল ৩টে নাগাদ নুসরতের হাত ধরেই উদ্বোধন হয়ে গেল আইসিইউ’র। সাংসদ নুসরত জাহান ছাড়াও ছিলেন স্বাস্থ্য জেলা আধিকারিক দেবব্রত মুখোপাধ্যায়, হাসপাতাল সুপার কালিপদ পোদ্দার-সহ জেলা অন্যান্য স্বাস্থ্য আধিকারিকরা। ছিলেন বসিরহাটে দক্ষিণের বিধায়ক দীপেন্দু বিশ্বাসও। স্বাস্থ্য পরিষেবার উন্নয়নে নতুন পদক্ষেপ নিয়ে নুসরত বলেন, ”এই ধরনের আইসিইউ, ভেন্টিলেটর প্রয়োজন ছিল। এসব এখানে ছিল না। তাই আজ দিতে পেরে নিজেও খুশি, মনে শান্তি পাচ্ছি। মানুষ পরিষেবা পেলে আমরা সুস্থ থাকব।”
[আরও পড়ুন: ‘সহানুভূতি পেতে আগুন লাগাচ্ছে তৃণমূল’, বিস্ফোরক অভিযোগ সায়ন্তন বসুর]
উনিশের লোকসভায় বসিরহাট থেকে বিপুল ভোটে জয়ী হয়ে তৃণমূল সাংসদ হওয়ার পর নুসরতকে নিয়ে কম কটাক্ষ হয়নি। কিন্তু নিজের সংসদীয় এলাকায় খুব অল্প সময়ের মধ্যে একাধিক উন্নয়নমূলক কাজ করে নুসরত প্রমাণ করে দিয়েছিলেন, টলিউড তারকার ভূমিকায় তিনি যতটা সফল, ততটাই সাফল্যের পথে এগোচ্ছেন জনপ্রতিনিধি হিসেবেও। নিজের কেরিয়ার সামলেও বারবারই তিনি ছুটে গিয়েছেন বসিরহাটের মানুষজনের কাছে। বুঝিয়েছেন, তারকার ইমেজ নয়, বসিরহাটবাসীর কাছে তিনি স্রেফ কাজের মানুষ, জনপ্রতিনিধি। বসিরহাট হাসপাতালে আইসিইউ ওয়ার্ড চালুও তেমনই একটি কাজ।