শম্পালী মৌলিক: বিশ্ব সিনেমার প্রাঙ্গণে দেশের নাম উজ্জ্বল করেছে কলকাতার কন্যা। কান চলচ্চিত্র উৎসবে ইতিহাস গড়ে ফ্রান্স ছাড়ার পথে অনসূয়া সেনগুপ্ত (Anasuya Sengupta)। শনিবার সন্ধ্যায় তাঁর ফ্লাইট ধরার তাড়া ছিল। তুমুল ব্যস্ততার মাঝেও দিলেন প্রতিক্রিয়া। প্রথম ভারতীয় হিসেবে কান চলচ্চিত্র উৎসবে সেরা অভিনেত্রী হওয়ার অনুভূতি কেমন? জানালেন হোয়াটসঅ্যাপের মাধ্যমে।
উইলিয়াম ডালরিম্পলের 'নাইন লাইভস'-এর আধারে তৈরি ‘দ্য শেমলেস’ ছবিতে দুরন্ত অভিনয়ের জন্যই কান চলচ্চিত্র উৎসবের ‘Un Certain Regard’ বিভাগের সেরা অভিনেত্রীর পুরস্কার পেয়েছেন অনসূয়া। কলকাতার এই মেয়ে যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্রী। পড়াশোনা করেছেন ইংরেজি সাহিত্য নিয়ে। দক্ষিণ কলকাতার লেক গার্ডেন্স অনসূয়ার একসময়ের ঠিকানা। শনিবার সন্ধ্যায় ফ্রান্স থেকে ফ্লাইট ধরার আগে অভিনেত্রী বলেন, "এই মুহূর্তে আমি আনন্দে বিহ্বল। আমাকে কিছুটা সময় দিন। বাড়ি ফেরার আগে এর বেশি কিছু বলতে পারছি না। আশা করি বুঝবেন। খুব শিগগিরিই একটা সাংবাদিক সম্মেলন হবে। তখন অনেক কিছু বলব। নিজের অনুভূতিগুলো আপনাদের সঙ্গে শেয়ার করতে মুখিয়ে রয়েছি।"
[আরও পড়ুন: ‘লাপাতা লেডিজ’-এর সারপ্রাইজ! হারিয়ে দিল ‘অ্যানিম্যাল’কে, কীভাবে জানেন?]
মুম্বইয়ে মূলত প্রোডাকশন ডিজাইনারের কাজ করেন অনসূয়া সেনগুপ্ত, থাকেন গোয়ায়। পরিচালক কিউ-এর মাধ্যমে বুলগেরিয়ান পরিচালক কনস্ট্যানটিন বোঁজ্যনভেরর সঙ্গে তাঁর আলাপ হয়। অনসূয়ার আঁকা দেখে মুগ্ধ হন পরিচালক। সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটালকে দেওয়া একান্ত সাক্ষাৎকারে তিনি বলেন, "আমার আর অনসূয়ার বন্ধুত্ব তাঁর আঁকার জন্য। আমি ওর ছবিগুলো যত দেখেছি, নিজের সিনেমার চরিত্রকে চোখের সামনে দেখতে পেয়েছি। এর মধ্যে কিন্তু বেশ কয়েকজন প্রতিভাবান ও জনপ্রিয় অভিনেত্রী এই চরিত্র করতে আগ্রহী ছিলেন। নাম বলব না। তবে অনসূয়ার মধ্যে এমন কিছু একটা ছিল যাতে আমার বিশ্বাস ছিল যে এই চরিত্রে ওই সবেচেয়ে বেশি উপযুক্ত।"
এর আগে অনসূয়া অভিনয় করেছিলেন অঞ্জন দত্তর 'ম্যাডলি বাঙালি' ছবিতে। সেই ছবিতে আবার ছিলেন অপরাজিতা আঢ্য। প্রাক্তন সহ-অভিনেত্রীর এই সাফল্যে গর্বিত অপরাজিতা। অভিনেত্রী বলেন, "অনেকদিন বাদে কোনও বাঙালির পুরস্কার। অনসূয়ার সঙ্গে ম্যাডলি বাঙালিতে কাজ করেছিলাম। সে অনেক দিন আগের কথা। অতটা ভালো করে মনে নেই। বুলগেরিয়ান পরিচালক কনস্ট্যানটিন বোঁজ্যনভের সিনেমার জন্য এই পুরস্কার পেয়েছে ও। এ বিরাট পাওয়া। যেকোনও পুরস্কার ঈশ্বরের আশীর্বাদ। আমাদের কলকাতার মেয়ে। বাঙালিরা তো খুব কম পায়! বাঙালির যা প্রতিভা সেই তুলনায় স্বীকৃতি কম। এটা ঈশ্বরেরই আশীর্বাদ।"