সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: এ যেন ভূতের মুখে রামনাম! এবার ‘কাফের’ আমেরিকার সঙ্গে বন্ধুত্বে আগ্রহী ইসলামের ধ্বজাধারী তালিবান। শুধু তাই নয়, পড়শি দেশগুলির বিরুদ্ধে আফগানিস্তানের জমি কোনও সন্ত্রাসবাদী সংগঠনকে ব্যবহার করতে দেওয়া হবে না বলেও জানিয়েছে তালিবান প্রধান হায়বাতোল্লা আখুন্দজাদা।
ইদ-উল-আজহা উপলক্ষে বুধবার দেশবাসীর উদ্দেশে বার্তা দেয় তালিবানের সুপ্রিম কমান্ডার হায়বাতোল্লা আখুন্দজাদা। তাৎপর্যপূর্ণ ভাবে, আমেরিকাকে নিয়ে নিজের অবস্থান থেকে একশো আশি ডিগ্রি ঘুরে গিয়ে ওই জেহাদি নেতা বলে, “পারস্পরিক আলাপ আলোচনা ও প্রতিশ্রুতি মতো আমরা আমেরিকা-সহ গোটা বিশ্বের সঙ্গে কূটনৈতিক, অর্থনৈতিক ও রাজনৈতিক সম্পর্ক মজবুত করতে চাই। আমাদের মনে হয় এতে সবারই মঙ্গল।” এদিন আখুন্দজাদার এই বার্তা ঊর্দু, পশতু-সহ একাধিক ভাষায় প্রকাশ করে তালিবানের (Taliban) মুখপাত্র জাবিউল্লা মুজাহিদ।
[আরও পড়ুন: পুরুষ সঙ্গী ছাড়া বেড়াতে যেতে পারবেন না, মহিলাদের জন্য নয়া ফতোয়া তালিবানের]
২০২১ সালের আগস্ট মাসে কাবুল দখল করে তালিবান। প্রায় দুই দশক পর আফগান ভূম থেকে ফৌজ সরিয়ে নেয় আমেরিকা (America)। তারপরই পাহাড়ি দেশটি ফের আল কায়দা, লস্কর-ই-তইবার মতো জঙ্গি সংগঠনগুলির চারণভূমি হয়ে উঠবে বলে উদ্বেগ প্রকাশ করে ভারত-সহও একাধিক দেশ। তেহরিক-ই-তালিবানের বাড়বাড়ন্ত নিয়ে ক্ষোভপ্রকাশ করে পাকিস্তানও। তাৎপর্যপূর্ণ ভাবে, এদিন নিজের বার্তায় সন্ত্রাসবাদ প্রসঙ্গে আখুন্দজাদা বলে, “পড়শি দেশগুলির বিরুদ্ধে আফগানিস্তানের জমি কোনও সন্ত্রাসবাদী সংগঠনকে ব্যবহার করতে দেওয়া হবে না। আমি তাদের এই বিষয়ে আশ্বস্ত করছি। তবে আফগানিস্তানের অভ্যন্তরীণ বিষয়ে আমরা কারও হস্তক্ষেপ চাই না।”
উল্লেখ্য, কয়েকদিন আগেই কাবুলের লয়া জিরগা প্রেক্ষাগৃহে তালিবানের ডাকে জাতীয় ঐক্য সভার বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়। গোটা দেশ থেকে সেখানে হাজির ছিলেন অন্তত ৩ হাজার মুসলিম ধর্মগুরু এবং আদিবাসী গোষ্ঠীগুলির প্রবীণরা। সেখানে কিন্তু আমেরিকার বিরুদ্ধে আখুন্দজাদার গলায় তীব্র আক্রমণাত্মক সুর শোনা যায়। বিশ্লেষকদের মতে, আমেরিকা চলে যাওয়ায় কার্যত দুর্ভিক্ষের মুখে আফগানিস্তান। আন্তর্জাতিক স্বীকৃতি না মেলায় বিদেশ থেকে আর্থিক মদত আসাও বন্ধ। এহেন পরিস্থিতিতে সরকার চালাতে মার্কিন মদতের আশায় সুর নরম করেছে তালিবান প্রধান।