সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: প্রতিরোধের নাম পঞ্জশির। প্রয়াত দুর্ধর্ষ আফগান যুদ্ধপতি আহমেদ শাহ মাসুদের অনুগত তাজিক যোদ্ধারা প্রবল বিক্রমে লড়াই চালাচ্ছে তালিবানের (Taliban) বিরুদ্ধে। সূত্রের খবর, বিদ্রোহীদের সঙ্গে লড়াইয়ে খতম হয়েছে ২১ জন তালিবান জঙ্গি।
[আরও পড়ুন: ক্ষোভে ফুঁসছে শ্রীলঙ্কা, ‘চিনপন্থী’ রাজাপক্ষেদের বাড়ি জ্বালিয়ে দিল উন্মত্ত জনতা]
আন্তর্জাতিক সংবাদমাধ্যম সূত্রে খবর, পঞ্জশিরে তালিবানের সঙ্গে নতুন করে লড়াই শুরু করেছে আফগানিস্তান লিবারেশন ফ্রন্ট এবং ন্যাশনাল রেসিস্ট্যানস ফ্রন্ট (NRFA)। তাদের যৌথ অভিযানে রীতিমতো নাকাচোবানি খেতে হচ্ছে তালিবানকে। দু’ পক্ষের মধ্যে শেষ যে লড়াই হয়েছে, তাতে অন্তত ২১ জন তালিবান জঙ্গি নিহত হয়েছে। আহমেদ শাহ মাসুদের ছেলে আহমেদ মাসুদ ও ঘোষিত ‘কার্যনির্বাহী প্রেসিডেন্ট’ আমরুল্লা সালেহর নেতৃত্বে বিদ্রোহীরা লড়াই চালিয়ে যাচ্ছে। এবং তাদের ঘাঁটি খতম করতে পঞ্জশিরে চারটি অ্যাটাক হেলিকপ্টার পাঠিয়েছে তালিবান। জানা গিয়েছে, পঞ্জশিরের প্রবেশ পথ হিসেবে পরিচিত আন্দারাব উপত্যকায় হামলা শুরু করেছে ন্যাশনাল রেসিস্ট্যানস ফ্রন্ট। সংঘর্ষে বেশ কয়েকজন জঙ্গি নিহত হয়েছে।
গত বছরের আগস্ট মাসে তালিবান ফের আফগানিস্তান দখল করলেও এখনও পঞ্জশির এলাকা পুরোপুরিভাবে তারা দখল করতে পারেনি। ফলে ‘বিদ্রোহী’দের গোপন আস্তানা খুঁজে বের করতে অভিযান শুরু করেছে তালিবান। পঞ্জশিরের উঁচু পার্বত্য এলাকায় তল্লাশি চালাতে পাঠানো হয়েছে চারটি হেলিকপ্টার। যুদ্ধের প্রস্তুতি হিসেবে পাঠানো হয়েছে সাঁজোয়া গাড়ি এবং ১০ হাজার তালিবান সেনা! এদিকে, প্রতিরোধ বাহিনীর সূত্রে খবর, আহমেদ মাসুদ পঞ্জশিরেই ((Panjshir) রয়েছেন। সুরক্ষিতই রয়েছেন তিনি। তাঁর দেশছাড়ার খবর সম্পূর্ণ মিথ্যা।তালিবানের উপর বড়সড় হামলার পরিকল্পনা করছেন তিনি। তাই আপাতত লোকচক্ষুর আড়ালে রয়েছেন পঞ্জশিরের ‘সিংহ শাবক’।
উল্লেখ্য, আজ থেকে নয়, সেই আশির দশক থেকেই আফগানিস্তানের (Afghanistan) সোভিয়েত-বিরোধী লড়াইয়ের মুখ ছিল পঞ্জশির। আফগান মুজাহিদ কমান্ডার আহমেদ শাহ মাসুদ ছিলেন সেই আন্দোলনের পুরোধা। সময় দাঁড়িয়ে থাকে না। এই মুহূর্তে তালিবানের বিরুদ্ধে লড়াইয়ে সেই পঞ্জশিরেরই এক নেতার নাম উঠে আসছে। তিনি আহমেদ মাসুদ। পঞ্জশিরের কিংবদন্তি ‘সিংহ’ আহমেদ শাহ মাসুদের বড় সন্তান। পাক বিমানবাহিনীর এবং তালিবানের হামলায় পঞ্জশির উপত্যকার জনবসতিগুলি হাতছাড়া হয়েছে মাসুদ বাহিনীর। তবে তাজিক যোদ্ধারা হিন্দুকুশের দুর্গম পাহাড়ি এলাকা নিয়ন্ত্রণে রেখেছেন বলে খবর। সেখান থেকে তালিবান বাহিনীর বিরুদ্ধে দীর্ঘকালীন গেরিলা যুদ্ধও চালাতে পারেন তিনি। একই রণকৌশলে আশির দশকে সোভিয়েত সেনার মোকাবিলা করেছিলেন ‘সিনিয়র মাসুদ’। ফলে লড়াই এখনও শেষ হয়নি বলেই মনে করছেন বিশ্লেষকরা।