সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: চার বছরেরও বেশি সময় ধরে সন্ত্রাসবাদের উপর নজরদারি সংস্থা ফিন্যান্সিয়াল অ্যাকশন টাস্ক ফোর্সের (FATF) ধূসর তালিকায় ছিল পাকিস্তান (Pakistan)। কিন্তু গতকাল অর্থাৎ শুক্রবার সেই তালিকা থেকে বেরিয়ে এসেছে ইসলামাবাদ। ১৮ থেকে ২১ অক্টোবর পর্যন্ত প্যারিসে (Paris) বৈঠক করেছিল এফএটিএফ। সেই বৈঠকের শেষ দিনই সিদ্ধান্ত নেয় ৩৯ সদস্য দেশের এই সংগঠন। এরপরই এই বিষয়ে মুখ খুলেছে ভারত। জানিয়ে দিয়েছে, তালিকা থেকে যতই বেরিয়ে আসুক, প্রতিবেশী দেশটি যেন সন্ত্রাসবাদের বিরুদ্ধে ‘বিশ্বাসযোগ্য’ পদক্ষেপ করে চলে।
ঠিক কী বলেছে কেন্দ্র? বিদেশ মন্ত্রকের মুখপাত্র অরিন্দম বাগচী জানিয়েছেন, ”এফএটিএফের নিরীক্ষণের ফলাফল হিসেবে পাকিস্তানকে বাধ্য হয়ে বহু কুখ্যাত জঙ্গির বিরুদ্ধে পদক্ষেপ করতে হয়েছে। যাদের মধ্যে ২৬/১১ মুম্বইয়ের হামলায় যুক্তরাও রয়েছে। তবে গোটা বিশ্বের স্বার্থেই পাকিস্তানকে সন্ত্রাসবাদ ও সন্ত্রাসবাদে আর্থিক মদতদাতাদের বিরুদ্ধে বিশ্বাসযোগ্য, প্রমাণযোগ্য, অপরিবর্তনীয় এবং টেকসই পদক্ষেপ করে যেতে হবে।”
[আরও পড়ুন: হিমবাহ গলে ছড়াবে পরবর্তী ‘ভাইরাল’ মহামারী, ভয় ধরানো দাবি নয়া গবেষণায়]
একই সুর শোনা গিয়েছে এফএটিএফ কর্তাদের মুখেও। সিঙ্গাপুরের টি রাজা কুমার বলেছেন, “ওদের (পাকিস্তান) ধূসর তালিকা থেকে বাদ দেওয়া হয়েছে। তবে এখনও তাদের অনেক কিছুই (সন্ত্রাসবাদ দমন) করতে হবে।তবে তারা সমস্ত শর্ত পূরণ করেছে। আমরা সন্তুষ্ট। আমরা চাই জঙ্গিদের অর্থ জোগান ঠেকাতে আসিয়া-প্যাসিফিক এই সংগঠনটির সঙ্গে কাজ করুক পাকিস্তান।” তিনি আরও বলেন, “পাকিস্তানে পরিদর্শনে গিয়েছিলেন এফএটিএফ প্রতিনিধিরা। তাঁরা আধিকারিকদের সঙ্গে কথা বলেছেন। পাকিস্তানি প্রশাসকদের মধ্যে যথেষ্ট রাজনৈতিক সদিচ্ছা রয়েছে।”
বিশ্লেষকদের মতে, চার বছর পরে পাকিস্তানের ‘শাপমুক্তি’র নেপথ্যে রয়েছে আমেরিকা। ইমরান খান সরকারের পতন চাইছিল ওয়াশিংটন। ইমরানের আমলে চিন ও রাশিয়ার সঙ্গে পাকিস্তানের দহরম মহরম মেনে নিতে পারছিল না আমেরিকা। আফগানিসস্তানে তালিবানের ফিরে আসা এবং মধ্য এশিয়ায় চিনা প্রভাব বৃদ্ধির কথা মাথায় রেখেই শাহবাজ শরিফের সরকার ও পাক সেনাকে উপহার বাইডেন (Biden) প্রশাসনের। কারণ, আন্তর্জাতিক সন্ত্রাস রপ্তানিতে পাকিস্তানের ভূমিকা সবার জানা। বিশেষ করে, আল কায়দা, হিজবুল মুজাহিদিন, লসস্কর-ই-তইবা, জইশ-ই-মহম্মদের মতো জেহাদি সংগঠনগুলির সঙ্গে আইএসআইয়ের সম্পর্ক কারও অজানা নয়। ফলে ধূসর তালিকা থেকে ইসলামাবাদের নাম বাদ দেওয়ার নেপথ্যে আমেরিকার হাত নিয়ে সেই অর্থে সন্দেহের অবকাশ থাকতে পারে না বলেই মত বিশ্লেষকদের।