নন্দিতা রায়, নয়াদিল্লি: স্বাধীনতা আন্দোলনে বাঙালিদের অবদান উপেক্ষা করতে চাইছে কেন্দ্রের নরেন্দ্র মোদি সরকার। বাংলার গৌরবময় ইতিহাস পড়ানোই হয় না এনসিইআরটির পাঠ্যবইয়ে। সংসদে দাঁড়িয়ে এ বার এ নিয়ে প্রশ্ন তুললেন তৃণমূল সাংসদ ঋতব্রত বন্দ্যোপাধ্যায়। তাঁর প্রশ্ন, ইতিহাসের পাঠ্যবইয়ে বিনয়-বাদল-দীনেশদের মতো শহিদদের কাহিনী কেন পড়ানো হবে না?
আসলে এনসিইআরটির পাঠ্যবইয়ে অগ্নিযুগের বাঙালি বিপ্লবীদের গল্প আংশিকভাবে বর্ণনা করা আছে। যুগান্তর, অনুশীলন সমিতির মতো কিছু বিপ্লবী গোষ্ঠীর কথা উল্লেখ থাকলেও বেঙ্গল ভলান্টিয়ার্সের মতো গুরুত্বপূর্ণ ঐতিহাসিক সংগঠনের কোনও উল্লেখ নেই। নেতাজি, দেশবন্ধু চিত্তরঞ্জন দাসের মতো প্রবাদপ্রতিম ব্যক্তিত্বের তৈরি ওই সংগঠন ইতিহাসে উপেক্ষিত থেকে গিয়েছে। যার ফলে ওই সংগঠনের সদস্য বিনয়-বাদল-দীনেশের মতো বিপ্লবীরাও ঠাঁই পাননি এনসিইআরটির পাঠ্যবইয়ে।
ঋতব্রতর প্রশ্ন, কেন বিনয়-বাদল-দীনেশের মতো বিপ্লবীদের গল্প ইতিহাস বইয়ে পড়ানো হবে না? কেন ব্রাত্য বেঙ্গল ভলান্টিয়ার্সের ইতিহাস? তৃণমূল সাংসদের দাবি, প্রদ্যোত ভট্টাচার্য, প্রভংশু শেখর পাল, সন্তোষ কুমার মিত্র, তারকেশ্বর সেন, ব্রজকিশোর চক্রবর্তী, রামকৃষ্ণ রায়, মৃগেন্দ্র নাথ দত্তদের ইতিহাস কেন ব্রাত্য থাকবে পাঠ্যবইয়ে? সবার ইতিহাস পড়াতে হবে।
সংসদে কেন্দ্রকে উদ্দেশ্য করে ঋতব্রতর লিখিত দাবি, 'আন্দামানের সেলুলার জেলের ৭০ শতাংশ বন্দিই ছিলেন বাঙালি। তাঁরা কেউ অমরত্বের প্রত্যাশা করেননি। ইতিহাসের পাতায় নাম লেখানোটাও তাঁদের উদ্দেশ্য ছিল না। ওরা আমাদের দেশের সম্পদ। সাহসী বাঙালি। তাঁদের সম্মান প্রাপ্য। ইতিহাসে তাঁদের স্থান নেই এটা দুর্ভাগ্যজনক।' এ প্রসঙ্গে সাভারকরকে খোঁচা দিয়ে তৃণমূল সাংসদ বলছেন, "যারা ব্রিটিশদের কাছে ক্ষমাপ্রার্থনা করেছেন, তাঁদের নামও ইতিহাসে। অথচ বাঙালিদের নেই।" ঋতব্রতর সাফ কথা, এই বাঙালি বিপ্লবীদের নাম পাঠ্যবইয়ে থাকা উচিত।
